পৃষ্ঠা || 51 নাতাশা- না না । আজ আর বালিশ পেটাব না । এবার তুলো জমা করে বালিশ এ জড় করে ভরব । কারো কে বলবি না । তোর মা জানলে কিন্তু আমাকে মারবে । তোর মাকে বলে দিলে কিন্তু তোর সাথে আর খেলব না । জেসিকা- না না , আমি কখনোই বলব না । জেসিকা গলায় হাত দিয়েই বোঝাল যে তিন সত্যি । তার মাকে সে কখন ও বলবে না । নাতাশা- ঠিক আছে । এক তুই কাজ কর । তুলো গুলো সব কুড়িয়ে এক সাথে কর । তার পর বালিশে পুরে দে । আমি ততক্ষণ স্নান করে আসি । জেসিকা- সে কী ! তুই যে বললি আমরা খেলব? নাতাশা- খেলব তো । আমার চেহারাটা দেখ । কেমন ভূতের মতো লাগছে না ? তাই স্নান করে আসি । নইলে দুজনেই বকা খাব । বকা খাবার কথায় রাজি হয়ে গেল জেসিকা । কিন্তু ঘর ভরা তুলো ছড়ান tদেখে ভয় পেয়ে বলল- নাতাশা, কেমন করে তুলো কুড়োয় তুই জানিস ? সব তুলো তো দৌড়ে eপালাচ্ছে ? a.n- কি বোকা রে তুই জেসিকা ! ঘর ঝাড়ার ঝাড়ণ দিয়ে তুলো গুলো এক জায়গাতে কর । তারপর ityবালিশের ভেতরে ভরে দিবি । পাখা টা বন্ধ করে নিস । ahহাসতে হাসতেই পঞ্চদশী নাতাশা বাথরুম এ ঢুকল । লাঙ্গা, চোলি আর দোপাট্টা খুলে ফেলল । lasদেয়াল জোড়া বিশাল একখানা আরশি । তাতে ঘুড়িয়ে ফিরিয়ে নিজের শরীরের ঢল দেখছে পঞ্চদশী নাতাশা । মুখখানার দিকে নজর পড়তে হাঃ হাঃ করে হেসে ওঠে নাতাশা । সাদা মাথায় যেন পক্ক ngকেশী যুবতী নাতাশা । ইচ্ছে করেই অনেক টা সময় নিয়ে স্নান করে । যাতে জেসিকা পুরো কাজটা aসেড়ে ফেলে । নাতাশা ভাবে , আমার বাবা নেই। ছিল কিন্তু অলিখিত ,অথচ জেসিকার বাবা সমাজে Bসম্মানিত । সেই রোশটা গিয়ে পড়ে জেসিকার মতো সরল সাদা মনের একটা মেয়ের ওপরে । জেসিকার কি দোষ ? কোন অন্যায় তো করেনা জেসিকা বরং সব সময়ে নাতাশার কথা শুনে চলে । এমিলি একেবারেই অন্য ধাতের । তাই আশ্রিতা ও আশ্রয় দাতার পার্থক্য টা সব সময়ে ভাল ভাবেই বুঝিয়ে দেন । জেসিকার পোষাক নজর টানার মতো । ইংরেজ টেইলর কে দিয়েই জেসিকার পোষাক তৈরি হয় । পোষাকের তারিফ নাতাশার মুখ থেকে না শুনলে চলে না জেসিকার । সব সময়ে জেসিকা বলে-। - কেমন হয়েছে রে পোষাকটা নাতাশা ? নাতাশা- দারুণ । তোকে মানিয়েছে । নাতাশার চকচকে চোখ দেখে কষ্ট হয় জেসিকার। মায়ের কাছে আবদার করেছে । - মম্ প্লিজ । টম বয় কে বলে নাতাশার একটা ঠিক এমন ড্রেস বানিয়ে দাও না । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 52 এমিলির গলা তখন সপ্তমে চড়েছে । - হাউ ডেয়ার দ্যা নেটিভ গার্ল ? তোমার মতো পোষাক চায়? - না না নাতাশা চায়নি । আমিই বলছি ,দাও না মা । - দেন, ডোন্ট আস্ক ইট আগেইন । মাঝে মাঝেই এমিলির হুল ফোঁটানো কথা শুনতে হয় নাতাশা কে । যেমন- নাতাশা এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াবে না । ছেলেদের ধারে কাছে ঘেষবে না তাহলে তোমার মায়ের মতোই অবস্থা হবে । ছেলেদের ধারে কাছে ঘেষবে না শুনলে রাগ হয়ে যায় নাতাশার । মায়ের অবস্থা বলতে ,মায়ের চরিত্র নিয়ে বলছে , তা বুঝতে বাকি থাকে না নাতাশার । তাতেই রাগের পারা টা চড়ে যায় মাঝে মাঝেই । নাতাশার রক্তে খুন চেপে যায় । যে বেঁচেই নেই তাকে নিয়ে এত কথা কেন ? সেই চিন্তা করতে tকরতে কোথায় যে নাতাশা পৌঁছে গেছে তার ঠিক ঠিকানা নেই । স্নান করতে করতে নাতাশা ফিরে eএল কলের ঠান্ডা জলে । মানে বর্তমানে স্নানাগারে । আর শরীরে জল ঢালবে না । না ,অনেক ক্ষণ .nস্নান করেছে । আর না ,এতক্ষণ এ নিশ্চয়ই জেসিকার সব তুলো গোছ করা হয়ে গেছে । একে ভর aসন্ধে, তায় গুটি গুটি করে শীত এগুচ্ছে । দক্ষিনী পোষাক লাঙ্গা, কুর্তা, জ্যাকেট আর দোপাট্টা পড়ে ityনিল জেসিকা । ঘরে ঢুকে দেখল ঘর একেবারেই পরিস্কার ! তাজ্জব বনে গেল নাতাশা ! - এ কী রে h, সব করে ফেলেছিস ? কি করে করলি ? aজেসিকা- বালিশে সব তুলো ঢুকিয়ে দিয়েছি । এই দেখ । পেঁচিয়ে রেখেছি সুজনী তে । lasনাতাশা - কিন্তু তোর চেহারাটা দেখেছিস ? ngহাসতে হাসতেই নাতাশা জেসিকার তুলো ভরা মুখ হাত আয়নায় দেখাল । ভয় পেল জেসিকা ওর ঐ aতুলো ভরা চেহারা দেখে । Bজেসিকা- কি হবে বল তো নাতাশা ? মা ভীষণ রাগ করবে । জানলে তোকে ও বকবে । নাতাশা- তোর মা জানতেই পারবে না । চল বাথরুমে । তোয়ালে ভিজিয়ে জেসিকার মুখ, হাত, পা ,মাথা মুছিয়ে দিল । এমন কি ড্রেস এ ও ভিজে তোয়ালে বুলিয়ে দিল । কেমন যেন একটা কষ্টে মনটা ছেয়ে গেল নাতাশার । জেসিকা এত ভাল মেয়ে সেই তাকে নাতাশা কষ্ট দেয় ? দেউরু মানে ভগবান ওকে কখনও ক্ষমা করবে না । শাস্তি ওকে পেতেই হবে । বছর পেরিয়ে গেছে । নাতাশার এখন ক্লাস টেন । জেসিকার নাইন । জেসিকার আর নাতাশার যত বয়স বেড়েছে ততো এমিলির কড়া-কড়ি বেড়েছে নাতাশার ওপরে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 53 কারণ বাড়িতে যত ছেলের আগমন হয়েছে ,তারা জেসিকা কে ছেড়ে নাতাশার দিকে ঝুঁকেছে । আর সেটা দেখে এমিলির গায়ের জ্বালা পোড়া বেড়েছে । তার প্রতিশোধ নিয়েছে নাতাশার ওপর অত্যাচার করে । নাতাশার রূপ নজরে পড়ার মতো । এমিলির নিজের মেয়ের, ছেলেদের সাথে \" দহরম মহরম \" যত হয়েছে । ততো বিশেষ নজর দিয়েছেন নাতাশার ঘেরাটোপের দিকে । কারণ টা বুঝতে বাকি থাকেনি নাতাশার । জেসিকা বড় হয়েছে । সবই বুঝতে শিখেছে । তবুও দরকার হলে নাতাশার বুদ্ধি নিয়েছে জেসিকা । কখনও নাতাশা শাসন ও করেছে জেসিকা কে। অবশ্যই সকলের অন্তরালেই সাবধান করেছে । - ছেলেদের বিশ্বাস করিস না জেসিকা । - কি যে বলিস নাতাশা । ওরা আমার বন্ধু । ওরা আমার খারাপ করবে না । - আমার তো মনে হয় ছেলেরা কি ভাবে যে মেয়ে-দের খারাপ করে সেটা তুই জানিস না । t- তুই কি করে জানলি ? e- আমি একজন কে জানি । সেই পুরুষ একজন নারী কে গর্ভবতী করেছিলেন । কিন্তু তাকে বিয়ে .nকরেন নি । a- তাই নাকি ? ity- সেই সন্তান কে আমরা বলি \" জারজ \" সন্তান। পিতৃ পরিচয় হীন সন্তান । সমাজে তার কি কষ্ট তা hজানিস ? lasa- দ্যাট মিনস বাস্টার্ড ! ইফ আই অ্যাম নট গোয়িং টু এগ্রি , দেন হাউ ইট্ ইজ্ পসিবল ?শুধু ই তুই ভয় পাস । তুই যাকে জানিস, সে হয়তো সেই পুরুষ টি কে ভালোবাসত । জেসিকার মুখে ngভালোবাসার কথা শুনে মায়ের ওপর রাগ টা আরও বেড়ে গেল নাতাশার । এমন ভালোবাসা যে, aভালবাসার মানুষটা সন্তানের পরিচয় দিতে পারলেন না । ভালোবাসায় বিশ্বাস নেই নাতাশার । হঠাৎই Bজেসিকা বলল- নাতাশা ,হাউ ইজ দ্যাট টম বয় ? ওকে ভাল লাগে তোর ? জেসিকার কথায় গায়ে জ্বালা ধরে গেল নাতাশার। জেসিকা আজ কাল ক্লাস মেন্টেইন করতে শিখে গেছে । তাই নাতাশার জন্য টম বয় । সে হল দরজী । অর্থাৎ সেই টেইলর । রাগেই জেসিকা কে বলে। - কার কথা বলছিস? তোর তো ভালোই ড্রেস বানায় । তোর তো ওকে ই বেশি ভাল লাগে ! - ও হো নাতাশা ! তুই যেন কেমন হয়ে যাচ্ছিস। কোথায় চার্লি আর কোথায় একটা টেইলর !! মুখে নাতাশা কিছু না বললেও মনে মনে বলে , জেসিকা তুই তোর ঐ চার্লি কে এখন ও চিনতে পারিস নি । ঐ চার্লি একদিন সাঁঝের বেলায় বাগানে নাতাশা কে জাপ্টে ধরেছিল । রোজ সাঁঝের বেলা ফিটন গাড়ি এসেছে দরজায় । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 54 চার্লির গল্প আর শেষ হয় না । জেসিকা তৈরি হয়ে ই রয়েছে । বারে বারে ই চা আর জলের আর্জি চার্লির । কারণ জল আর চা আনবে নাতাশা । নাতাশার মনে ঐ নচ্ছার চার্লি কে চাবকানোর ইচ্ছা । আর ইচ্ছা জেসিকা কে দেখানোর । চোখের ভাষায় প্রশ্রয় দিয়েছে চার্লি কে । ইচ্ছা জেসিকা কে দেখানো ,যে চার্লি কত ভাল বন্ধু । সেই কারনেই চার্লি কে প্রশ্রয় দেওয়া । জেসিকা বেড়িয়ে যেতেই এমিলির ও গাড়ি এসেছে । বেড়িয়ে গেছে এমিলিও । এ সমাজের মাথা এরা । কেউ ই নেটিভ পছন্দ করে না । তবে ইংরেজ শয্যা সঙ্গিনীর অকুলান হলে নেটিভ ও চলে । তাই এমিলির শয্যায় সঙ্গ দেবার জন্য নেটিভ না ইংরেজ ? তা নিয়ে বাছ বিচার করে না। এমিলির জনের বয়স তার থেকে অনেক কম ই হবে । সে রাতেই জেসিকার সাথে তর্ক হয়ে গেল নাতাশার। নাতাশা- জেসিকা তুই কি চার্লিকে বিয়ে করবি? tজেসিকা- অবশ্যই । ওকে আমি দারুণ ভালবাসি । eনাতাশা- চার্লি ও তোকে ভালবাসে ? .nজেসিকা- হ্যাঁ। ভালবাসে । aনাতাশা- আমি যদি বলি চার্লি বাজে ছেলে ? ityজেসিকা- বিশ্বাস করি না । আসলে তোর হিংসা হচ্ছে । hনাতাশা- অমন ছেলেদের আমি ঘেন্না করি । তোকে দেখিয়ে দেব চার্লি কেমন ছেলে । lasaপরদিন সাঁঝের বেলা । বাগানে পায়চারি করছিল নাতাশা । হঠাৎই পেছন থেকেই নাতাশাকে জাপ্টে ধরেছে চার্লি । নাতাশা চমকে গেলে ও বুঝেছে কে এমন কাজ করতে পারে ? নাতাশার মাথায় সেই ngশয়তানের আগমন হচ্ছে ,তা বুঝেই নাতাশার ছোট্ট ঘরে চার্লি কে নিয়ে গেছে । চার্লি বারবার নাতাশা aকে জড়িয়ে ধরছে । নাতাশা- ও হো বাথরুম গিয়ে আগে জামাকাপর ছেড়ে এস । চার্লি- ওকে বাবা, Bআই উইল ডু দ্যাট । বাথরুম থেকে চার্লি ঘরে এসেছে । এমন নির্লজ্জ পুরুষ কখনও দেখেনি নাতাশা । নাতাশা একখানা টাওয়াল ছুঁড়ে দিয়েছে চার্লি কে । নাতাশা- তুমি বস। আমিও জামাকাপর ছেড়ে আসছি । চার্লির মুখে হাসি আর ধরে না । চার্লি- ডিয়ার, বি কুইক । নাতাশা- হ্যাঁ। এখন ই আসছি । নাতাশা ,বাথরুমের পেছনের দরজা দিয়ে বেড়িয়ে সোজা ছুটে গেছে জেসিকার ঘরে । - জেসিকা, শিগগিরই আয় আমার ঘরে । দেখে যা তোর চার্লিকে । আমার ঘরে আমার জন্য অপেক্ষা করছে । জেসিকা- আমি বিশ্বাস করি না । যে দিক দিয়ে বেড়িয়েছে সে দিক দিয়েই ঘরে ঢুকেছে নাতাশা । জেসিকা কে আড়াল থেকেই শুনতে বলেছে । চার্লি- একি ডিয়ার, এখনও জামাকাপর খোল নি ? আর দেরি করতে পারছি না । কাম অন ডারলিং । তখন ই ভেতরে ঢুকেছে জেসিকা । রাগে ফেটে পড়েছে চার্লির ওপরে । তার আগেই নাতাশা ছড়ি চালিয়েছে চার্লির ওপরে । শুধু টাওয়াল পড়েই প্রাণ নিয়ে পালিয়েছে চার্লি । আর ফিরে আসেনি কোনদিন । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 55 আবার ডায়েরি তে মন দিল নাতাশা । বেশ কয়েক দিন হল এমিলি এসেছে ।মিস্টার ওয়াটসন এর আয়ার মেয়ে । মালার ওপরে এমিলির রুষ্ট হবার কারণটা কি, তা মালার বোধের বাইরে । আউট হাউজ এই এমিলির থাকার ব্যাবস্থা হল । ঠিক হল ঘুম থেকে উঠেই ই এ বাড়ি চলে আসবে এমিলি । আবার কাজ সারা হলে রাতে আউট হাউজে চলে যাবে । সারাদিন ওদের সাথেই থাকবে । রোজের নিয়মেই ঘুম থেকে উঠছেন মালা । ডাইনিং রুমে ঢুকেই নাগাম্মার সাথে মুখোমুখি হল মালার । আজ নাগাম্মার চেহারা ছবিই বলে দিচ্ছে তার দিল খুশ নেই আজ । কি হয়েছে তা জানতে চাইল মালা । - কি হয়েছে ? শরীর ঠিক আছে তো ? - নতুন আম্মা রান্নার ঘরে ঢুকেছিল । কি সব বানালো স্যারের জন্য । আজ ব্রেকফাস্ট বাগানে দিতে বলল । মালা- সে তো ভালোই । নাগাম্মা- তোমার বয়স কম । তুমি এসব বুঝতে পারবে না । তা ছাড়া তোমাকে দেখভাল করার জন্য ওকে আনা হয়েছিল। রান্নার কাজ তো ওর না । ও আসলে তোমার কাছ থেকে স্যার কে কেড়ে নিতে tচাইছে । .neকোন উত্তর না দিয়েই মালা বাগানের দিকে পা বাড়াল । দূর থেকেই দেখা যাচ্ছে, এমিলি মিস্টার aওয়াটসন এর পাশের চেয়ার এ বসে আছে । মালাকে দেখে মিস্টার ওয়াটসন চেয়ার ছেড়ে উঠে ityদাঁড়ালেন । এমিলির মুখ খানা যেন রাগে ফেটে পড়ছে । মিস্টার ওয়াটসন উঠে দাঁড়ালে ও এমিলি hতার চেয়ার এ বসেই রইল । এমিলির মনে যে কিছু চলছে তা তার শক্ত চোয়াল দেখেই বোঝা aযাচ্ছিল । মিস্টার ওয়াটসন মালার চেয়ার খানা এগিয়ে দিলেন, যাতে মালার বসতে কোন অসুবিধা lasনা হয় । মালাকে বললেন- আমি এমিলিকে বলছিলাম, এখানে আসতে তোমার অসুবিধা হতে পারে । এমিলি বলল, এ সময় একটু হাঁটা চলা করা ভাল । যাক, এমিলি তোমাকে অনেক সাহায্য করতে ngপারবে । মালা টেবল এর দিকে তাকালেন । আজ অন্য প্রাতঃরাশ । মালাকে প্রাতঃরাশের দিকে aতাকাতে দেখে এমিলি বলল,- মিস্টার ওয়াটসন এর জন্য করেছি । তুমি তো জান না ,আমাদের Bদেশের খাবার। মালা- এটা কি? এমিলি- এটা, হলো ইয়র্ক শায়ার পুডিং । ওয়াটসন তো অনেক দিন এসব খায়নি ,তাই করলাম । মিস্টার ওয়াটসন- বাহ্। খুব ভাল । এমিলি- তুমি তো ইডলি দোশা ছাড়া কিছুই জান না । ব্রেকফাস্ট শেষ হল কফি দিয়ে । এ কফি ও অন্য স্বাদের । মিস্টার ওয়াটসন এক চুমুক দিয়ে ই তারিফ করলেন এমিলির । এমিলির উচ্ছ্বসিত হাসি মালার চোখ ছুঁয়ে গেল । যেন বলছে , 'কেমন টক্কর দিলাম '? মিস্টার ওয়াটসন কাজ আছে বলে উঠে গেলেন । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 56 মালা বসেই রইলেন । এমিলিও বসে রইল । মালাকে বলল- মিস্টার ওয়াটসন এর জন্য কষ্ট হয় । কেন যে এ দেশে পড়ে রয়েছেন ? ওদেশে কি পাত্রীর অভাব ? তোমার তো ওদেশের খাওয়ার সম্বন্ধে কোন ধারণাই নেই । মালা- তা নেই। এমিলি- তবে? তোমরা কি প্রেম করেছিলে ? মালা- না । মিস্টার ওয়াটসন আমাকে পছন্দ করেছিলেন। এমিলি- মাই গড! আমাকে দেখলেও তাহলে পছন্দ করতেন । মালা এমিলির মুখ খানা দেখল । চৌকো ধাঁচের বড় বড় আঁচিলে ভরা মুখখানা । বেঁটে খাটো চেহারার একরকম বেঢপ ই বলা যায় । একে মিস্টার ওয়াটসন এর সঙ্গে মেলানো যায় না । মিস্টার ওয়াটসন এর সুপুরুষ চেহারা । স্লিম ই বলা যায় । ধবধবে ফর্সা রঙ তাঁর । ওদেশের ঢং এর কাটা কাটা চোখ মুখ । চুল লাল না হলে পাঞ্জাবী বলেই মনে হত । কথাটা আর এগুতে দিলেন না মালা ,- \"-এক্সকিউজ মি, \" বলে বাগান থেকেই উঠে এলেন । ঘরে tঅবশ্য আজকাল কাজ অনেক কমে এসেছে । একটু একটু করে মালার কাজ এমিলি দখল করে eনিচ্ছে । এমন কি মিস্টার ওয়াটসন এর ড্রেস অবধি এমিলি পছন্দ করছে । তখন এমিলির প্রশংসায় .nউচ্ছসিত মিস্টার ওয়াট্ সন । ityaনাতাশা প্রথম পাতা থেকেই ডায়েরি টা পড়েছে । আজ ও আবার প্রথম থেকেই দেখতে শুরু করল । hডায়েরি র প্রথম পাতায় গোট গোট করে লেখা । দিস ডায়েরি বিলংস টু মিসেস মালা ওয়াটসন । aআবার ফিরে গেল নাতাশা সেই পুরনো লাইন এ । পড়তে পড়তে নাতাশা যেন নিজের চোখেই lasপরিস্কার সব দেখতে পাচ্ছে । মিস্ এমিলি কম দামি স্কার্ট পড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে । মালার মিষ্টি গলা শুনতে পাচ্ছে নাতাশা । একটা অদ্ভুত অনুভূতি হচ্ছে মনে । ngমালা- \"এমিলি আমার চুল টা একটু বেঁধে দেবে \" ? aএমিলি- ইয়েস, দাও বেঁধে দিচ্ছি । Bমালার পাশে বসে পড়ল এমিলি । জোরে জোরেই টেনে টেনে চুল আঁচড়াতে লাগল এমিলি । যন্ত্রণায় ককিয়ে উঠল মালা । এমিলি- কি গো মেমসাহাব তোমার চুলে তো খুব জট পড়েছে । মালা- একটু আগেও তো আচড়ালাম ,জট ছিল না তো ? এমিলি- তবে কি আমি জটা ফেলেছি ? মালা- না না তা কেন করবে ? এরমধ্যেই মিস্টার ওয়াটসন এসে পড়েন এই ঘরে। কানে এসেছে দুজনের কথা । এমিলি কে বললেন।- কি হল এমিলি ? - মেম সাহেব বললেন, আমি নাকি ইচ্ছা করেই চুলে জটা ফেলেছি । মালা- না না ,আমি সে কথা বলিনি । এমিলি- এখন কথা ঘোরাবেন না মেম সাহেব । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 57 লজ্জায় মালা স্বামীর দিকে নজর ফেললেন । যাতে ওর চোখের দৃষ্টিতেই স্বামী ওর মনের কথা বুঝতে পারেন । কিন্তু তা হল না । মালাকেই ভর্ৎসনা করলেন । - ছিঃ ছিঃ মালা, এ তোমার ভারি অন্যায় । দেখ আর যাই বিশ্বাস করি না কেন ব্রিটিশ রা কখনও মিথ্যাচার করে না । এমিলির মুখে বিজয়িনীর হাসি । আস্তে আস্তে স্বামীর কাছ থেকে দুরে চলে এসেছেন মালা । অন্তঃসত্তা স্ত্রীর থেকে মিস্টার ওয়াটসন এর বেশি দরকার তখন এমিলি কে । সে পথে জোর করে কাঁটা হন নি মালা । সেটাই তাঁর জীবনের প্রথম ভুল । প্রথম থেকেই এমিলির সাথেই আউট হাউজ এ রাত কাটানো শুরু করলেন মিস্টার ওয়াটসন । সন্তান আসার আনন্দে প্রথমে যেমন মাতোয়ারা হয়েছিলেন তেমনই শেষের দিকে ঝিমিয়ে পড়েছিলেন মিস্টার ওয়াটসন । সন্তান জন্ম দেবার জন্য বেঁচে থাকতেন না মালা ,যদি না নাগাম্মা এমিলির বিষ মেশাবার ঘটনাটা দেখে ফেলত । এমিলি চেয়েছিল মালার ফলের রসে বিষ মিশিয়ে মালাকে মেরে ফেলতে ।উদ্দেশ্য মালা আর সন্তান tকে মেরে ফেলা । পুরোপুরি মিস্টার ওয়াটসন এর দখল নেওয়ার উদ্দেশ্যেই করা । নাগাম্মা বিষ eমেশাবার ব্যাপার টা দেখে ফেলেছিল বলেই সে যাত্রায় বেঁচে গেছেন মালা ও তাঁর সন্তান । নাতাশার .nজন্ম হল । একবছর পর এমিলির ও কন্যা সন্তান হল । মালা তখন মিস্টার ওয়াটসন এর থেকে aনিজেকে গুটিয়ে নিলেন । এমিলির এই সন্তান যে মিস্টার ওয়াটসন এর তা বলে দিতে হবে না । ityমিস্টার ওয়াটসন আবার নতুন করে মালার ঘরে শোওয়া শুরু করলেন । কারণ তখন এমিলি তার hঅধিকার দাবি করল । স্বামীর এই আচরণে পুরুষ জাতির উপরে ঘেন্না ধরে গেছে মালার । যে হেতু aএমিলি অন্তঃসত্তা তাই মিস্টার ওয়াটসন , দেহের খিদে মেটাতে মালার ঘরে এসেছেন , মন সায় না lasথাকলে ও মানতে বাধ্য হয়েছেন মালা ।কেউ এসে না পড়ে তাই দরোজা বন্ধ করল নাতাশা । নাতাশার ভয় কেউ এসে পড়লে সবাই জানা জানি হয়ে যাবে , যে নাতাশার মায়ের লেখা একখানা ngডায়েরি এই বাড়িতেই ছিল । সব কথা পরিস্কার লেখা আছে । নাতাশা আবার মন দিল মায়ের হাতের Baলেখা সেই ডায়েরি তে । এটাই প্রমাণ হিসাবে দাখিল করবে নাতাশা । আবার পড়তে শুরু করল নাতাশা । \" আমার সোনা মেয়ে নাতাশা , তুমি বড় হয়ে এই ডায়েরি পড়ে সব জানতে পারবে । তাই লিখে রাখছি সব কথা । প্রথম বার আমাকে মারতে পারে নি নাগাম্মার জন্য । পরে আবার ও সেই ফাঁদ ই পাতল আমাকে মারার জন্য । কিন্তু আমাকে মারতে গিয়ে তোমার বাবার প্রাণটা নিয়ে নিল এমিলি । বুক চাপড়ে কেঁদেছিলাম সেদিন । কিন্তু ব্রিটিশ পুলিশ আর এমিলির চালে আমাকেই স্বামীর খুনী বলে সাব্যস্ত করা হল ।নাগাম্মা তোমার আর জরিনার দেখাশোনা করত । তার খবর নিও । তাকে ও কি দেশের বাড়িতে পাঠাল ? নাগাম্মার দেশের বাড়ির ঠিকানা 7নং পৃষ্ঠায় পাবে । তোমাকে লড়তে হলে নাগাম্মাকে দরকার । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 58 ব্রিটিশ দারোগার দৌলতে আমাকে অ্যারেস্ট করা হল । এমিলির বক্তব্যে লিখেছে যে মিস্টার ওয়াটসন এর স্ত্রী মালা ওয়াটসন সে নিজে । আর আমি নাকি এমিলি , মিস্টার ওয়াটসন এর রক্ষিতা । তোমার আশায় বেঁচে থাকব যতদিন না মৃত্যু দন্ড হয় । ইতি - তোমার মা । মালা ওয়াটসন । তাড়াতাড়ি ডায়েরি বন্ধ করে একেবারে অদরকারি জিনিসের মধ্যে লুকিয়ে ফেলল ডায়েরি টা । এটা ওর নিজের ঘর । পর্ব-৩ নাতাশা ভেবেছিল চার্লি চলে যাবার পর জেসিকা ওর ওপরে রাগ করবে । কিন্তু তা হল না । বরং tউল্টোটা ই হল । নাতাশার ওপরে জেসিকার টানটা আরও বেড়ে গেল । টম বয় ড্রেস এর মাপ নিতে eএলে জেসিকা ইচ্ছে করেই বড় ঝুলের ড্রেস বানাতে বলেছে । আর সেটা নাতাশাকে দিয়ে দিয়েছে । .nমা কে মিছে অজুহাত দেখিয়েছে যে পোষাক ভাল ফিট করেনি । তাই নাতাশা কে দিয়ে দিয়েছে । এই aভাবেই ভোল পাল্টেছে নাতাশার । দু'জনে পাশাপাশি হাঁটলে সকলের নজর কাড়ে নাতাশা । জেসিকা ityমজা করেই বলেছে । h- তুই ছেলেদের পছন্দ করিস না । অথচ ওদের হ্যাংলা পনা টা দ্যাখ । যেন গিলে খাবে তোকে । lasaমিস্টার ওয়াটসন এর বিশেষ বন্ধুর ছেলে মাদ্রাজ থেকে বিশাখাপত্তনম এ আসছেন । কারণ মিস্টার ওয়াটসন আর তিনি ঠিক করেছিলেন তাদের দুই পরিবারের সম্পর্ক কে টিকিয়ে রাখবেন তাদের ngছেলে ও মেয়ের বিয়ে দিয়ে । এই কারণে তিনি আসছেন বিশাখাপত্তনম আসছেন । এমিলি ওয়াটসন aযথারীতি তাঁর অপেক্ষায় আছেন । প্রথমে একটু চিন্তায় পড়লে ও পরে আশ্বস্ত হয়েছেন । কারণ যিনি Bআসছেন, তিনি মিসেস মালাকে কখনও দেখেন নি তা লিখেছিলেন । সুতরাং চিন্তার কিছুই নেই । তিনি যে এখন মালা ওয়াটসন বলে সবাই কে পরিচয় দিচ্ছেন তা যে নয় সে কথা ধরতে পারবেন না । গেস্ট রুম সাফ করার দায়িত্ব পড়েছে নাতাশার উপরে । বাড়িতে হৈ হৈ রৈরৈ রব পড়েছে । বোঝা গেল একজন কেউ কেটা লোকই আসছেন । মিসেস ওয়াটসন এর মর্জিতেই গেস্ট রুম গোছ গাছ করতে শুরু করেছে নাতাশা । এ সব ব্যাপারে দক্ষতা আছে নাতাশার । এমিলির উদ্দেশ্য অন্য । মেয়ের একটা হিল্লে হওয়ার চেষ্টা করা । মাথায় একটা ফেটি বেঁধে ঘর সাফ করতে লেগেছে নাতাশা । ঝাড় পোচ করতে গিয়ে একখানা ধুলো পড়া ছবি বের হল । ছবির কাঁচে ধুলোর আস্তরণ । তাই ভাল করে মুখের আদল বোঝার উপায় নেই । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 59 কিন্তু বাঁধাই করা ফ্রেম টা বেশী দামী ফ্রেম তা বোঝা যাচ্ছে । রুপোর ওপরে সোনার জল রং করা । একখানা ভিজে কাপড়ে ঘষে মেজে তুলল ছবি খানা । হ্যাঁ । এখন পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে । মিস্টার ওয়াটসন এর সাথে এক সুন্দরী মহিলা । অনেক টা নাতাশার মা মালার মতো । ছবির নিচে লেখা - মিস্টার অ্যান্ড মিসেস ওয়াটসন । ফটো খানা নিয়ে ছুটে গেল নাতাশা নিজের ঘরে । টেনে বের করল মায়ের পুরোন ছবিখানা । এটা তো মায়ের ই ছবি । কি গর্জাস ছবি খানা ! মায়ের সাথে মিস্টার ওয়াটসন । নাতাশার কাছে মায়ের যে ছবি আছে তার সাথে এই ছবি হুবহু এক । তার মা মালা ওয়াটসন মিস্টার ওয়াটসন এর স্ত্রী এতে কোন ভুল নেই । তবে কেন মিস্টার ওয়াটসন এমিলি কে বিয়ে করতে গেলেন ? একটা স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও দ্বিতীয় স্ত্রী কেন ? এর বিহিত করতেই হবে নাতাশাকে । তবে কে জারজ ? নাতাশা না জেসিকা ? মায়ের ওপর এতদিনের জমাট বাঁধা ঘৃণাটা থিতিয়ে আছে । তবে একটু হালকা লাগছে এখন । সমস্ত tঘৃণা গিয়ে পড়ল সেই পুরুষের ওপর যে একটি স্ত্রী থাকতে আরও একজন স্ত্রী কে ঘরে এনেছে । ছুটে eগেল নাতাশা গেস্ট রুম এ । এখানেই সব কিছু র জট খুলবে । যত রকমের কাগজ পত্র আছে তার .nসবই খুটে খুটে দেখতে লাগল । হঠাৎই একটা আধখানা চিঠি পাওয়া গেল । আরে এই তো সেই aআধখানা চিঠি । এরই বাকিটা নাতাশার কাছে রয়েছে । hityআবার নাতাশার মাথায় শয়তান টা ঘুঁটি নাড়ছে । ওর ঘরে ছুটে গেল নাতাশা । ওর ট্রাঙ্কের ভেতর aথেকে বাকি আধ খানা চিঠি বের করল । এবার দুই আধ খানা চিঠির নিচে সেলো টেপ দিয়ে জোড়া lasদিল। হ্যাঁ , এবার পরিস্কার বোঝা যাচ্ছে । চিঠির শুরুটা বুঝি চোখের জলে মুছে গেছে । হয়তো কিছু লেখা ছিল । নাতাশা ছুটে গেল দরজা বন্ধ করতে । যদি কেউ এসে পড়ে ! এই ভেবেই দরজা বন্ধ ngকরল । তার পর চিঠিটা পড়তে শুরু করল । Baস্নেহের নাতাশা, তোমার নামটা তোমার বাবার দিয়েছিলেন । তোমার জন্মের আগে আমাকে দেখা শোনার জন্য ইংল্যান্ড থেকে তোমার বাবার আয়ার মেয়ে কে আনা হয়েছিল । সে যে এমন করে তার প্রতিদান দেবে তা ডাবিনি । অনেক কষ্টে তোমাকে পৃথিবীতে আসতে দিয়েছি । জানি না এমিলি তোমাকে আর আমাকে বিষ দিয়ে মারবে কি না ? দু দুবার আমাকে বিষ দিয়েছিল । কিন্তু অসফল হয়েছে । হয়তো ভগবান চেয়েছিলেন তুমি পৃথিবীতে আস । তোমার পিতা মিস্টার ওয়াটসন । এমিলি যথাসাধ্য চেষ্টা চালাচ্ছে তোমার পিতাকে করায়ত্ব করতে । আমার বিয়ের একবছরের মধ্যেই ঐ কাল নাগিনি আমার সংসার, স্বামী সব কেড়ে নিতে চলেছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 60 আমাকেই মারার জন্য ফলের রসে যে বিষ মিশিয়ে দিয়েছিল , তা দেখে ফেলেছিল নাগাম্মা । তোমার বাবা সে কথা বিশ্বাস করতে পারেন নি তাই জোর করেই ওর দেওয়া বিশ মেশানো সরবৎ খেয়ে নেন । তাঁর ধারণা ছিল ব্রিটিশ রা এমন নিচ কাজ করতেই পারে না । কিছুক্ষন পরেই বিষ ক্রিয়ায় তোমার বাবার মৃত্যু হয় দায়ভার আমার ওপরে চাপিয়ে দিল এমিলি । কারণ ব্রিটিশ পুলিশ ওর হাতেই রয়েছে । ঘর ভর্তি ব্রিটিশ পুলিশ ,আমাকে অ্যারেস্ট করতে এসেছে । সেই ফাঁকে ই তোমাকে লিখলাম । জানিনা এ চিঠি তুমি পাবে কিনা ? আমার লেখা প্রতি দিনের ডায়েরি পাবে। পড়ে ,জেনো তোমার মা কে। ইতি- তোমার মা , মালা - ওয়াটসন । পুঃ বাঁচা আমার কপালে নেই তা বুঝেছি । তোমার ভাগ্যে কি আছে জানি না । পরম পিতার কাছে কামনা করি তুমি সুখী হও । ইতি - এম. ওয়াটসন । etমনকে শক্ত করল নাতাশা । না এখানে আর থাকা যাবে না । তবে ওদের বুঝতে দেবে না । ঠিক করে .nনিল মায়ের প্রতি যে অন্যায় করা হয়েছে তাঁর প্রতিশোধ নিতেই হবে নাতাশাকে । চিঠিটা সন্তর্পনে aরেখে দিল । ityনাতাশা আবার ফিরল সেই গেস্ট রুম এ । দেয়াল জোড়া আলমারির থেকে সব টেনে টেনে বের hকরল নাতাশা । বহুদিনের অব্যাবহৃত একটা মসকিউটো নেট বেড়িয়ে এল । তারই সাথে একটা বড় aরকমের প্যাকেট মখমল দিয়ে মোড়া । সাটিন রিবন দিয়ে বাঁধা সেই মোরক । তাতে মোটা দাগে lasলেখা , নাতাশা ওয়াটসন । সমস্ত শরীরে কম্পন নাতাশার । কিসের প্যাকেট ওটা ? মনে হচ্ছে মায়ের ই রাখা ঐ প্যাকেট । কম্পিত হাতে নাতাশা খুলে ফেলল রিবন খানা । ধবধবে সাদা ওয়েডিং ড্রেস । angমায়েরই ওয়েডিং ড্রেস । সেটা বুঝতে বাকি থাকে না নাতাশার । আর একটা ডায়মন্ড ব্রোচ ,আর Bএকটা ম্যাচিং রিস্টলেট । সোনার ওপরে মিনে করা ফ্রেম এ বাঁধানো বাবার আর মায়ের ওয়েডিং এর ছবি । মায়ের নানান ভঙ্গিতে তোলা ছবি । কোন কোন ছবিতে বাবার সাথে মা ও আছে । ছবিতে দেখা বাবার আর মায়ের সে সময়ের প্রেম টা ছিল জমাট বাঁধা । আর একটা অ্যালবাম এ অনেক ছবি । মায়ের কোলের শিশুটি যে নাতাশা তা না বলে দিলেও বোঝা যাচ্ছে । পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা উল্টে চলল নাতাশা । মায়ের ঝকঝকে হাসিটা আস্তে আস্তে ফিকে লাগছে , যেখানে এমিলির উপস্থিতি রয়েছে সেখানেই । আজকের এমিলি র সাথে তখন কার এমিলির আকাশ পাতাল ফারাক । এই ছবির এমিলির পোষাক সম্ভ্রান্তের পোষাক নয় । সেখানে নাতাশার মা কেই রাজেন্দ্রানীর মতোই লাগছে । বেশ ওজন দার একখানা খাম হাতে তুলে নিল নাতাশা । খামে সিলমোহর করা । সিল খুলতে যাবে এমন সময় দরজায় টোকা পড়ল । দরজার বাইরে এমিলির গলা । - নাতাশা , হোয়াট আর ইউ ডুইং ? www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 61 নাতাশা মূহুর্তের মধ্যেই সিলমোহর করা প্যাকেট টা দেওয়াল আলমারি তে চালান করে দিল । মখমলের প্যাকেট টা মশারিতে ঢেকে আলমারিতে রেখে দিল । ও দিকে দরজায় ধাক্কা র বেগ বাড়তে থাকে । নাতাশা লাঙ্গা পায়ের থেকে তুলে ,কোমরে পেঁচিয়ে দিতে দিতে হাতে একটা ঝাটা নিয়ে দরজা খুলল । যেন কতো কাজ করছে । তাই দরজা খুলতে দেরি । ভাব খানা এমন যেন বে আব্রু হয়ে কাজ করছে বলেই দেরি । - হোয়াট আর ইউ ডুয়িং হিয়ার ? - গেস্ট আসছে তাই ঘর পরিস্কার করছি । - এতক্ষন লাগছে ? - হবে না ? এতদিন ব্যাবহার হয়নি ঘরটা । তাছাড়া লন্ড্রী ওয়ার্ক করে নিচ্ছি । - গুড। বেশি সময় নিও না । মে আই সেন্ড সাম বডি ? - নো । নট নেসেশারি । আই উইল টেক ওনলি হাফ এন আওয়ার । etস্নান করে বের হতে বেলা প্রায় দুটো হল । আজ কিছুই খেতে ইচ্ছা হচ্ছে না নাতাশার । দু ' পিস কেক .nআর এক গ্লাস লেমন জুস বসল নাতাশা । মন পড়ে আছে মায়ের ডায়েরি তে। আর সেই প্যাকেট এ । aকিচেন থেকে বেড়িয়ে সোজা নিজের ঘরে ঢুকল । এবার একেবারেই মুক্ত নাতাশা । কেউ আর তার ityনিজস্ব তায় ব্যাঘাত ঘটাতে আসবে না । আজ অনেক ধকল গেছে । একবার ভাবল, মায়ের প্যাকেট hটা খুলে দেখবে । আবার মনে হল রাতের বেলাই সব থেকে ভাল সময় প্যাকেট খোলার । কেউ aব্যাঘাত ঘটাবে না । শুয়ে পড়ল বিছানায় । গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন নাতাশা । কি সব হচ্ছে ! কোথায় যেন lasঘুড়ে বেড়াচ্ছে নাতাশা । দেখতে পাচ্ছে এমিলি ঘুড়ে বেড়াচ্ছে । পড়নে তার ময়লা স্কার্ট । ঘরের কাজ করছে । মাঝে মাঝে মায়ের মিষ্টি গলা শোনা যাচ্ছে । গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন নাতাশা । দরজায় ধাক্কা ngপড়তে ধরমর করে উঠে বসল । মনে পড়ে গেল মায়ের চিঠি খানার কথা । মা, বোধ হয় আরও চিঠি aলিখেছে নাতাশা কে । এখন ও সূর্য ডোবে নি । আবার দরজায় ধাক্কা পড়তে উঠে দাঁড়াল নাতাশা । Bবাইরে জেসিকার গলা ।- নাতাশা ,,ওপেন দ্যা ডোর । দরজা খোল । নাতাশা দরজা খোলার সাথে সাথেই চিৎকার করে উঠল জেসিকা ।- বাব্বা! কি ঘুমাতে পারিস রে ? কখন থেকেই দরজা ধাক্কাচ্ছি । স্বপ্ন দেখছিলি? - হ্যাঁ। তোর জন্য কি ঘুমাতে ও পারব না? স্বপ্ন দেখছিলাম তুই আমার গলা টিপে ধরেছিস । টম বয় এর সাথে তোর বিয়ে হচ্ছে । তুই একটা সাদা ব্রাইডাল গাউন পড়ে চলেছিস । আর টম বয় তোর হাত ধরে আছে । - যাঃ । তা হতেই পারে না । টম বয় কে আমি পছন্দ করি না । ওকে কেন বিয়ে করব ? আর গলা টেপার কথা তুই ভাবতে পারলি? আমি কখন ও অমন করতে পারি বল? www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 62 রাতে তাড়াতাড়ি শোবার ঘরে ঢুকল নাতাশা । মাথায় পাক খাচ্ছে মায়ের হাতে লেখা ডায়েরি খানা । ঘরের দরজা বন্ধ করে দিল নাতাশা । এরপর সেই শিলমোহর করা প্যাকেট খানা বার করল । তার পর ডায়েরি খানা বার করল । ডায়েরি র প্রথম পাতায় বড় বড় করে লেখা \"মালা ওয়াটসন । ওয়াটসন ম্যানসন । বিশাখাপত্তনম। । 13 ই অগস্ট । উনিশ শো পয়তাল্লিশ সাল \" । মালা ওয়াটসন এর লেখা ডায়েরি খুলে পড়তে শুরু করল নাতাশা । নাতাশা যেন ঘটনা গুলো চোখে দেখতে পাচ্ছে । মালা ওয়াটসন ডাকছেন এমিলি কে । মালা- এমিলি চুলটা বেঁধে দেবে গো? তোমাদের দেশেও তো খোঁপা বাধা হয় । তাই না ? - ইয়েস । চিরুনি টা দাও ,বেঁধে দিচ্ছি । চিরুনি দিয়ে জোর করে আঁচড়ে দিতে লাগল এমিলি । এমিলি- কি গো মেমসাব , তোমার চুলে তো খুব জট পড়ছে ! মালা - কোথায় ? একটু আগেও তো আচড়ালাম। এমন জটা তো ছিল না । tএমিলি- তবে আমি কি ইচ্ছা করেই জটা বানাচ্ছি ? eমালা- আরে, না না তা কেন করবে ? আমি তা বলিনি । a.nএই কথোপকথন এর মাঝেই মিস্টার ওয়াটসন এসে পড়েছেন । কানে এসেছে দুজনের কথা । এমিলি ityমিস্টার ওয়াটসন কে বলল । - স্যার , মেমসাহেব বললেন আমি নাকি ওর চুলে জটা ফেলেছি । ahমালা- না না আমি তা বলতে চাই নি । lasএমিলি- এখন কথা ঘোরাবেন না মেম সাহেব । ngলজ্জায় মালা স্বামীর চোখে চোখ ফেললেন । যাতে ওর চোখের দৃষ্টিতে মিস্টার ওয়াটসন স্ত্রীর মনের aকথাটা বুঝতে পারেন । কিন্তু তা হল না । স্বামী ,স্ত্রীকেই ভর্ৎসনা করলেন । - ছিঃ ছিঃ মালা । এ Bতোমার ভারি অন্যায় । দেখ আর যাই বিশ্বাস করি না কেন ব্রিটিশ রা কখনও মিথ্যা বলে না । এ কথা আমি মন থেকে বিশ্বাস করি । এমিলির মুখে আর হাসি ধরে না । বিজয়িনীর হাসি এমিলির । দিনে দিনে মালা স্বামীর কাছ থেকে দূরে সরে যেতে লাগলেন । এখন অন্তঃসত্তা স্ত্রীর থেকেও বেশি দরকার এমিলি কে । সে পথে জোর করে কাঁটা হন নি মালা ওয়াটসন । সেটাই তাঁর জীবনের প্রথম ভুল হয়েছিল। মিস্টার ওয়াটসন এর শিশুকালের আয়ার মেয়ে এই এমিলি । লন্ডনে খুব দৈন্য দশায় ছিল । তাকেই ঠাঁই দিয়েছিলেন মালা ওয়াটসন । বুঝতেও পারেন নি শেষ অবধি ফল এই হবে । চোখ বুজে আসছে নাতাশার । বন্ধ করল ডায়েরি । ঘুমের ঘোরে দেখছে , নাতাশা কেবল ই ছুটে চলছে । ধরা দেবেনা কিছুতেই এমিলির হাতে । লম্বা দড়ি নিয়ে নাতাশার পেছনে ছুটছে এমিলি । ধরে ফেলল নাতাশা কে । নাতাশার গলায় প্যাঁচ দিতে লাগল । নাতাশা প্রাণ পনে নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে চলেছে । শ্বাস রোধ হয়ে আসছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 63 নিঃশ্বাস নেবার জন্য হাত পা ছুড়ছে নাতাশা । মিস্টার ওয়াটসন চিৎকার করছেন । - এ কি করছো এমিলি ?ছেড়ে দাও নাতাশা কে। এমিলি- না । ওকে ছাড়ব না । মায়ের কাতর অনুরোধ- নাতাশা কে ছেড়ে দাও । ও তোমার কাছে থাকবে না । যেখানেই হোক চলে যাবে নাতাশা । নাতাশা কেবলই ছুটে পালাচ্ছে। ধরা দেবেনা এমিলির হাতে । থরথর করে কাঁপছে নাতাশার সারা শরীর । চোখ মেলল সে । কৈ !কেউ তো কাছে নেই ! তবে কি সে এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিল ? স্বপ্ন হলেও এমিলির অসাধ্য কিছুই নেই । বাবাকে ও এমিলি খুন করেছে । অবশ্য বাবাকে খুন করতে চায় নি । মাকে ই বিষ দিয়েছিল । অতি বিশ্বাসে বাবা সেটা খেয়ে নিয়েছিলেন । একটু একটু মনে পড়ছে সেই নাগাম্মা কে । সেই নাগাম্মা ও বেপাত্তা হয়ে গেল । যার ওপরে মেয়ের সব দায়িত্ব দিয়েছিলেন মালা । মিস্টার ওয়াটসন এর মেয়ে যে নাতাশা তা ও চেপে রেখেছিল এমিলি এতদিন নাতাশার কাছে । নাতাশা কে বলেছিল জারজ সন্তান । নাতাশা , বিবাহিত পিতা মাতার সন্তান নয় তাই বলেছে এতদিন । শরীর টা ভার হয়ে আছে । দুপুরের ঘুমে এত গভীর স্বপ্ন! জেসিকার গলা কানে আসছে । বিছানা থেকে উঠে পড়ল নাতাশা । tদরজা খুলে বলল , জেসিকা ,তোর জন্য কি একটুও ঘুমোতে পারব না? .neজেসিকা- কেন? কতো ঘুমাবি ? ঘুমাস নি তুই? aনাতাশা- ঘুমিয়েছি ,স্বপ্নে দেখলাম তুই আমার গলা টিপে ধরেছিস । ityজেসিকার মুখ খানা মিইয়ে গেল । বলল- তোকে আমি কখন ও মারি বল? hনাতাশা- না ,মারিস না । aজেসিকা- তবে কেন অমন স্বপ্ন দেখিস? আমি তোকে খুব ভালবাসি । মা তোকে বকলে আমার খুব lasকষ্ট হয় । ngনাতাশা- ঠিক আছে আর অমন স্বপ্ন দেখব না । তবে জ্যোতিষ বলেছে আমাকে কেউ বিষ খাইয়ে aমারতে পারে । Bজেসিকা- তাই নাকি?আমার ভয় করছে রে নাতাশা। তবে তো তুই মরে যাবি ? নাতাশা- হ্যাঁ। মরবো তো । জেসিকা - আমি কার সাথে থাকবো ,গল্প করবো? নাতাশা- ব্যাস্ ? গল্প ছাড়া আর আমাকে দরকার নেই ? জেসিকা- না না ,আছে তো ।তোকে ছাড়া আমি বাঁচবো না । নাতাশা- ঠিক আছে । তাহলে দেখবি ,আমার খাবারে কেউ বিষ না মেশায় । এমিলি আন্টি কে ও বলবি না এ কথা । তাহলে আমাকে খুব মারবে । জেসিকা- না না ,কিচ্ছু বলব না । নাতাশার খুব কষ্ট হচ্ছিল জেসিকার জন্য । খুব ভাল মেয়ে জেসিকা । নাতাশা কে খুব ভালবাসে । কেন যে নাতাশা মাঝে মাঝেই জেসিকার ওপর অত্যাচার চালায় ! ওর মায়ের ওপরের রাগের ঝাল ওর ওপরে ঝাড়ে। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 64 চার্চ এর ঘড়ি তে এখন রাত বারো টা বাজলো । নাতাশা এখন ও ঘুমায় নি । বাড়ির সমস্ত আলো নিভে গেছে । তবুও লাইট জ্বালতে সাহস পাচ্ছে না নাতাশা । কি জানি কেউ যদি টের পায় !! চাঁদের আলোয় সেই গালা ভরা প্যাকেট খানা বার করে দেখল । তার পর সোজা টয়লেট এ নিয়ে গেল । এখানে আলো জ্বাললে কেউ দেখতে পাবে না । আর আলো দেখলে ভাববে নাতাশা টয়লেট গেছে । ঝকঝকে টয়লেট এ খুলে ফেলল প্যাকেট খানা । ভেতরে চেন দেওয়া একখানা রেশমী ব্যাগ । ব্যাগের চেন খুলে ফেলল নাতাশা । এ কি দেখছে সে ! একখানা ভারি নেকলেস তাতে হীরে বসান রয়েছে । চোখ জুড়িয়ে যাওয়া সৌন্দর্য তাতে । তার ই সঙ্গে মানানসই কানের কুন্ডল । তাতেও হীরের ঝলক । এক জোরা রিস্টলেট এ অসংখ্য হীরের দ্যুতির ঝলক ছড়াচ্ছে । আবার ও রেশমী ব্যাগে হাত ঢোকাল এই ভেবে যে যদি আর ও কিছু থাকে এই ভেবে যে কিছু যদি থেকে !! বেড়িয়ে এল একটা চিরকুট । তাতে লেখা- আমার বিয়ের গহনা ,রইল তোমার জন্য । tএম ওয়াটসন । eএর পর প্রায় দশ পাতা লেখা রয়েছে । ওপর ওপর পড়ে পাতা উল্টে গেল নাতাশা । হঠাৎই একটা .nলাইন এ চোখ আটকে গেল। itya\" এমিলি ব্রাউন এসেছে । ওর অবস্থার কথা ভেবেই আনিয়েছি ওকে । মিস্টার ওয়াটসন এর দেশের hলোক । কথায় কথায় মিস্টার ওয়াটসন ওর হয়ে আমাকে বলেন, ব্রিটিশ রা মিথ্যা বলে না । তুমি aবললেও বিশ্বাস করব না\" । las\"আমার যে সমস্ত পোষাক মিস্টার ওয়াটসন এর প্রিয় ছিল এখন এমিলি পড়ছে । আমার সাথে ngএমিলি খারাপ ব্যবহার করে আজকাল । তবে মিস্টার ওয়াটসন এর সামনে নয় \" । Baনাতাশা হওয়ার পর মিস্টার ওয়াটসন মেয়ে নিয়ে মত্ত। সেটাও এমিলির অসহ্য । একবছর পর জেসিকার জন্ম । এই মেয়ের পিতা নিয়ে আমার কোন সন্দেহ ছিল না । নাতাশার জন্মের পর মিস্টার ওয়াটসনের সাথে এমিলির ওঠা বসা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । এমিলির আসন টল টলায়মান তা বুঝেই আমাকে শেষ করতে গিয়ে মিস্টার ওয়াটসন কে শেষ করে ফেলল । নাতাশা এই ডায়েরি তোমার বিশেষ অস্ত্র। ডোন্ট ফরগেট , উই ওয়ান্ট জাস্টিস । নাতাশা, তোমাকে আর জেসিকা, দুজন কেই স্কুলে দেওয়া হয়েছে। মনে পড়ে সেদিনের কথা, যেদিন তোমার বাবার মৃত্যু হল । সেদিন তোমরা স্কুলে যাবার পর আমরা ব্রেকফাস্ট করছি । এমিলি আমাদের ফলের রস আনতে গেছে । হঠাৎই এমিলির ফলের রস আনার কি দরকার বুঝলাম না । কারণ একাজ টা নাগাম্মার রোজের কাজ । নাগাম্মা ছুটতে ছুটতে বাগানে এসেই বলল এমিলি নাকি ফলের রসে কিসের গুড়ো মিশিয়েছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 65 - আম্মা, খেয়ো না ফলের রস । মিস্টার ওয়াটসন বিশ্বাস করলেন না এ কথা । বললেন- হতেই পারে না । দেখ আমি কি করি ! কিছু পরেই এমিলি শরবৎ নিয়ে এল । ট্রে তে দু খানা গ্লাস দু দিকে । এবার মিস্টার ওয়াটসন বলেন এমিলি কে - তোমার টা কোথায় ? এমিলি- ইচ্ছা করছে না খেতে । কথা বলতে বলতেই মিস্টার ওয়াটসন মালার গ্লাস উঠিয়ে এক চুমুকে ফলের রস শেষ করে ফেলেছেন। এমিলি কিছু বলতে উঠে দাঁড়ালেও মুখ দিয়ে কথা আর সরলো না । মালা বুঝে গেছেন যে তার সর্বনাশ হয়ে গেল । দেখতে দেখতেই ঢলে পড়লেন মিস্টার ওয়াটসন । আমার কর্তব্য বুঝে যতো টা সম্ভব এই ডায়েরি তে লিখে রাখছি । ডোন্ট ফরগেট, উই ওয়ান্ট জাস্টিস। এটা তোমার লড়াইয়ের অস্ত্র । আমি চাই তুমি একজন অ্যাডভোকেট হও । বিচারের বানী যেন নিরবে নিভৃতে না কাঁদে । আউট হাউজ থেকে এমিলির চিৎকার আমি একদিন শুনেছিলাম । ওর ফাটা গলার স্বর শুনেছিলাম । \"আই উইল মার্ডার ইয়র ওয়াইফ অ্যান্ড ইয়র চাইল্ড । আফটার দ্যাট ইয়ু হ্যাভ টু tম্যারি মি \"। তখন সিংহ নাদ শোনা গিয়েছিল মিস্টার ওয়াটসন এর । সেই শব্দ আউট হাউজ ছাপিয়ে eচলে এসেছিল মালার ঘরে । \"শাট আপ্ । আই উইল কিল ইউ বিফোর দ্যাট্ । a.n\"সারারাত সেদিন এপাশ আর ওপাশ করেছিলাম স্বামী স্ত্রী দুজনেই । এমিলির বলা এত বড় একটা ityকথা তার দাম কেন তিনি দেন নি তা জানি না । তবে আমার সন্দেহ সব সময়েই ছিল । তোমার hবাবার এমিলির ওপরের বিশ্বাস ই তাঁর মৃত্যুর কারণ । ঐ সরবৎ খাবার পরই তাঁর দৃষ্টি পাল্টে গেল । aকপালে ঘাম দেখা গেল । এমিলি ভয়ে সড়ে পড়েছে । ওয়াটসন বললেন- ও যে সত্যিই তোমাকে lasখুন করতে পারে তা ভাবতেই পারিনি । ngনিচ- কথা বলতে বলতেই চেয়ার এ কাত হয়ে পড়লেন । আমি সেই অবস্থাতেই ডাক্তার কে কল aকরলাম। ডাক্তার তোমার বাবা কে দেখে বললেন, হি ইজ নো মোর । দশ মিনিট আগে ই তিনি চলে Bগেছেন । ওদিকে এমিলি নাগাম্মা কে ঘরে বন্ধ করেরেখেছিল। যদি নাগাম্মা মুখ খোলে সেই ভয়ে। কারণ নাগাম্মা এমিলির সব ছল চাতুরি ধরতে পেরেছিল । তুমি আর জেসিকা তখন স্কুলে । এরপর পুলিশে পুলিশে ঘর ছেয়ে গেল । আমিই নাকি স্বামীর খুনী \" । চোখের জল ধরে রাখার ক্ষমতা নেই নাতাশার । এই পরিবেশে এখন থাকাও বিপজ্জনক । ডায়েরি টা এখন নাতাশার কাছে অমূল্য । জানাতে পারলে এটাও গায়েব করতে পারে এমিলি । একটু একটু মনে পড়ছে নাতাশার । একেবারেই ধোঁয়াশা স্মৃতি । স্কুল থেকে ফিরেই দেখল কতো গুলো পুলিশ মায়ের হাতে হাত কড়া পড়িয়ে নিয়ে যাচ্ছে । কিছুই বোঝেনি নাতাশা । তবে মা নাতাশার দিকে দুহাত বাড়িয়ে কাঁদছিল । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 66 এরপর নাগাম্মার ও আর দেখা মেলেনি । মনে পড়ল, ও কেন কাঁদছিল তা বোঝেনি নাতাশা । তবে নাতাশার কান্না দেখে ওকে একটা ঘরে আটকে রেখেছিল এমিলি । তা দেখে জেসিকার ও কি কান্না । ছোট থেকেই জেসিকা নাতাশার নেওটা ছিল । এরপর ই শুরু হল বলা, নাতাশা নাকি জারজ সন্তান । মিস্টার ওয়াটসন নাকি দয়া করে ওদের ঠাঁই দিয়েছিলেন । মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহিত স্ত্রী নাকি এমিলি । ওরই ভাল নাম নাকি মালা । শিশুকাল থেকেই নাতাশা শুনে এসেছে মালা নাকি এমিলির মেইড সার্ভেন্ট ছিল । একটু বড় হয়ে মায়ের কোন ছবিতে এমিলির পোষাক দেখে সন্দেহ হয়েছে। প্রশ্ন জেগেছে মনে । মালা যদি মেইড সার্ভন্ট তবে তার পোষাক জমকাল কেন? পনেরতে পড়া নাতাশা জানত জেসিকার সাথে তার দরের ফারাক টা । মাঝে মাঝেই মা মালার ওপরে রাগ হতো । শিশুকাল দেখা মায়ের মুখের আদলটা আবছা হলেও মনে পড়ে ভারী টলটলে ছিল মুখখানা । শুনেছে মিস্টার ওয়াটসন তার বাবা নন। রাগ হলে এমিলি নাতাশার ব্যপারে সব গোল মাল করে ফেলত। কখনও বলত মিস্টার ওয়াটসন এর অলিখিত সন্তান tনাতাশা । .neনাতাশার মেদ হীন লম্বা শরীর । কারিগর নাতাশাকে গড়ার সময় শরীরের বড় কোমল জায়গাতেই aবাড়তি মেদ জড় করেছেন । সেই জড় করা বাড়তি মেদের ঢেউ নজর কাঁড়ে আশে পাশের পুরুষদের ity। সেটা বুঝেই আরও বুকটান করে হাঁটে পনের তে নাতাশা । ahপর্ব-৪ lasছোট বেলার কিছু কথা আবছা আবছা মনে পড়ছে নাতাশার । মায়ের ডায়েরি পড়ে আর ও পরিস্কার ngমনে হচ্ছে । মায়ের বাড়ির কথা। দাদুর বাড়ি ছিল গঞ্জাম জেলায় । মায়ের মামার উদ্যোগেই ,মায়ের aমামার বন্ধু মিস্টার ওয়াটসন এর পছন্দ হয়ে গেল মালাকে । বিয়ে হয়েছিল পার্ক হোটেলেই । বেশ Bজাঁক করেই হয়েছিল । হিন্দু মতে ,আবার খৃষ্টান মতেও বিয়ে হয়েছিল । গঞ্জাম থেকেই মায়ের মা ও বাবা এসেছিলেন কৈলাশ নগরের বাড়িতে । তখন মায়ের মামা ভেঙ্কাইয়া নাইডু মাদ্রাজ পোর্ট এ চাকরি করতেন । মিস্টার ওয়াটসন এর সাথে বন্ধুত্ব অনেক আগের । তখন দুজনেই মাত্র চাকরিতে যোগ দেন। একে ভাগ্নী আর দ্বিতীয়ত বন্ধুর বিয়ে । অতএব যেতেই হবে ওয়ালটেয়র এ বিয়েতে । স্ত্রী পুত্র কে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন মালার বিয়েতে । ডায়েরি পড়ে জেনেছে নাতাশা । আবার মায়ের ডায়েরি চোখের সামনে মেলে ধরল নাতাশা । মায়ের বিয়ের সময়ের কথা পড়তে লাগল । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 67 \"কথায় বলে মিয়া বিবি রাজী তো ক্যা করেগা কাজী \"। যখন দু'পক্ষ ই রাজি তখন আর দেরি কেন ? হিন্দু মতেই বাসর জাগা হল । বিশাল হল ঘরে বর বৌয়ের শোবার ব্যবস্থা হল । ফচকে শালা শালীর ও অভাব হয় নি । তবে ওয়াটসন এর তেলেগু জ্ঞান অতি সীমিত তাই আসর জমেনি । নব বঁধূর ঘুম জড়ানো চোখ দেখে মামা ভেঙ্কাইয়া সবাই কে হটিয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু, নব বঁধূ ঘুমাবে কি , ওয়াটসন কি তাকে ঘুমাতে দিয়েছিলেন? অমন প্রাণবন্ত ,সুন্দরী, লাজবতী কন্যাকে ঘুমাতে দিতে পারেন ! তিনি গোগ্রাসেই নব বঁধূকে গিলেছেন বলা যায় । \"মামা ভেঙ্কাইয়া কে চলে যেতে হয়েছিল মাদ্রাজে । কথা হয়েছিল যে ওয়াটসন এর মেয়ে হলে সেই মেয়ের বিয়ে হবে বেঙ্কাইয়ার ছেলে সূর্য প্রকাশের সঙ্গেই । বন্ধু বিচ্ছেদ হবে না কোন দিন । \" ডায়েরি পড়তে পড়তে চোখে জল এসে যাচ্ছে । কোথায় গেল আমার মা ? মনটা উদ্বেল হয়ে ওঠে নাতাশার । খুঁজে বের করতেই হবে মা কে । মা সব তথ্য লিখে দিয়েছে । ভাবছে নাতাশা । etসেই ছোট্ট বেলার কথা মনে পড়ে, স্কুল থেকে ফিরেই দেখেছিল নাগাম্মা কাঁদছে । নাগাম্মা নাতাশাকে .nকিছু বলতে যাচ্ছিল । ছুটে এসেছিল এমিলি । টানতে টানতে নাগাম্মা কে সেখান থেকে নিয়ে aগিয়েছিল । কারণ টা তখন বোঝেনি । কিন্তু আজ, এত বছর পর বুঝতে পারছে নাতাশা । তারপর ityথেকে নাতাশা আর নাগাম্মাকে দেখতে পায় নি । ahবাবা আর ওর মা কোথায় তা প্রশ্ন করে কোন উত্তর পায়নি নাতাশা । তার উত্তরে শুনতে হয়েছিল, lasআর কোন দিন এই প্রশ্ন করলে ঘর থেকেই বার করে দেবে নাতাশা কে । একটাই কথা বলেছিল - ওরা দু'জনেই বেঁচে নেই । সেই নিষেধ বানী আজও মনে রেখেছে নাতাশা । একবারের জন্য ও ngমায়ের কথা তোলেনি নাতাশা । এমিলির আদেশ অনুযায়ী গেস্ট রুম পরিস্কার করছে নাতাশা । এমিলি aবলেছে মিস্টার ওয়াটসন এর বন্ধু আসছেন । তার নাম অবধি জানা নেই । তবে তার ছেলে নাম করা Bব্যবসায়ী ওয়াটসন এর মেয়ের সাথে বিয়ের কথা ঠিক করতে আসছেন । কম বয়সে অনেক উন্নতি করেছেন । তাঁর ই সঙ্গে মিস্টার ওয়াটসন এর মেয়ের বিয়ে দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন তারা । আনন্দে মাতোয়ারা এমিলি । এই সুযোগে মেয়ের একটা ভাল পাত্র জুটে যাবে । আগে থেকেই নাকি ঠিক করে রেখেছিলেন দুজনেই । তারপর ই হঠাৎ স্তব্ধ হয়ে যায় তাদের চিঠিপত্র চালাচালি । ছেলের বিয়ের কথা তুলতেই তিনি ভাইজ্যাগ আসছেন । দুই বন্ধুর দহরম মহরম এর বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন বেঙ্কাইয়া । তবে যে কথাটা তিনি চেপে যান তা হল ,মালা তার নিজের দিদির মেয়ে । কারণ মালার অন্তর্ধ্যান ও ওয়াটসন এর মৃত্যুর খবর তার কাছে সুদূর মাদ্রাজে পৌঁছে গেছে । তিনি সম্পূর্ণ না জানার ভান করেন এমিলির কাছে । ওয়াটসন কে তিনি ভালোবাসতেন তার কারণ একটাই । তা হল ওয়াটসন ভারতীয়দের নেটিভ বলে ঘেন্না করতেন না । তা ছাড়া ভারতীয় ভাবধারার প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিলেন । মালা ওয়াটসন তাঁর সম্পর্কে ভাগ্নী । নাতাশা মিস্টার ওয়াটসন এর কন্যা ও বেঙ্কাইয়ার সম্পর্কে নাতনী । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 68 বিশ্বস্ত সূত্রে জেনেছেন মালার মেয়ে নাতাশা ও জানে না যে তার মা মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহিতা স্ত্রী । সে জানে এমিলি ই মিস্টার ওয়াটসন এর স্ত্রী । ওয়ালটেয়র আসার আর একটা কারণ হল, মালাকে খুঁজে বার করা । সেই জন্য তিনি তাঁর ছেলে কে পাঠিয়েছেন সমস্ত তথ্য । যাতে পুরো ব্যাপারটার তদন্ত করতে করতে পারে । এদিকে দুই বন্ধুর দহরম মহরম এর বিস্তারিত উল্লেখ করে এমিলিকে চিঠি দিয়েছিলেন । চিঠিতে উল্লেখ করেছেন যে তাঁর ছেলে সূর্য প্রকাশ এর সাথে ওয়াটসন এর কন্যার বিবাহ দিতে চান সেই জন্য ই একদিন ওরা ওয়াটসন ম্যানসন এ থাকবেন । বেঙ্কাইয়া তার দিদির কাছ থেকেই কিছু উড়ো খবর পেয়েছিলেন । তখনই ছেলেকে ওকালতি পড়ান । কেস টা খুব পুরোন । তাই অনেক কাঠ খড় পোড়াতে হবে । নইলে কেস থেকে উদ্ধার করা সম্ভব নয় । এখন তার ছেলে ওয়ালটেয়র জাজেস কোর্টে র একজন নাম করা উকিল । সেই খুনের কেস সুরাহা করতে সেই ছেলে জোর কদমে লেগে পড়েছে । আঁট ঘাট বেঁধে ই নেমেছে সেই ছেলে । যাতে কাক tপক্ষীটি টের টি না পায় । .neবেঙ্কাইয়া ভাবতেও পারেন না যে এমিলি এমন একজন মহিলা যে ,শুধুমাত্র মিস্টার ওয়াটসন কে খুন aই করেন নি । মালাকে ও বেপাত্তা করে দিয়েছে । মিস্টার ওয়াটসন এর স্ত্রী কাগজে কলমে মালা ityহলেও তার ডাক নাম এখন এমিলি । এই খবরে তাজ্জব বেঙ্কাইয়া । এ খবর ও এসেছে যে তার hএকটি মেয়ে আছে । নাম জেসিকা । আর একটি মেয়ে আছে , সে নাকি মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহ aবহির্ভূত সম্পর্কের ফল । ভেঙ্কাইয়ার ছেলে সূর্য প্রকাশ লিখেছে তার বাবা কে, সেই মেয়ের নাম lasনাতাশা । এই মেয়ে কেই সে বিয়ে করবে । নইলে নয় । বাপ ছেলের মধ্যে কোন রাখ ঢাক নেই । তাই বাবাকে পরিস্কার লিখেছে । ঐ মেয়ের সৌন্দর্যে অবগাহন করতে মন চায় । হোক না তার পঙ্কীলতায় ngজন্ম । বেঙ্কাইয়া পড়েছেন নাকালে । স্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা পর ঠিক করেছেন ওয়ালটেয়র এ যাবেন aতিনি । তবে ছেলের কাছে উঠবেন না । তাহলে ওরা জেনে যাবে ছেলের বৃত্তান্ত । সেটা তিনি পুরোটাই Bগোপন করতে চান । ওদিকে ভেঙ্কাইয়া র দিদি আর জামাই বাবু মেয়ের শোকে পাথর । সব দায় পড়েছে ভাইয়ের ওপরে । মেয়ে কোথায় চলে গেল আবার স্বামীকে খুন করে ! তাও আবার ঐ মেয়ে ! কখন ও ই না । ঐ মেয়ে কখনও খুন করতে পারে না । তারপর গোদের ওপর বিষফোট । কোথা থেকে আর একজন কে জুটেছে । সে এখন জামাই এর সংসারে মৌরসী পাট্টা জমাচ্ছে । সে বলছে ,সে ই নাকি ওয়াটসন এর বিবাহিত স্ত্রী । সে ও তার মেয়ে এখন জাঁক করে ওয়াটসন ম্যানসন এ থাকে । মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের ফল যাকে বলা হচ্ছে তার পদবী ওয়াটসন টা এখনও আছে। কারণ যখন মিস্টার ওয়াটসন মেয়ে কে স্কুলে দাখিল করার সময় ঐ পদবী টাই দিয়েছিলেন। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 69 ওয়াটসন এর মৃত্যুর খবর টা সমস্ত পেপারে ছয়লাপ হয়েছিল । পেপারে চাউর হয়েছিল অন্য ভাবে । মালার স্বামীকে খুন করে পালিয়ে গেছে আয়া এমিলি । তার কোন তল্লাশি হয়নি । কারণ দক্ষ হাতের শক্ত থাবায় চাঁপা পড়ে গিয়েছিল কেস টা । বেঙ্কাইয়া ধরেই নিয়েছিলেন 'ডাল মে কুছ কালা হ্যায়' । তাই ,ছেলে সুদক্ষ অ্যাডভোকেট হওয়ায় আঁট ঘাট বেঁধে খুঁজবেন মালাকে । মিস্টার ওয়াটসন এর বন্ধু হিসাবেই ওয়াটসন ম্যানসন এ থাকতে চান বেঙ্কাইয়া একটা দিন । মিস্টার ওয়াটসন কে শ্রদ্ধা জানাতেই আসছেন তিনি । তা ছাড়া পুরোন সম্পর্কের জোড়া লাগানো ইচ্ছা । ক'দিনের মধ্যেই এমিলির উত্তর এসেছে । - চলে আসুন । যত দিন খুশি থাকুন । অধীর অপেক্ষায় থাকব । চিঠি পড়ে হেসেছেন বেঙ্কাইয়া । 'ভেবেছে এবার ওয়াটসন এর মতো আমার ও ঘাড় মটকাবে । ঘুঘু tদেখেছ ফাঁদ দেখনি । আমি তোমার কালা করতুত খুঁজে বার করব । এই কারণে ই ছেলেকে eওয়ালটেয়র জাজেস কোর্ট এ ওকালতি করতে পাঠিয়েছি । দেখ তোমার আমি কি করি ! নাতাশা .nমায়ের ডায়েরি পড়ার পর ঠিক করে নিয়েছিল যে ওকে যেভাবেই হোক ওকালতি পাশ করতে হবে। aআর কোন দিকে তাকাবে না । বিয়ে তো কোন দিন ই করবে না । তাই ভর্তি হয়ে গেল ল'কলেজে । ityতাও তিন বছর পেরিয়ে গেল প্রায় । দেখতে দেখতেই নাতাশার শিক্ষার জৌলুস আরও বাড়তে লাগল h। চেহারা ও চিক্কন হল । কলেজে ঢোকার মুখেই অনেক কালো কোট ধারি রা ব্যস্ত হয়ে পড়ে aনাতাশাকে পথ দেওয়ার জন্য । নাতাশা ইচ্ছে করেই ওদের চোখে ,প্রেমের ঝাপটা মেরে যায় । lasনাতাশা ভাল করেই জানে যে আজ রাত টা ওরা সবাই নাতাশাকে পাশ বালিশ করবে । করুক না নাতাশা ওদের কেয়ার করেনা । নাতাশা ভাল করেই জানে যে ওরা ইচ্ছে করেই পথ আটকে থাকে । angযাতে নাতাশাকে পথ ছাড়ার সময় ওদের ওপরে নাতাশার নজর পড়ে । যদি কারও ভাগ্যে শিকে Bছিড়ে পড়ে ! নাতাশার এই ডোন্ট কেয়ার ভাবটা ওদের মধ্যে ই একজনের বুঝি পছন্দ হয়নি । তাই সেই কালো কোট ধারি একজন নাতাশাকে আসতে দেখে বলল। - লেট আস সেলিব্রেট আওয়ার হনিমুন। কথাটা নাতাশার কানে যেতেই নাতাশার নজর ফিরল তার দিকে । সেই ছেলে এমন কিছু হেলাফেলার ছেলে নয় বরং কন্দর্প কান্তি , লম্বা ,চোখ জোড়া মন টানার মতো । তবে নাতাশা ওদের থোরাই কেয়ার করে ! নাতাশা দেখছে সবাই সরে গেলেও ঐ একজন পথ ছাড়ল না । এগিয়ে এলো নাতাশার দিকে । তারপর হঠাৎই নাতাশা কে জাপ্টে ধরে দম বন্ধ করা কিস করল । তার পর হঠাৎই ছেড়ে দিল । ব্যালান্স হারিয়ে নাতাশা পড়েই যাচ্ছিল । সেই ছেলে জাপ্টে ধরে ফেলল নাতাশা কে । নাতাশা যখন পালাতে যাবে তখন সেই ছেলে বলল। - আই লাভ ইউ । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 70 নাতাশার চোখে তখন ছাল ছাড়ানো দৃষ্টি ,যেন ভস্ম করে দেবে ঐ ছেলেকে । বাকি কালো কোট ধারি রা হাত তালি দিতে লাগল। চরম অপমানিত নাতাশা এক ছুটে ক্লাস এ ঢুকল । এরপর থেকে যখন ল'কলেজে নাতাশা ঢুকতো তখন দেখত কেউ আর ভীড় করছে না । কেমন যেন শূন্য শূন্য লাগতো কলেজের চার পাশ টা । হঠাৎই কি হল তা বুঝতে পারে না নাতাশা । এখন আর কালো কোট ধারি রা ভীড় করে না । বরং নাতাশা কে দেখলে হাত নেড়ে উইশ করে তারা । হঠাৎ ওদের ই একজনের সাথে মুখোমুখি হওয়াতে সে হাত নেড়ে বলল । - কেমন আছ বৌদি ? নাতাশা বেশ রাগেই বলেছে - বৌদি, বলছেন কেন? উত্তরে ছেলেটি যা বলেছে তা শুনে নাতাশার ভিরমি খাবার জোগার । - দাদা , বলেছে তোমাকেই নাকি বিয়ে করবে । তাহলে তুমি কি বৌদি না ? রাগে মুখে কোন কথা সরেনি নাতাশার । আপনার থেকেই হাত চলে গেল ঠোঁটে । এখন ও ঠোঁটে জ্বালা রয়ে গেছে । কে এই ছেলে ? উকিল যে তাতে কোন ভুল নেই । নইলে এই কোর্টের চত্বরে তাঁকে দেখা যেত না । ঐ দস্যু ছেলেকে আর যেন দেখতে না হয় । tফাইনাল টাচ দেওয়ার পর নাতাশা গেস্ট রুম এর দরজা বন্ধ করল । কিছুক্ষন পরেই এসে পড়বেন eভেঙ্কাইয়া নাইডু । তারাতারি পোষাক টা বদলে নিতে হবে । মিস্টার ওয়াটসন এর বন্ধু আসছেন । a.nএখন তো নাতাশা জেনেই গেছে মিস্টার ওয়াটসন নাতাশার বাবা । অতএব তাঁরই বন্ধুর সম্মানে ityপোষাক তো বদল করতেই হয় । নিজের ঘরে চলে গেল । ইচ্ছা হল কাল মায়ের যে বেনারসি শাড়িটা hডায়েরি র নিচে পেয়েছিল সেটাই আজ পড়বে । শাড়িটা পড়ে পিন আপ করে নিল । হালকা মেক aআপ দিয়ে নিল। ঠোঁটের দিকে চেয়ে সেই দস্যু ছেলের কথা মনে হল । ভাবল , আজ একটু লিপস্টিক lasদেওয়া যেতেই পারে । ngদরজায় বেল বাজতেই ছুটে গেল নাতাশা । এখন ও এমিলির শপিং হয় নি । চারটা বেজে গেছে । aযাবার সময় বলে গেছেন , - নাতাশা কোথাও যাবে না ।বাড়িতে গেস্ট আসবেন । গেস্ট রুম এ তাঁর Bবন্দোবস্ত করবে । দরজা খুলেই নাতাশা দেখল হাতে একখানা অ্যাটাচি নিয়ে এক ভদ্রলোক দাঁড়িয়ে আছেন । পরিচয় দিতেই নাতাশা বুঝল যে কে এসেছেন ! জীবনে এই প্রথম দেখা হলেও মায়ের ছবির সাথে অনেক মিল রয়েছে এঁর । হাত থেকে অ্যাটাচি নিয়ে নিজের পরিচয় দিল নাতাশা । - আমি মালা ওয়াটসন এর মেয়ে নাতাশা ওয়াটসন । আপনার ঘরে চলুন । তারপর কথা হবে । আমার কিছু জানাবার আছে আপনাকে । ওরা আসার আগেই বলে নেই যে মায়ের লেখা একটা ডায়েরি আছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 71 ভেঙ্কাইয়া , মালাকে নিঃশব্দে ঠোঁটে আংগুল দেখিয়ে চুপ করতে বললেন । যা বোঝার নাতাশা বুঝে নিল । এরপর আর কোন গোপন কথা হল না । নাতাশা ছুটে গেল চা আনতে । একেই দেখতে ছুটে এসেছেন তিনি । না । ছেলেকে আর কিছুই বলার নেই । ভেঙ্কাইয়া নাইডু ভাবছেন এ কাকে দেখলাম !! এ তো হুবহু মালা ! আর ছেলে ও একেই দেখেছে ,তাই বলেছে \" পঙ্কিলতায় জন্ম \" হলেও ওকে ই বিয়ে করব নইলে নয় । আসল পরিচয় বুঝি নাতাশা ঐ ডায়েরি পড়েই জেনেছে । তার মানে এমিলি ঐ ডায়েরির কথা জানে না । ওটা নাতাশার কাছ থেকে নিয়ে নিতে হবে । নইলে ওরা জানলে ওটা গায়েব হয়ে যাবে । মালা র ডায়েরি তে অনেক কথাই জানা যাবে । এখন নেওয়া যাবে না । কারণ যে কোন মূহুর্তে এমিলি এসে পড়তে পারে । তবে একটা চিন্তা মাথায় ঢুকে গেল । সেটা হল প্রয়োজনে এমিলি নাতাশার প্রাণ ও নিতে পারে । ছেলের জন্য জেসিকা কে পছন্দ না tকরলে নাতাশার ও প্রাণ নিতে পারে । সুতরাং নাতাশা র কথা কিছুই বলা যাবে না এমিলিকে । যত eতাড়াতাড়ি সম্ভব নাতাশাকে এই বাড়ি থেকে সড়াতে হবে । a.nভাবনাটা চটকে গেল নাতাশার এঘরে প্রবেশ করায়। নাতাশার দু হাতে একটা ট্রে ধরা । তাতে দুটো ityপ্লেট। একটা চায়ের ,আর একটা খাবারের । ভেঙ্কাইয়া নাতাশা কে বললেন। - তুমি জান আমি কে ? hনাতাশা মাথা কাত করে সম্মতি জানাল । মুখে খুশির হাসি । অর্থাত সে জানে । নাতাশা কিছু বলার aআগেই ঘরে ঢুকলেন এমিলি । las- সরি, আমার দেরি হয়ে গেল । Bangভেঙ্কাইয়া নাইডু বলেন। - না না । আপনার কাজ তো আগে । তাই না ? এমিলি - একটু দরকার ছিল । এবার নাতাশার দিকে ফিরে বললেন । - হোয়াই আর ইউ স্টেন্ডিং ডিয়ার ? তুমি তোমার পড়াশুনা কর । যাও । নাতাশার দৃষ্টি আপনা থেকেই ভেঙ্কাইয়া দাদুর দিকে পড়ল । দাদুর চোখে ও ইষাড়া । অর্থাত যাও । যাও বললে কি মন যায় ? যায় না । যেই মা কে নাতাশা হারিয়ে ফেলেছে তার ই মামার আগমন এই বাড়িতে । আনন্দের থেকেও দুঃখ টা বেশি উথলে উঠছে আজ । মা আজ থাকলে কত খুশি হতেন ! রাতের ডাইনিং টেবিল দেখা সেই আপন জনের সাথে । কতো বার যে দাদুর চোখে চোখ পড়ল তার ঠিক নেই । সেই চাহনি অর্থ বহ । নাতাশার মনে হচ্ছিল এই রকমই মা কে যদি ফিরে পেত ! তাহলে আনন্দের সীমা থাকত না সেই দিন । দাদু বেশি কথা বলছে জেসিকার সাথে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 72 যেন জেসিকাই ওঁর নাতনী । নাতাশা কেউ নয় । দাদুর প্রতিটি কথাই শুরু হচ্ছিল জেসিকার দিকে চেয়ে । আর কথাটা শেষ হচ্ছিল নাতাশার দিকে । হঠাৎই নাতাশার মনে হল ,এটায় দাদুর কোন অভিসন্ধি রয়েছে । নিশ্চয়ই এমিলি কে তুষ্ট করতেই প্রশ্ন করছেন জেসিকা কে , আর উত্তর দিচ্ছে নাতাশা । এমিলি তো রাগ করে বলে ই ফেললেন। - নাতাশা , তুমি কেন কথা বলছ? উনি জেসিকার বাবার বন্ধু । ওর ছেলের সাথে জেসিকার বিয়ের জন্য ই এসেছেন। বিয়ের কথা পাকা করতে । দাদু বোধ হয় নাতাশাকে বকায় কষ্ট পেলেন । তাই বললেন - আমার তো গল্প করতে ইচ্ছা করছে তাই আজ সবার সাথেই গল্প করছি । কালই তো চলে যাব । এমিলি - সে কি এত তাড়াতাড়ি ? কয়টা দিন থাকুন । - এখন নতুন সম্পর্ক। আসা যাওয়া তো হবেই । তাজ্জব নাতাশা । ডায়েরি তে উল্লেখ রয়েছে মিস্টার ওয়াটসন এর মেয়ে হলে তারই সঙ্গে , দাদুর ছেলের বিয়ে হবে। শুধু বন্ধুর tসম্পর্ক কে দৃঢ় করতে। মায়ের বাড়ি ছিল কৈলাশ নগরে । মায়ের বাবা আর মা,ওঁরা এখন কোথায়? eকে জানে , এখন ও গঞ্জামে আছে কিনা । ডায়েরির পাতায় গঞ্জাম দেখেছে নাতাশা । ছোট বেলার .nকথা মনে পড়ল । একবার ই কৈলাশ নগরের বাড়িতে গিয়েছিল মা আর নাতাশা । খুব ই ছোট ছিল aতখন নাতাশা । hityবিছানায় শুয়ে ও ঘুম আসছে না নাতাশার । সেই ছেলের কথা মনে হল । অনেকের মুখ একটু একটু aকরে স্মৃতির পাতায় ভেসে উঠছে । বাবার মুখখানা ঝাপসা হলেও মনে পড়ল। কখন যে ঘুমিয়ে lasপড়েছিল নাতাশা ,জানে না । দরজায় জোরে জোরে ধাক্কায় জেগে গেল নাতাশা । এত সকালে কে ডাকছে ! নিশ্চয়ই জেসিকা । কিন্তু জেসিকা তো এতো সকালে ঘুম থেকে ওঠে না । উঠে পড়ল ngবিছানার থেকে । দরজা খুলে দেখল দাদু দরজায় দাঁড়ান । কোন কথা না বলে হাতে একখানা চিঠি aদিয়ে ঈশারায় দেখিয়েছেন কথা না বলে দরজা বন্ধ করতে । তাই করেছে নাতাশা । ঘরে ঢুকে কাগজ Bটা খুলল নাতাশা । এটা ভেঙ্কাইয়া নাইডু কে লেখা একটা চিঠি । পরের চিঠি পড়া উচিত নয় তবুও নাতাশা পড়তে শুরু করল । যাকে লেখা এই চিঠি তিনিই পড়তে দিয়েছেন অতএব অমান্য করা যায় না । চিঠির হাতের লেখা খুবই সুন্দর । To. মিস্টার বেঙ্কাইয়া নাইডু । শ্রীচরনেষু, তোমার এখানে আসার খবর পেয়েছি ।ইতিমধ্যেই আমি এখানকার জেলখানার সমস্ত কয়েদীদের লিস্ট সার্চ করেছি । কিন্তু সেখানে মালা ওয়াটসন এর কোন নাম পাইনি। সমস্ত জেল www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 73 সুপার দের সাথে কনট্যক্ট করেছি । যে কয়জন উত্তর দিয়েছেন তাদের মধ্যেও মালা ওয়াটসন এর নাম নেই । তাই ঠিক বুঝতে পারছি না । কোন পথে যাব ! তোমার নাতনি তো 'ল' পড়ছে । ওকে ও চিন্তা করতে বল । আর আমার সাথে যেন আজই দেখা করে । বিকেল চারটে তে । আমার ঠিকানা চিঠির শেষে পাবে । যেন সঙ্গে কারো কে না আনে । দরকারি কাজ আছে তাই একা আসার কথা বলছি । ইতি - চিঠি পড়ে তাজ্জব নাতাশা । এ আবার কেমন চিঠি! যাকে লিখেছেন, তার নাম আছে । অথচ , সম্পর্কের উল্লেখ নেই । আবার যিনি লিখেছেন তার ও নামের উল্লেখ করেনি । চিঠিটা ভাজ করে হাত ব্যাগ এ চালান করে দিল । আজ 'ল' কলেজে তাড়াতাড়ি যেতে হবে । আজই রেজাল্টের দিন । ভালই হয়েছে সকালে উঠে tপড়েছে নাতাশা । আজ জেসিকার টম বয় ও আসবে । জেসিকার জন্য ই আসে । তবুও সেই মেয়ে ঐ eছেলের কাছে যায় না । দূর থেকেই জেসিকায় প্রাণ ঢেলে বসে আছে । কিন্তু জেসিকার তল ও পায় না .nবেচারা ! নাতাশার বড় কষ্ট হয় টম এর জন্য । জেসিকা অর্থ বোঝে । অর্থ মানে মাল কড়ি । যা aথাকলে সমাজে কদর করে সবাই । জেসিকা ও ওর মায়ের মতো স্ট্যাটাস বোঝে । সেই বুদ্ধি ই তো ityএতদিন দিয়ে এসেছেন মেয়ে কে । সে পথেই চলেছে । এটা বোঝেনি ,যে টাকাই জীবনের সব কিছু hনয় । এর থেকেও কিছু দামি জিনিস আছে। তা হল অন্তরের ভালবাসা । ভালবাসার থেকে দামী aজিনিস আর কিছুই হয় না । lasএই দিন টা প্রতি সপ্তাহেই আসে । নাতাশা জানে টম বয় জেসিকাকে খুব ভালবাসে । নাতাশা চায় টম ngঅনেক উঁচুদরের ব্যবসায়ী হোক যাতে জেসিকার মন পায় । জেসিকার মন উরু উরু । আজ এক aজনের সাথে তো কাল আর এক জনের সাথে । কি যে চায় জেসিকা তাই জানে না । তাই ওর মা ওর Bকানে মন্ত্র দিচ্ছেন । - জাঁদরেল পাত্র জোগার কর । যাতে টাকায় ঘর ভরে যায় । এই সব ভাবতে ভাবতেই কাজে হাত চালিয়েছে । যাতে তাড়াতাড়ি কলেজ এ ঢুকতে পারে । কলেজে গিয়েই দেখল বিশাল নোটিশ বোর্ড । বুক দুরু দুরু করছে কি হবে । ভাল রেজাল্ট হবে তো ? একে একে সবার নাম দেখছে । তাহলে কি নাতাশার নাম নেই । মায়ের জন্য কি কিছুই করতে পারবে না ? তখনই চোখে পড়ল নাতাশার নাম । এত সুন্দর যে লেখা হয় নাতাশার নাম তা আগে জানা ছিল না নাতাশার । সাত নম্বরে নাতাশার নাম । মনে হল মা সত্যিই বেঁচে থাকলে কি আনন্দ ই না পেতেন আজকে। নাতাশা একটা অটো কে দাঁড় করাল । তারপর বলল - গোপালপট্টনম যাবে ? ড্রাইভার রাজি হতে নাতাশা উঠে বসল অটো তে। অটো চলেছে জোর কদমে । নাতাশার মন ও আনন্দে ছুটে চলেছে । আজ তার আনন্দের সীমা নেই । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 74 মন কোথা থেকেই কোথা চলে যাচ্ছে । যতক্ষণ না ভোকাট্টা হয় ঘুড়ির মত। ভাবছে সার্টিফিকেট পেলে তবে যোগ দেবে ওকালতি তে । তবে এখন কারো অধীনে কাজ করতে হবে । মনে মনে বলল, মাগো তোমার মনের ইচ্ছা পূরণ হোক । তুমিও তো চেয়েছিলে পড়াশুনা করতে তোমার ইচ্ছা আজ সফল করল তোমার মেয়ে ।তোমাকে সে খুঁজে বার করবেই । আজ এত আনন্দের দিন ! ইচ্ছা করছে কার ও সঙ্গে ভাগ করে নিতে । কিন্তু নাতাশার তো কেউ কোন আপন জন নেই । কার সাথে মনের কথা বলবে। জেসিকা ছাড়া ওর আপন বলে কেউ নেই । হঠাৎই এক ঝলক একখানা মুখ ভেসে উঠল চোখে। সে চোখের তারায় ছিল বিদ্যুতের দ্যুতি । যে বলেছিল - আই লাভ ইউ । কি সব ভাবছে নাতাশা । তাকে কি ভালবেসে ফেলেছে নাতাশা ! তবে হঠাৎই তার কথা কেন মনে এল !! tতার পর ই মনে হল । যত্তো সব বাজে ছেলে । এরা আবার ভালবাসার কদর জানে নাকি । আবার eদেখা হলেও ওকে পাত্তা দেবে না নাতাশা ওয়াটসন । সে একজন ভবিষ্যতের নাম করা উকিল হবে । .nঐ সব ল্যুজ ক্যারেক্টার ছেলে কে সে পাত্তাই দেবে না । ভাবতে ভাবতেই সেই রাস্তায় চলে এসেছে । aনেমে দাঁড়াল অটো থেকে । অটোর ভাড়া মিটিয়ে । চিঠিটা বার করল নাতাশা । ঠিকানাটা একেবারেই ityমিলে গেছে। ছিমছাম সুন্দর একখানা দোতলা বাড়ি । গেট দিয়ে ঢুকে সদর দরজায় বেল বাজাল hনাতাশা । বাড়ান্দায় কারোকে দেখা গেল না । নাতাশা ভাবছে বাড়ি তে আসতে বলে সে কি বেড়িয়ে aগেল বাইরে ? তখনই একটি চোদ্দ পনের র ছেলে দরজা খুলে বলল। las- ভিতর মে আইয়ে জি । ngঐ ছেলেটির পিছু পিছু ওপরে একেবারেই দোতলায় উঠে গেল নাতাশা । এবার একটা পর্দা ঘেরা aঘরে তাকে বসান হল । নাতাশা ভেতর দিকে একটা আরামপ্রদ চেয়ার এ হেলান দিয়ে বসল । মিনিট Bখানেক পরে যিনি ঘরে ঢুকলেন তাকে দেখে নাতাশা লাফ দিয়ে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়াল । এবার দরজা র দিকে এগোল বাইরে যাওয়ার জন্য । কিন্তু সে পালাবে কি করে ? দরজা ধরে সেই মানুষ টা তো দাঁড়ান । মুখে তার দুষ্টমীর হাসি । সেই চোখে চোখ মেলাতে পারে না নাতাশা । চোখ নামিয়ে নিল নাতাশা । সেই মানুষটা বললেন - ভয় নেই । বিয়ে না করে আমি বস্ত্র হরণ করবো না । চুপ করে বস , যেখানে বসে ছিলে । তাও নাতাশা দাঁড়িয়ে রইল দেখে সেই পুরুষ আবার বলল - তুমি কিন্তু আমাকে এনকারেজ করছো তোমাকে স্পর্শ করতে । দ্যাট টাইম আই মাস্ট নট কন্ট্রোল মাইসেল্ফ । ভয়ে নাতাশা যেখানে দাঁড়িয়েছিল সেখানেই একটা চেয়ারে বসে পড়ল । ওর ঐ বসার ধরণে সেই মানুষ টা । হাঃ হাঃ করে দম ফাটা হাসি হাসল । যেন জীবনে এমন মজার অনুভূতি কখনও হয়নি । নাতাশা কে বললেন - সোজা কলেজ থেকে আসছ তো ? উত্তরে মাথা নেড়েছে নাতাশা । অর্থাত হ্যাঁ । উত্তরে ডাক পড়েছে সেই উঠতি বয়সের ছেলের । অর্ডার হয়েছে কিছু খাবারের । নাতাশার আপত্তিতে শুধুমাত্র চায়ের ফরমায়েশ হয়েছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 75 পর্ব-৫ শোনো, তোমাকে প্রথমেই আমার কিছু কথা বলা দরকার । আমার যে পরিচয় তুমি প্রথম দিন পেয়েছ ,সেটা আমার আসল পরিচয় নয় । মেয়ে দেখলে তাঁর পিছু পিছু ঘোরা আমার চরিত্র নয়। আমার পেশা ওকালতি । আমাকে এখানে সবাই অ্যাডভোকেটএস.এন বলে জানে । তুমিও এস.এন বলতে পার । বিশেষ একটা কাজে ঐ কলেজ এ কয়েক দিন যেতে হয়েছিল । তোমার মতো একজন সুন্দরী মেয়ের দিকে নজর পড়া অস্বাভাবিক নয় । তোমার তখন কি অবস্থা, তা দেখেই আমি তোমাকে বাঁচাতেই সেদিন ঐ কাজটা করেছিলাম যাতে ওরা তোমাকে রোজ ঘিরে না ধরে । বাট ইউ আর মোস্ট বিউটিফুল । আই এনজয়েড দ্যা সিচুয়েশন । বিশ্বাস কর আর কোন মেয়ে কে ঐ ভাবে স্পর্শ করিনি । তবে হ্যাঁ , মিথ্যাচার করব না আমার ও ভাল লেগেছিল । ব্যস । ঐটুকুই । কথা শেষ হতে গভীর ভাবে চেয়ে থাকে নাতাশার দিকে । নাতাশার মাথা আপনা থেকেই নত থেকে আরও নত হল । etআবার বলে সেই মানুষ টা - আমি ওদের বলেছি যে আমি তোমাকে ভালবাসি । শিগগিরই আমাদের .nবিয়ে হবে । এ সবই তোমাকে বাঁচাতেই বলা । তুমি আবার সত্যিই ভেবে বসো না যেন । aঅ্যাকচুয়্যালি আমার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে । তাও একটি সুন্দরী মেয়ের সাথে । hityএবার নাতাশা মুখ তুলে বলল। - কি জন্য আমাকে ডেকে পাঠিয়েছেন ? lasaএস.এন বললেন- তোমার মায়ের কেস টার দায়িত্ব আমার ওপরে রয়েছে । সেই জন্য ই মাঝে মাঝেই তোমাকে আসতে হবে আমার কাছে। angনাতাশার নজর সেই চোখে । কিন্তু নাতাশার এ কী হল ? যে মানুষ টার বিয়ের ঠিক হয়ে আছে এক Bসুন্দরীর সাথে তবু ও তার চোখে চোখ পড়লে শরীরে একি আনচান ! এমন তো হবার কথা নয় ! নাতাশা বলল- আমার কাছে মায়ের লেখা একটা ডায়েরি আছে । সেটা কি আপনাকে দিয়ে দেব ? এবার হৈহৈ করে উঠলেন সেই মানুষটা । - আরে না না ডায়েরি দিয়ে কিছু হবে না । তোমাকেই আসতে হবে । নাতাশা- আমিও তো কিছুই জানি না । এস.এন- 'তা হলেও, তুমি ,তোমার জ্ঞান হওয়ার পরের সব কথা বলবে আমাকে । আমি একটু একটু করে সব শুনতে চাই । তা ছাড়া তোমার তো এখন কলেজ শেষ । এখন থেকে আমার সাথেই কাজে লেগে পড় । আমার অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসাবেই । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 76 চা এসে যেতে কথা কমেছে চায়ের অজুহাতে। কিন্তু সেই মানুষটার গভীর দৃষ্টির শরাহত নাতাশা । এস. এন বললেন- তোমার কি একটুও মনে পড়ে না তোমার মা কে? নাতাশা - একটু একটু স্মৃতি আছে , তাও পরিস্কার নয় ,ধোঁয়াসা । এস.এন- তিনি কি তোমার মতোই সুন্দরী ছিলেন? সে কথার উত্তর দিতে পারে না নাতাশা । মুখে তার রক্তোচ্ছাস । সব রক্ত যেন নিমেষেই জমা হচ্ছে মুখে । নাতাশার চোখ যায় সামনে বসা মানুষটার চোখে । নাতাশা কিছুতেই তার দিকে চোখ ফেলতে পারে না । এতো লজ্জা তার কোথা থেকে জড়ো হল নাতাশার শরীরে ! কথা ঘুরিয়ে ফেললেন সেই মানুষটা । নাতাশা ভাবলো ,যাক্ বাঁচা গেল । - চা টা গরম ছিল তো ? এবার নাতাশা স্বাভাবিক হল । বলল- হ্যাঁ। ঠিক ছিল । tএস.এন বললেন- কাল থেকেই জয়েন করছ । আমার সাথে আমার সহকারি হিসাবেই eতোমার কাজ আরম্ভ হবে । .nনাতাশা- মায়ের কেস টা ? aএস.এন- না না । শুধু তোমার মায়ের কেস নয় । আরও কেস এর তদন্ত চলছে । বি স্ট্রং । hityউত্তরে শুধুই মাথা নেড়েছে নাতাশা । অর্থাত ঠিক আছে । lasaএস. এন- কাজের সময শুধু কাজের কথাই মনে রাখবে । এখানে কোন স্ত্রী পুরুষ ভেদ নেই । তুমি কিসে করে এসেছ ? ngনাতাশা- অটো করে এসেছি । aএস. এন- ঠিক আছে । চলো তোমাকে পৌঁছে দেই । Bনাতাশা- না না । আমার কাছে টাকা আছে । এস.এন- ঠিক আছে ,কাল থেকেই তাহলে আমার সাথে তুমি কাজ করছো । বস, আমি আসছি । বলে ভেতরের ঘরে ঢুকলেন । একটু পরেই ফিরে এলেন । নাতাশার দিকে একটা চেক এগিয়ে ধরলেন । এই নাও অ্যাডভান্স, তোমার প্রথম মাইনের । নাতাশা দ্বিধা জড়িত কন্ঠে বলে ,- এখন ও তো আমি কাজ করি নি ! এস.এন- তাতে কি হল ? এটা সবাই কে ই দিতে হয় । তাই তোমাকে ও দিচ্ছি । নাও ,অলওয়েজ সিস্টেম শুড বি মেন্টেইন্ড । আমি ক্লিয়ার থাকা পছন্দ করি । এবার নাতাশার আনন্দে উচ্ছসিত হাসি দেখা গেল । উঠে দাঁড়ালেন এস. এন । নাতাশা ও উঠে দাঁড়াল । একেবারে পাশাপাশি দুজনে । নাতাশা প্রায় তাঁর কাঁধ ছুঁই ছুঁই । চোখ ফিরিয়ে নিল নাতাশা । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 77 ফোন এ কার সাথে কথা বললেন এস.এন । নিচে গাড়ি দাঁড়িয়েছিল । নাতাশা অটোকে হাত দেখাতে ই বাঁধ সাধলেন এস.এন । গাড়ির দরজা খুলে দিলেন । বললেন- গাড়ি তে ওঠো । গাড়ি ছাড়তে হাত নাড়লেন নাতাশা কে । বিছানায় শুয়ে ও নাতাশা ভুলতে পারছে না এস.এন কে । এমন সুপুরুষ স্বামী যে মহিলার ভাগ্যে জুটবে তিনিই ভাগ্যবতী । মন বলল, নিজেকে সামলাও নাতাশা । ঐ ছেলের জন্য ওর বাগদত্তা অপেক্ষা করছে । না এসব ভেবে সময় নষ্ট করা চলবে না । মায়ের খোঁজ করতে হবে । কোথায় গেলেন মা ? ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়েই পড়েছিল নাতাশা । হঠাৎই জেসিকার গলা - নাতাশা , ঘুমিয়ে পড়েছিস ? নাতাশা দরজা খুলে বলল - এতো রাতেও তোর কথা শেষ হয় না ? etজেসিকার- আরে আজ একটা মজা হয়েছে । আমার বিয়ের কথা হচ্ছিল । মিস্টার ভেঙ্কাইয়ার .nছেলের সাথে । aনাতাশা - সে তো ভালোই খবর । ওরা বড় লোক তাই তো তোর মায়ের ইচ্ছা । ityজেসিকা - আমার মনে হচ্ছে যদি আমাকে ভাল না বাসে ? তখন কি হবে? hনাতাশা- তোরা তো ভালোবাসা চাস না । শুধুমাত্র টাকার ই দাম দিস তোরা । aজেসিকা- কি করবো বল তো নাতাশা ? lasনাতাশা - কি বলব বল? টম তোকে চায় । তুই তো ওকে পছন্দ ও করিস না । আজ আর না । তা ছাড়া , একটা কাজে কাল থেকেই জয়েন করব । ngজেসিকা - ওমা, বলিস নি তো ? aনাতাশা - আমি ই জানতাম না । তা তোকে কি করে বলব । এখনই আন্টি কে বলিস না । Bআমি পরে বলব । এবার যা । আমার দেরি তে গেলে চলবে না । জেসিকা চলে যেতে নাতাশা দরজা বন্ধ করে বিছানায় শুয়ে পড়ল । ঘুম আসছে না । সেই মানুষটার কথা মনে পড়ছে । এত প্রখর দৃষ্টি যে তাঁর চোখে চোখ ফেলা যায় না । আর ওসব ভাববে না নাতাশা । এখন শুধুই মা কে খুঁজে বার করা । পৌঁছতে এগারো টা বেজে গেল । এস.এন রেডি হয়ে অপেক্ষায় বসে আছে । নাতাশা ঘরে ঢুকতেই বললেন- চলো। নাতাশা- কোথায় ? এস.এন- অফিস। তুমি কি এটাই আমার অফিস মনে করেছ নাকি ? রাস্তায় বেড়িয়ে দেখল গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে । ড্রাইভার দরজা খুলে দিতে সেই মানুষটা বললেন- তুমি আগে ওঠ। নাতাশা বসতেই তিনি নাতাশার একেবারেই গা ঘেসে বসলেন । নাতাশার শরীরে কিসের উন্মাদনা ! এ অনুভূতি সম্পূর্ণ অজানা । বাঁয়ে ফিরে কথা বলতে পারছে না । সেই চোখে মৃদু হাসি । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 78 নাতাশা ভাবে যার বিয়ে অন্য মেয়ের সঙ্গে ঠিক হয়ে আছে ,তাঁর ঠোঁটে কি এই হাসি খেলার কথা ! কি জানি এ কেমন তর পুরুষ । যত যাই করুক নাতাশা কোন অশালীন আচরণে সারা জাগাবে না । নাতাশা একটু সরে বসতেই সেই মানুষটা বলল। - তোমার অসুবিধা হচ্ছে না তো ? সামনে তাকিয়ে নাতাশার উত্তর । - না ঠিক আছে । বললেও মাঝে মাঝেই চোখে পড়ছে তাঁর চোখের দুষ্টমী হাসির ঝলক । নাতাশা - আমরা কোথায় চলেছি ? আপনার অফিস কি এদিকে ? ঠিক তখনই গাড়ি কোর্টের সামনে কিছু টা গিয়ে তারপর একটা বড় বিল্ডং এর পাশেই দাঁড়াল । ড্রাইভার দরজা খুলে নেমে এল পেছনের দরজার দিকে । এবার নেমে এলেন সেই মানুষটা । তাঁর এখন চেহারা ছবিই আলাদা । কে বলবে এই সেই মানুষ যে একটু আগেই দুষ্টমী করে হাসছিল । এবার নাতাশার মগজ কে নাড়া দিল দরজার ওপরের বোর্ড খানা । কালো বোর্ড এ সাদা হরফে লেখা - অ্যাডভোকেট ডক্টরেট এস.এন। নাতাশার কাঁধে হাত দিয়ে ঢুকলেন এস.এন । চার দিকে tবুক সেল্ফ এ বই একেবারেই ঠাসা । দেখে মনে হচ্ছে এসব আইনের বই । মাঝখানে একখানা eবড় গদি মোড়া কালো চাকা ওলা চেয়ার । তার ই বাঁ পাশে লাগোয়া আর একখানা গদি মোরা .nচেয়ার । নাতাশার বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে খুশি সেই মানুষটা । নাতাশার দু ' কাধে দুহাত দিয়ে aকাছের করে টেনে নিলেন। তারপর পাশের চেয়ার দেখিয়ে বললেন- ity- দিস ইজ ওনলি ফর ইউ । এই চেয়ার এ কেউ বসবে না । নাতাশার লজ্জায় রাঙা মুখ দেখে hবললেন। a- এত লজ্জা পেলে কাজ করবে কি করে ? তোমাকে একজন সফল অ্যাডভোকেট হতে lasহবে । সো, বি স্ট্রং । কাজের জায়গাতে শুধুই কাজ । নাউ গো থ্রু দ্যা ফাইল । সামনে তোমার মায়ের ফাইল । লাল ফিতে দেওয়া আছে। । angফাইল এর শুরু থেকেই পড়তে শুরু করল নাতাশা অনেক কিছুই তো অজানা নাতাশার ! Bতবে এখানে নাগাম্মার কোন কথার উল্লেখ নেই । সে কথা এস.এন কে বলল নাতাশা । - একটা দরকারি কথা বাদ পড়ে গেছে । এস.এন ওর দিকে ফিরে বললেন- কি ,বাদ পড়েছে? নাতাশা- নাগাম্মার কথা । নাগাম্মা মায়ের খুব প্রিয় ছিল । আমার দেখাশোনা ও এই নাগাম্মা করতো । মায়ের শরবতে বিষ মেশাতে দেখেছিল নাগাম্মা । নাগাম্মা ছুটে এসে মা কে সে কথা বললেও বাবার বিশ্বাস হয় নি। যে ইংরেজ মহিলা এমনটা করতে পারে ! এস.এন- সে কি ? নাতাশা - হ্যাঁ। বাবার ধারণা ছিল ব্রিটিশ রা মিথ্যা বলেনা। ওরা খুব সৎ । তাই মায়ের সরবৎ টা বাবা খেয়ে নেন । বলতে বলতেই নাতাশা ভেঙে পড়ে। তা দেখেই এস.এন বললেন - ইট ইজ ওকে । সব ঠিক হয়ে যাবে । তাহলে তো নাগাম্মার ঠিকানা ও চাই । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 79 নাতাশা- ওটা মা , ডায়েরি তে লিখে দিয়েছিলেন । এস.এন- তাই নাকি তাহলে তো অনেক টা এগিয়ে গেল । নাতাশা- ডায়েরি টা আমার মাদ্রাজের দাদু বলেছিলেন সাবধানে রাখতে । কিন্তু আমি বাড়ি থাকি না এখন। তাই যে কোনও মুহূর্তে আমার ঘর সার্চ করতে পারে এমিলি । মাদ্রাজের দাদু কথাটায় মুখ ভঙ্গীটা হল দেখার মতোই । একটু পরেই এস.এন বললেন- এমিলি কোন সময়টা বাড়িতে থাকে না ? নাতাশা- সন্ধ্যা সাত টা নাগাদ বেড়িয়ে যায় । এস.এন- চল, আজই তোমাদের বাড়ি যাই । আমাকে তুমি ডায়েরি টা দিয়ে দিও। সম্মতি জানিয়েছে নাতাশা । কিন্তু একটা দ্বিধা রয়ে গেল । তারপর কথাটা বলেই ফেলল tনাতাশা । - কিন্ত যদি আপনাকে দেখে কিছু সন্দেহ করে ? এস.এন- ঠিক আছে । কাল eঅফিস যাবার সময় ডায়েরি সাথে নিয়ে যাবে । তোমার আর এখানে থাকা ঠিক নয় । সন্দেহ .nহলে তোমাকে খুন ও করতে পারে । নাতাশার চোখের ভয়ের ছায়া দেখে এস.এন নাতাশার aপিঠে হাত দিয়ে বললেন। - ভয় নেই, আমি আছি । বি স্ট্রং । সকালে আমি আসবো তোমাকে ityনিয়ে যাব তোমার মায়ের বাবার বাড়ি কৈলাশ নগরে । ওখানে একজন মহিলা আছেন ঘর hদেখাশোনার জন্য । lasaনাতাশা- কিন্তু , জেসিকা !! ওকে ছেড়ে আমি কি করে যাব ? এস.এন- অ্যাবসার্ড!! কে জেসিকা ? ngনাতাশা- এমিলির মেয়ে । ও আমাকে ছেড়ে থাকতে পারে না । এস.এন এর আবার সেই aদুষ্টমী হাসি । বললেন - তোমার বিয়ে হলে ওকে নিয়ে বরের পাশে শোবে নাকি ? নাতাশার Bমুখে আবার রক্তোচ্ছাস । এবার এস.এন একেবারেই গম্ভীর । বললেন- যা বলছিলাম। এখন আমাদের হাতে সময় কম। যে ভাবেই হোক ঐ নাগাম্মার কাছে পৌঁছতে হবে। নাতাশা- কিন্তু, আমি বের হলে এমিলি আন্টি তো জেনে যাবে । এস.এন- তাই তো বাড়ি ছাড়তে বলছি । আমাকে তুমি পুরোপুরিই বিশ্বাস করতে পার । তুমি এনকারেজ না করলে আমি তোমাকে টাচ্ করবো না । নাতাশা- কিন্তু , আমি তো চিনিই না কোথায় আমার মায়ের বাবার বাড়ি ! এস.এন- তাতে কি? তোমার মায়ের বাবা ও মা গঞ্জামে থাকেন । এখানকার বাড়িতে কেয়ারটেকার আছে । বাড়ির দেখা শোনা করেন । কাল সকাল দশটায় তোমার বাড়ির গেট এ গাড়ি থাকবে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 80 সারা রাত চোখের পাতা এক করতে পারে নি নাতাশা কারণ এই রাতের মধ্যেই সব কাজ সেরে রাখতে হবে। শুধু তাই নয় এত টেনশন যে ঘুম আজ আর আসবে না তাই ভাবছে নাতাশা । আলো না জ্বালিয়ে ছোট্ট টর্চ দিয়েই গুছিয়ে নিচ্ছে সব দরকারি জিনিস পত্র । মায়ের ভাল ফটো কয়েক টা । ওর নিজের সার্টিফিকেট। মায়ের বিয়ের বেনারসী শাড়ি। আর মায়ের ব্রাইডাল ড্রেস ,যেটা পড়ে মায়ের বিয়ে হয়েছিল । ইচ্ছা করেই স্যুটকেস জাতীয় কিছুই নিল না । কারণ তাহলে নাতাশা ধরা পড়ে যেতেই পারে । তাই দু'খানা সাইড ব্যাগের ভেতরে সব ঢুকিয়ে নিল । হঠাৎই নজরে পড়ল পুরোন দিনের একখানা ফটোতে নাগাম্মার ছবি ,কোলে নাতাশা । কম বয়সের নাগাম্মা । পরিস্কার মুখ খানা বোঝা যাচ্ছে । ব্যাগে ঢুকিয়ে নিল ছবি টা । খুব টেনশন হচ্ছে । বের হবার সময় যদি হাতেনাতে ধর পড়ে যায় ! তখন ! ঘড়ি দেখল নাতাশা । মাত্র ভোর চার টা। না । নাতাশা আর অপেক্ষা করতে পারবে না । সেই মানুষটার কাছে সব পৌঁছে দিয়ে নাতাশার ছুটি । ব্যাগ দুটো হাতে tনিয়ে দরজা বাইরের থেকে টেনে দিল নাতাশা । এঘরে কোন দামি জিনিস নেই । এক বারের eজন্যও পিছু ফিরে দেখল না ওর জন্ম স্থান। যেখানে ওর মা ও বাবা ছিলেন । হারা উদ্দেশ্যেই .nচলল নাতাশা । ityaরাস্তাঘাট একদম ফাঁকা। কিছু টা যেতেই একটা অটো পাওয়া গেল । সেই অটো ধরেই পৌঁছে hগেল এস.এন এর বাড়িতে । যেখানে প্রথম দিন এসেছিল নাতাশা । lasaবাড়ির নিচের দরজায় কলিং বেল বাজতেই বিছানা থেকে নেমে জানালা দিয়ে দেখলেন নাতাশা দাঁড়িয়ে আছে । । তীর বেগে নিচে নেমে গেলেন এস.এন । দরজা খুলে নাতাশাকে ngভেতরে টেনে নিলেন । নাতাশা ভেতরে ঢুকবে কি , তার আগেই এস.এন এর বুকে আছড়ে aপড়ল । এ কান্না বোধ হয় নাতাশার জীবনের প্রথম কান্না । এ কান্না কোথায় রাখবে নাতাশা B!! ওর তো আপন আর কেউ নেই ! এক ছিল জেসিকা । সেই জেসিকা কে ও ছাড়তে হল । এস.এন বুঝি এমন অবস্থায় কখনও পড়েন নি । কি ভাবে সামলাবেন এই মেয়ে কে ? তাও আবার যেমন তেমন মেয়ে নয় । একেবারেই ডগ্ মগে মেয়ে । এমনি ই জাপ্টে ধরে কাঁদছে বুকের পরে । এস.এন ভাবছেন, আরে বাবা আমি কি পুরুষ মানুষ নই ? আমার কি ইচ্ছা করছে না তোমাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দিতে ? কিন্তু তা আমি হতে দিতে পারি না । ওটা একটা রোগের সামিল। একবার এগুলে আর পিছুন যায় না । তাই কোন রকমে ,ঐ মেয়ে কে জড়িয়ে ওপরে ঘরে এনে বসালেন । ব্যাগ দু'খানা ওর হাত থেকে নিয়ে রেখে দিলেন এক পাশে । কিছু জিজ্ঞেস করার এটা সময় নয় । তারপর এক গ্লাস জল দিলেন নাতাশাকে। নাতাশার মাথায় হাত রেখে বললেন- তুমি এখানে একটু রেস্ট নাও । আমি আসছি। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 81 কিছুক্ষণ পর যখন সে ঘরে ঢুকেদেখলেন নাতাশা তখন গভীর নিদ্রায় আচ্ছন্ন । আজ নাতাশার পড়নে ভেঙ্কটগিরি সিল্কের শাড়ি । হাল্কা বেগুনি রংয়ের সাথে আকাশির মিস্রন । পরম নির্ভরযোগ্য জায়গাতে যেন সে ঠাঁই পেয়েছে । এস.এন এর মুগ্ধ দৃষ্টি । এক ফাঁকে কাজের ছেলে টাকে তিন জনের ব্রেকফাস্ট করতে বললেন । আবার এসে বসলেন ঐ মেয়ের মুখোমুখি চেয়ারে। কষ্ট হচ্ছে এস.এন এর । ছোট বেলার থেকেই কারো ভালবাসা পায় নি এই মেয়ে । এর থেকে আর দুঃখি কেউ নেই । হঠাৎই ধরমর করে উঠে বসল নাতাশা । চোখে তার এক রাশ লজ্জা ! যেন খুব অন্যায় করে ফেলেছে সে। এস.এন বললেন - ভাল লাগছে এখন? তোমার অত দ্বিধা করার কিছু নেই। ফিল্ এট্ ইজ্। আজ আমাদের অনেক কাজ আছে। সুতরাং বি স্টেডি। খাবার টা খেয়ে নাও। তারপর আমাদের কাজ শুরু হবে । পর্ব-৬ tএস.এন এর হাতে নাতাশার মায়ের লেখা ডায়েরি । পড়ে চলেছেন নিবিষ্ট মনে । এখন দেখে কে eবলবে যে এই ছেলে সেই ছেলে যে দুষ্টমীর হাসি হাসতে পারে । এরই প্রেমে কি পড়ে গেছে নাতাশা .n! এর থেকে নিজেকে ফেরাতে পারবে না ? আর কোন মুখে নাতাশা তাকে বলবে \"আমি তোমাকে aপ্রথম দিন থেকেই ভালবাসি\"। হঠাৎই সেই মানুষটা তার দিকে ফিরল । মুখে একটু হাসি এসেই ityমিলিয়ে গেল । যেন বললেন। \" আহা চেয়ে থেকে আমাকে ডিসটার্ব করো না \" । আপনার থেকেই hমাথা নত হয়ে গেল নাতাশার । মনে পড়ে গেল সেই যেদিন প্রথম একমাঠ লোকের সামনে ওকে aজড়িয়ে ধরে অপদস্থ করেছিলেন তখন কিন্তু নাতাশার মনটা ছিল অন্য । কি করে যে নাতাশা ঐ lasমানুষটাকে মন দিয়ে দিল তা নাতাশা ও জানে না । হয়তো নাতাশাকে রক্ষা করতে ওটা করেছিল বলায় নাতাশা তার মন ঐ মানুষটা কে সঁপে দিয়েছে । চিন্তাটা থমকে গেল তাঁর গলার আওয়াজে । - ngকি ভাবছ ?তখন থেকেই বলছি শুনতে পাচ্ছ না? a- বলুন । B- আর কি বলব? এবার ওঠো । আজ আর তোমার অফিস যেতে হবে না । তোমাকে তোমার মায়ের বাবার বাড়িতে রেখে আমি আমার চেম্বার এ যাব । নাতাশা- ওখানে কি কেউ থাকে? এস.এন - আপাতত একজন কেয়ার টেকার আছেন । তাকে জানিয়ে দিয়েছি যে আমরা আসছি । গাড়ি ছুটে চলছে কৈলাশ নগরের দিকে । পথে শপিং মল এ গাড়ি দাঁড়াল । ড্রাইভার গাড়ির দরজা খুলে দিল । এস.এন বললেন- নাম । তোমার জামা কাপড় কিছু লাগবে না ? নাতাশার মনে হল , সত্যিই তো এসব কিছুই তো ভাবেই নি । এক কাপড়ে চলে এসেছে সে । লজ্জা হল নিজের এই ভুলের জন্য । গাড়ি থেকে নেমে শপিং মল এ ঢুকল দুজনেই । শাড়ি ক'খানা বেছে নেন এস.এন । তার পর বলেন। - এর পরের গুলো ও কি আমাকে নিতে হবে ? www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 82 ঐ মানুষটা কি বলতে চাইছেন তা বুঝেই নাতাশা দূরের কাউন্টারে চলে গেল । সেখানেই যা যা দরকার তা প্যাকেট করে দিতে বলল নাতাশা । সাঁ সাঁ করে গাড়ি চলেছে কৈলাশ নগরের দিকে। ন্যাশনাল হাই ওয়ে দিয়েই চলছে গাড়ি । ডানে সবুজ পাহাড়ের সাড়ি চলেছে । এবার কৈলাশ গিরি র নিচে পাহাড়ের দিকে গাড়ি উঠতে লাগল । কিছুটা গিয়েই গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ল । নাতাশার মনে হল এ জায়গা ড্রাইভার এর পরিচিত । তাই নির্দেশ এর অপেক্ষা করতে হল না । প্রশ্ন মনেই থেকে গেল। সুন্দর একটা দোতলা বাড়ির সামনেই গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে । ভেতর থেকে একজন মহিলা বেড়িয়ে এলেন । বেশ শক্ত পোক্ত চেহারার । মিশ কালো গায়ের রং তার । - রা এন্ডি । - বলে ভেতরে নিয়ে গেলেন ওদের । সেখান থেকে সোজা দোতলার ঘরে । এ ঘর নাতাশার জন্য ই সাজান হয়েছে । পাশের ঘর মালিক আর মালকিনের । এস.এন বললেন- আমি আর বসব না । সন্ধ্যা বেলায় একবার আসব । এবার নাতাশার দিকে ফিরে বললেন। - ফিল অ্যাট tইজ । এটা তোমার ই । মানে তোমার মায়ের । .neসন্ধ্যা পার হয়ে গেলেও যার অপেক্ষায় থেকেছে নাতাশা ,তিনি আসেন নি । সারারাত ঘুম আসেনি aনাতাশার । একে নতুন জায়গা । তায় বাড়ি থেকে না বলে উধাও হয়েছে । কি জানি এমিলি আবার কি ityকরে ! ahরাত টা ঘুমে জাগরণে কেটেছে । তাই খুব ভোরেই বিছানা থেকেই উঠে পড়েছে । আজ হয়তো নিতে lasআসতে পারেন এস.এন । তাই আগে থেকেই তৈরি থাকা ভাল । ব্রেকফাস্ট করেই স্নান সেরে নিল নাতাশা । নতুন যে শাড়ি গুলো পছন্দ করেছেন এস.এন, সেই শাড়ি থেকেই একটা বেছে পড়ল ngনাতাশা । হালকা গোলাপী রং সাদা ফুলের ছাপা শাড়ি । তার ই সঙ্গে গোলাপী হাই নেক ব্লাউজ । aঘুড়িয়ে ফিরিয়ে আয়নায় নিজেকে দেখল নাতাশা । সেই মানুষটার চোখে ওকে কেমন লাগবে তা Bঅনুভব করার চেষ্টা করল । এরপর ঝুল বারান্দায় দাঁড়াল অপেক্ষায় । অপূর্ব কৈলাশ গিরিরেঞ্জ । এই যেন প্রথম দেখছে । এতদিন শুধুই সমুদ্র দেখে এসেছে । এটা ঝুল বাড়ান্দা । এমন একটা জায়গা যে এখানে বসে দিন কেটে যেতে পারে । এটাকে মাল কোন্ডা বলে সবাই । কোন্ডা বলতে পাহাড় । এক পাশে মাল কোন্ডা । আর অপর পাশে তাটি চেটি পালেম। কৈলাশগিরি রেঞ্জ এর এই পাশ থেকে পাহাড়ের পথ এঁকে বেঁকে ওপরে দিকে উঠে গেছে । এখানে একই ঢংএ সব বাড়ি । প্রতিটি বাড়ির ল্যান্ডিং ঘিরে বাগান । চোখ জুড়ান দৃশ্য । এই দিকটা রেল স্টেশন এর কাছাকাছি । স্টেশন এর নাম বিশাখাপত্তনম । জেসিকার জন্য মনটা হু হু করছে । কত বছরের খেলার সাথী জেসিকা । পাহাড়ের ফাঁক দিয়েই সূর্য উপরে উঁকি মারছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 83 চেম্বার এ একা বসে আছেন এস.এন । এখন সাড়ে ন'টা বাজে । এস.এন নাতাশার মায়ের ডায়েরি পাতায় মগ্ন । এই জন্যই আজ তাড়াতাড়ি এসেছেন এস.এন । কারণ বেলা বাড়লেই ক্লায়েন্টএর ভির হবে । তাই ডায়েরি খুলে বসেছেন । মালা লিখেছেন,- মিস্টার ওয়াটসন খুশি হয়ে বলেছিলেন, মালা তোমার আর তোমার মেয়ের জন্য মুক্তোর মালার অর্ডার দিয়েছি । আজ বিকেলেই পেয়ে যাবে । এমিলি , মিস্টার ওয়াটসন এর কথাটা হজম করতে পারেনি । তাই তখনই ডাইনিং টেবল ছেড়ে চলে গিয়েছিল । \"আমি জানতাম মিস্টার ওয়াটসন আর এমিলির সাথে একটা অলিখিত সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল \"। নাতাশা তুমি হবার পরে ই এমিলিও প্রেগনেন্ট হয়ে পড়ে । প্রকাশ হবার পর মিস্টার ওয়াটসন এমিলি কে বোঝাতে চেষ্টা করেছেন । মিস্টার ওয়াটসন আমার কাছে স্বীকার করেছেন যে, এমিলি ওঁকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করছে । মিস্টার ওয়াটসন স্বীকার করেছেন যে আমার প্রেগনেন্সির সময়ে এমিলি ওঁকে কাছে টেনে নিয়েছিল । ওকে tসাবধান করেছিলেন মিস্টার ওয়াটসন । যে এই মিলনে ফল যেন না হয় । হলে ওঁর কোন দায় থাকবে eনা । a.nনাতাশা তোমার বাবা বলেছিলেন। - মালা, বিশ্বাস কর আমি তোমাকে ভালবাসি । অন্য কোন নারীর ityস্থান আমাদের মধ্যে হবে না । ahডায়েরি বন্ধ করে যথাস্থানে রেখে দিলেন এস.এন । নাগাম্মার একটা খোঁজ করা দরকার । তার ই lasজন্য লোক লাগিয়ে দিলেন । ngতারপর আরও কতগুলো ফোন করে সমস্ত জেল সুপার এর সাথে একে একে ফোন এ কথা বলেন । aকোথাও কোন মালা বলে কয়েদী নেই । আতান্তরে পড়লেন এস.এন । কি করবেন তিনি তা ভেবে Bকুল পাচ্ছেন না । একবার নাতাশা কে ডাকলে কেমন হয় ! তাই ফোন করলেন নাতাশা কে । - এখুনি আসতে পারবে ? নাতাশা - আসছি । নাতাশা তৈরি হয়েই ছিল । কেয়ার টেকার যমুনা মাসী কে বলে বেড়িয়ে পড়ল । একটা অটো ধরে সোজা অফিস এ পৌঁছল । এস.এন এর চেম্বার এ তিনি একা বসে । নাতাশা কে দেখেই উঠে এলেন ওর কাছে । দু' হাত ধরে নাতাশা কে বসালেন, নাতাশার বরাদ্দ সেই চেয়ার এ । তার পর নিজেও বসলেন তাঁর চেয়ারে । নাতাশার ,আজ আর অত শরম রাঙা ভাব নেই । এস.এন এর আজ সেই দুষ্টমীর হাসিটা যেন ছলকে পড়ছে । বললেন - কি ব্যাপার ! একটা ফোন ও তো করতে পারতে ? নাকি ভুলেই গেলে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 84 - আমি তো তৈরি হয়ে ছিলাম । - ও ! দেন , ইট ইজ মাই ফল্ট ? তাহলে তো সরি বলতেই হয় । - দেখবেন আপনার জন্য যিনি বসে আছেন, তিনি দেখলে যেন অন্য কিছু মনে না করেন । হাঃ হাঃ করে দম ফাটা হাসি হাসতে লাগলেন তিনি। তারপর বললেন- তাকে না হয় একটু অন্য রকম উপায়ে মানিয়ে নেব । তা তোমার কেউ নেই তো? সলজ্জ মুখ নামিয়ে নিল নাতাশা । চোখের ভাষা সহজ পঠ্য । কিছুটা অনুমান করে এস.এন বললেন। - শোন, দরকারি কথা আছে । নাগাম্মার একটা সূত্র পাওয়া গেছে । শিওর নই ,তবে আশা আছে । তবে সব থেকে চিন্তার বিষয় হল তোমার মা ,মিসেস মালা ওয়াটসন কে পাওয়া যাচ্ছে না । ঐ নামের কোন কয়েদী ভারতের কোন জেল খানায় নেই । তাই চিন্তায় পড়ে গেছি । etমালা সেই মানুষটার দিকে চেয়ে আছে । কিছু শুনছে কিছু দেখছে । a.nহঠাৎই খেয়াল হল উল্টো দিকের মানুষটা উত্তরের অপেক্ষায় চেয়ে আছে তারই দিকে । নাতাশার ityবলল- এ ক্ষেত্রে আমার মনে হয় এমিলি নিশ্চয়ই মায়ের নাম বদলে এমিলি করে দিয়েছে । আর hনিজের নাম বদলে মালা রেখেছিল । চেয়ার থেকে এক লাফে উঠে নাতাশা কে জড়িয়ে ধরলেন সেই aমানুষটা । তার পর ই বললেন- সরি । তবে তোমার বুদ্ধির তারিফ না করে পারলাম না । তাই একটু lasবেশিই করে ফেলেছি । ng- 'এমিলির পুরো নাম টা কি ছিল ? Baনাতাশা - এমিলি ব্রাউন । সঙ্গে সঙ্গেই ফোনে কথা বললেন কারো সাথে । নাতাশা- কিছু কি জানা গেল ? এস.এন- হ্যাঁ জানাবে । তবে ঘন্টা খানেক লাগবে। ততক্ষণ চল আমরা বাইরে কোথাও ঘুরে আসি । পিওন দরজায় লক করে দিতে ওরা নিচে নেমে এল । এস.এন এর উৎফুল্লিত মুখ যেন খুশির জোয়ারে ভাসছেন । গাড়িতে উঠতেই গ্যারাজ থেকে গাড়ি বার করে নিল ড্রাইভার । আবার সেই গায়ে গা লাগিয়ে বসা । নাতাশার শরীরে কিসের আনচান ! এ অনুভূতি নাতাশা কে পাগল করে দিচ্ছে । একটু জায়গা রেখে বসার চেষ্টা করতে সেই মানুষটার চোখে দুষ্টমীর হাসি দেখে রাগ হল নাতাশার । এটা নিশ্চয়ই নাতাশা কে জ্বালানোর জন্য ই করছে । কিছুটা যাবার পরই টম্ এর টেইলরিং শপ পড়ল। নাতাশা এস.এন কে একটু গাড়ি দাঁড় করাতে বলল। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 85 - এক মিনিট । একটু কথা বলেই আসছি। বলেই জোর কদমে চলল ঐ দোকানে। গাড়িতে বসেই দেখতে পাচ্ছে এস.এন । হাসতে হাসতে নাতাশা প্রায় ঢলে পড়ছে দোরজি র গায়ে । এমন দৃশ্য দেখেনি এস.এন । এতো হাসতে পারে এই মেয়ে ! কই এমন হাসি তো আমার সামনে হয় নি ! হাত ঘড়ি দেখল । আর দেখল তাকে, যে এক মিনিট বলে আধ ঘণ্টা কাটিয়ে দিতে পারে ! সেই মেয়েকে এখন ই শায়েস্তা করতে হবে । এই ভেবেই গাড়ির দরজা খুলে ফেলল । সোজা ঢুকল সেই দোকানে । যেখানে সেই মেয়ে মৌরসী পাট্টা জমাচ্ছে । এস.এন কে ঢুকতে দেখে দুজনেই চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়েছে দেখে সেই মানুষটা বললেন। - রঙ্গ রসে বিরতি দিতে হবে যে এবার ! আমার অন্য কাজ আছে । বলেই নাতাশার হাত ধরে টানতে টানতে নিয়ে এল গাড়ির সামনে। তার পর দরজা খুলে নাতাশা কে ঠেলে গাড়িতে তুললেন । তার পর tনিজেও উঠে বসলেন । গাড়ি চলতে লাগল নিঃশব্দে । মুখে কারো কথা নেই । গাড়ি চেম্বার এ এসে eপৌঁছল । নাতাশার মুখে কোন কথা নেই । কি হল বুঝতে পারছে না নাতাশা । নাতাশার হাত ধরে .nনিয়ে এল নিজের সিটের কাছে । তারপর হঠাৎই জাপ্টে ধরল নাতাশা কে । এ যেন মরণ কামড় । aপিষ্ট করে ফেলছে নাতাশার ঠোঁট । তারই সাথে চলছে হিস হিস করে শব্দ । - কেমন লাগছে ? ঐ ityছেলেটা কি আরও ভাল- আবার ও ঠোঁটের নিপীড়ন । নাতাশা ওকে ধাক্কা দিয়ে সরাতে চাইল । কিন্তু hসে ছাড়ার পাত্র নয় । আবার বললেন- ঐ জন্য ই তো কথা শেষ হচ্ছিল না । তাই না? এবার নাতাশা aকে ছেড়ে দিয়ে বললেন। las- আমাকে দাঁড় করিয়ে পিরিত করার এটাই শাস্তি । নাতাশা ঠোঁটে হাত দেওয়া তে বলল। ng- সরি, তুমিও আমাকে কষ্ট দিয়েছ। তাই রাগের বশে করে ফেলেছি । সরি । বলেই আবার নাতাশা aকে হাল্কা ভাবে বুকে নিয়েছে। বলছে- মালা ওয়াটসন কে খুঁজে পাই তারপর তোমার ছুটি। কথা দিচ্ছি Bতোমার ঐ বয় ফ্রেন্ড এর থেকে আমি আরও পোক্ত । এস.এন এর হাত ছিটকে বেড়িয়ে এসেছে নাতাশা। কি আর বলবে ঐ দস্যুটা কে । মনে ভাবল অমন চাকরির আমার দরকার নেই । তারপর একটা অটো তে চেপে বসেছে । মনে হল ওয়াটসন ম্যানসন এ ফিরে যাবে ? পর মুহূর্তেই মনে হল এ সে কি করছে ! ওর মায়ের খোঁজ তো করতে হবে। তাছাড়া মায়ের মামা তো ওর কাছেই আসতে বলেছেন । অতএব এস.এন কে রাগানো চলবে না । অটো থেকে নেমে পড়ল । হোটেল দশপাল্লা থেকে দুজনের খাবার নিয়েই অফিস এ ফিরল নাতাশা । ভেতরের ঘরে ঢুকে গেল সোজা। একেবারেই সেই মানুষটার দিকে না তাকিয়ে ই । আড় চোখে যে টুকু নজর পড়ল তাতে বোঝা গেল তিনি এটা আশা করেন নি । টেবল এ খাবার দেখে আপনার থেকেই উঠে গেলেন এস.এন । খেতে খেতে মনে ভাবছেন , প্রথম দিন ই একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 86 ওঁর নিজের কি হিংসা হচ্ছিল ঐ ছেলের সাথে নাতাশা কথা বলায় ! ঠিক করেনি এটা । খাওয়ার পর মনটা খারাপ লাগছে । এত হিংসা কি ও কে মানায় ! না না মানায় না । নাতাশা তো আমার কথা ভেবেই খাবার এনেছে । অতএব একটু সিরিয়াস কথায় যেতে হবে । তবে ভুলে যাবে একটু আগের ঘটনা । ফোনের রিং হয়ে যাচ্ছে । দুই ঘরেই ফোন রয়েছে । নাতাশা এস.এন এর হাতে রিসিভার তুলে দিল । ও পারের আর এ পারের দুজনের কথা হচ্ছে । তবে কিছুই বুঝতে পারছে না নাতাশা । শুধুমাত্র কত গুলো সাংকেতিক শব্দ । এই গুলো বোধ হয় ইনফর্মার রা ব্যবহার করে । এস.এন এর মুখ খুবই গম্ভীর । নাতাশার হাতে রিসিভার টা ফিরিয়ে দিলেন এস.এন । নাতাশা এই মুখ খুবই কম দেখেছে । তাই চুপ করে থাকাই শ্রেয় মনে করেছে নাতাশা । এস.এন বললেন- তুমি ঠিক ই বলেছ । তোমার মা কে আন্দামানে ,পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল । tআন্দামান নিকোবর জানো তো ? যে টা ব্রিটিশ কলোনিয়াল প্রিজন। যেটা কে বলা হয় কালাপানি। eযেটা ইউজ করা হত ফর দা পারপাস অফ এক্সাইলিং পলিটিক্যাল প্রিজনার্স । a.nনাতাশা - কিন্তু, সেটা তো ব্রিটিশ আমলে হতো । এখন তো স্বাধীন ভারত । পোর্ট ব্লেয়ার তো এখন ityদর্শনীয় স্থান । h- তা হলেও এমিলির জানা শোনা নেভির অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিরাল লোরিয়েল ছিলেন তখন । তাঁর aসাথে মিস্টার ওয়াটসন এর কোন অফিসিয়াল শত্রুতা ও থাকতে পারে । তিনিই ঘুঁটি নেড়েছিলেন সে lasসময়ে । নাতাশা - তাহলে? মা কে আর কোন দিন ই দেখতে পাব না ? ngএস.এন- ভেবো না । আমি ভাল লোক লাগিয়েছি । তবে কেস টা ঘোরালো হয়ে গেছে । সব প্যাঁচ aকষেছে এমিলি । Bনাতাশা - ওর কি লাভ ? এস.এন- ওর লাভ না তো কার লাভ ? পুরো সম্পত্তি টা ওর দখলে চলে যাবে । বিইং এ ব্রিটিশ লেডি, ইট ওয়াজ ভেরি ইজি ফর হার টু সীল দ্যা কেস । নাতাশা - মানে ? বন্ধ হয়ে গেছে ? এস.এন- হ্যাঁ। নতুন করে খুলতে হবে এই কেস। তবে আমি ওকে ঘানি টানিয়ে তবে ছাড়ব । দরকার হলে পোর্ট ব্লেয়ার চলে যাব । হাল ছেড়ে দিয়েছে নাতাশা । কান্নায় ভেঙ্গে পড়ল সে । সেই মানুষটা বলছে- আমি আছি । চিন্তা করো না । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 87 এস.এন ভাবছেন কালাপানিতে রাজনৈতিক বন্দিদের গুম করে দেবার জন্য এর থেকে নিরাপদ জায়গা আর কোথায় থাকতে পারে ?সে কালে কয়েদী রা অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে হয়তো অকালে প্রাণ হারাতেন । নইলে উন্মাদ হতেন । সত্যিই এই খবর পেয়ে তিনি আঁতকে উঠেছেন । নাতাশা কে এখন ওয়ালটেয়র এ রাখা ও ঠিক নয় । গঞ্জামে পাঠিয়ে দেওয়া ই উচিত । কি করবেন তিনি? অনেক দিন পার হয়ে গেছে টম এর সাথে আর দেখা হয় নি । হঠাৎই টম নাতাশার অফিস এ এসে হাজির । বেশ জোর কদমে গল্প চলছিল ওদের । এমন সময় এস.এন এসে পড়লেন । এসে দেখলেন টম আর নাতাশা খুব কাছাকাছি দাঁড়িয়ে কথা বলেছে । আবার মাথায় রক্ত চড়ে গেল । কিন্তু ঠিক করেলেন মেজাজ হারানো ঠিক হবে না । তাই অন্য পথ ধরলেন। টম উঠে দাঁড়াল বলল- নমস্কার স্যার । etমাথা নাড়লেন এস.এন । তারপর টম কে বললেন । - জান তো নাতাশার বিয়ে ঠিক হয়ে আছে ? ওর .nবাবার বন্ধুর ছেলের সাথে । ityaটম- তাই নাকি ?খুব ভাল খবর । নাতাশা খুব ভাল মেয়ে । আমি জেসিকাকে ভালবাসি । তাই নাতাশা hআমাকে ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ওর মাইনের টাকা দিয়েছে । aএস.এন- তাই নাকি ? জেসিকা তোমাকে ভালোবাসে না ? lasটম- আমি জানি জেসিকা আমাকে ভালোবাসে। শুধুই ওর মায়ের ভয়ে ই ও আমাকে এরিয়ে যায় । ওর মায়ের টাকা চাই । স্তব্ধ হয়ে এস.এন নাতাশার দিকে চেয়ে আছেন । এমন কন্যারত্ন কে যে বিয়ে ngকরবে সে সত্যিই ভাগ্যবান । aটম বলল- থ্যাংকস , নাতাশা । এই টাকাটা তুই না দিলে এমন ব্যবসা বাড়ানো যেত না । Bনাতাশা- এস.এন আমাকে টাকাটা না দিলে তোকে দিতে পারতাম না । থ্যাংকস টা এস.এন এর প্রাপ্য। এস.এন টম কে বললেন- থ্যাংকস কেন আমার প্রাপ্য হবে ? যে দিয়েছে তার ই প্রাপ্য । এই কথা বলে নাতাশার মাথার তালুতে হাত দিয়ে ঝেকে দিলেন । এটাও আদরের একটা ভঙ্গি । টম চলে যেতে নাতাশা দরকারি ফাইল খুলে বসেছে। কি কি দরকারি কথা , যেগুলো জানা খুব দরকার সেই গুলো আন্ডার লাইন করে রাখছে । হঠাৎই নাতাশার মনে হল ,ফাইল এ একটা ছায়া । সে দিকে ফিরতেই দেখল সেই মানুষটা একেবারেই ওর গা ঘেষে দাঁড়িয়ে । সেই চোখের তারায় www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 88 অন্য ভাষা । যা নাতাশার সম্পূর্ন অজানা । তিরতির করে রক্তে ঢেউ খেলে গেল । এ অনুভূতিতে নাতাশা সেই মানুষটার উছলে পড়া ভালবাসার উপলব্ধির কথা বুঝতে পারছে । কোন কথা না বলে নাতাশাকে একেবারেই চেয়ার থেকে দাঁড় করাল । তারপর ই মুখ নিচু হয়ে গেল নাতাশার ঠোঁটে । তিনি যেন সাগর সেচে মুক্ত নিচ্ছেন । সরিয়ে দেয় তাঁকে নাতাশা । মনে ভাবে এমন চলতে পারেনা । এর একটা ব্যবস্থা করতেই হবে । ডায়েরি পড়েই জেনেছেন যে ,বাবার বন্ধুর সাথে নাতাশার বিয়ে কথা হয়ে আছে । কিন্তু সব জেনে ও কেন এস.এন নাতাশাকে এত উত্তেজিত করছেন । যাই করুন না কেন । নাতাশা এতে সায় কখনই দেবেনা। কিন্তু সায় দেবেনা বললেও নাতাশা ঐ মানুষটার আবেদন এ সারা না দিয়েও পারে না । কি এক অমোঘ টান অনুভব করে সে । বাধ্য হয়ে বলে ফেলেছিল এস.এন কে - আপনি যখন জানেন যে আমার একজনের সাথে বিয়ের ঠিক হয়ে আছে তবে কেন আমাকে অপদস্থ করেন? এই কথার কোন উত্তর না দিয়েই হাঃহাঃ করে হেসে উঠেছেন । তারপর বললেন- ওকে রিজেক্ট করো। etনাতাশা - তা হয় না । বাবার দেওয়া কথা আমি ফেলতে পারি না । আর আপনার ও তো পাত্রী ঠিক .nকরা আছে । aএস.এন- তুমি রাজি থাকলে আমি এখনই ফোন করে আমার বাবা কে মানা করে দেব । বলেই ityএগিয়ে এসেছেন নাতাশার দিকে । ahএক ঝটকায় নাতাশা ওকে সরিয়ে দিয়েছে । তারপর বলেছে । - আমি আপনার সব অন্যায় সহ্য করে lasনিচ্ছি আমার মায়ের কথা ভেবেই । নাতাশার কথায় ঐ মানুষটার অদ্ভুত এক ভঙ্গি । দু'হাত দিয়ে কান ধরেছে । angঅনেক দিন পর জেসিকার সাথে টম এর দেখা হয়েছিল । জেসিকাকে নাতাশার কথা ও বলেছে। কিন্তু Bজেসিকা কোথায় থাকে তা বলতে পারে নি । মাঝে মাঝেই টম এর সাথে দেখা হয় জেসিকার। এখন আর আগের টম নেই । পালটে গেছে অনেক । শপ অনেক বড় হয়ে গেছে । আজকাল গাড়ি ছাড়া টম চলা ফেরা করেনা । মাথায় সন্দেহ টা দানা বেঁধেছে জেসিকার । এতো বড় ব্যাবসা হল কি করে । আজকাল জেসিকা টম এর দিকে চেয়ে থাকে । টম আগে জেসিকার পিছু পিছু ঘুরতো এখন জেসিকা ই টম এর দিকে চেয়ে থাকে । অবশ্য এই বুদ্ধিটা নাতাশার ই দেওয়া । তাই টম কে সেদিন এই বুদ্ধি দিতে দিতে হেসে ঢলে পড়েছিল টম এর গায়ে । যেই ঢলাঢলি দেখে এস.এন নাতাশা কে টেনে নিয়ে গিয়েছিলেন । ভাবতে ভাবতেই কাজ করছে টম । এবার সত্যিই কথাটা জেসিকাকে বলতেই হবে । নাতাশা ঐ বাড়ি ছাড়ার পর থেকে জেসিকার ও আগের মত ছেলেমানুষি নেই । এবার প্রোপোজাল দেওয়া যেতেই পারে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 89 ওদিকে নাতাশা ঝুল বাড়ান্দায় দাঁড়িয়ে পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখছে। রাত প্রায় আট টা । এতো রাতে এ বাড়ির সামনে কার গাড়ি ! চেনা চেনা লাগছে গাড়িটা! তার ই পেছনে আরও একখানা গাড়ি এসে দাঁড়াল। দেখে মনে হচ্ছে এস.এন এর গাড়ি । হ্যাঁ। ঠিক ই তো । গাড়িটা তো এখানেই থামল । গাড়ি থেকে নামলেন এস.এন । মনে হল বাইরে , দূরে কোথাও যাবেন । হাতে একখানা অ্যাটাচি । গেট এর সামনে গাড়ি থামতে ই ঘর থেকে বেড়িয়ে পড়েছেন কেয়ার টেকার যমুনা মাসী । তারপর এস.এন কে ওপরে নিয়ে এসেছেন । নিচে নেমে গেলেন যমুনা মাসী । সোফায় বসে এস.এন নাতাশা কে বললেন। - তৈরি হয়ে নাও । জামা কাপড় নিয়ে নাও । আবার যেন কিনতে না হয় । ওঁর কথা বলার ধরনে লজ্জা পেল নাতাশা । প্রশ্ন করল- কোথায় ? এস.এন- তোমার পেছনে ফেউ লেগেছে। আজই খবর এসেছে এমিলির পেয়ারের অ্যাসিস্ট্যান্ট লোরিয়েল কে দিয়েই লোক লাগানো হয়েছে তোমাকে খুঁজে বের করার জন্য। tঅতএব উয়ি মাস্ট বি কেয়ারফুল। তাকিয়ে আছ কেন ? .ne- এখন আমি কোথায় যাব ? এত রাতে ? a- বেশি রাত হয়নি। মাত্র আট টা। আপাতত তোমার মায়ের বাবা ও মায়ের কাছে গঞ্জামে যাবে। ityআলিশান বাড়ি তাই কাক পক্ষী টি ঢুকতেই পারবে না সেখানে। আমি যতক্ষণ আছি তোমার কোন hচিন্তার কিছুই নেই। বি কুইক। দশ মিনিট সময় দিচ্ছি। তৈরি হয়ে নাতাশা নিচে নেমেই দেখল aসামনের গাড়ি টায় সিকিউরিটি গার্ড রয়েছেন তিন জন। তার মানে আমাদের খবর অপর পক্ষ পেয়ে lasযাচ্ছে তাই এই বন্দোবস্ত। শেষ পর্যন্ত জেসিকা কে ছেড়ে চলেছে নাতাশা। এই বুঝি শেষ ওয়ালটেয়র এ থাকা। মন বলছে- বাই বাই ওয়ালটেয়র। angসাঁ সাঁ করে গাড়ি চলেছে অন্ধ্র থেকে ওড়িশার দিকে তারপর গঞ্জাম । এস.এন নাতাশা র পিঠে Bহাতের বেড় দিয়ে বসেছে । এর অর্থ দৈহিক লালসা নয় । এ হল অন্তরের ভালবাসা । যেন ছাউনি দিয়ে ঢেকে রাখতে চায় নাতাশাকে । একবারের জন্য ও নাতাশার মন এই মানুষটার থেকে দূরে যায় নি । কখন যে এই আলিশান বাড়ির সামনে গাড়ি দাঁড়াল তা টের পায় নি নাতাশা । গাড়ি সেই আলিশান বাড়ির সামনে র দরজা খুলে মায়ের বাবা ও মা ছুটে এলেন । একেবারেই জড়িয়ে ধরলেন নাতাশা কে বুকের মাঝে । নাতাশাও কেঁদে চলেছে । কান্না থামাল সেই মানুষটা । বললেন । - আমার দাঁড়াবার উপায় নেই । দু জন সিকিউরিটি গার্ড রেখে যাচ্ছি। আর একজন আমার সাথেই থাকছে । এবার নাতাশার দিকে ফিরে বললেন। - এটা তোমার নিজের বাড়ি ,তোমার দিদিমা আর দাদুর বাড়ি । দরকার না হলে বাইরে যাবে না। ওপরের বারান্দা থেকে নাতাশা দেখছে সেই মানুষটা হাত নেড়ে বাই- বলে চলে গেলেন । বুকটা মুচড়ে উঠল নাতাশার । এ কি করছে নাতাশা ! নিজের অজান্তে এঁকে ই মন ঢেলে বসে আছে ! তার তো বিয়ে ঠিক হয়ে আছে বাবার বন্ধুর ছেলের সাথে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 90 সেই শিশুকাল থেকেই । বাবার মত কে মরে গেলেও সে হেলা করতে পারবে না । আর বাইরের একটা লোক নিঃসার্থে বিপদের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে কিসের আশায় !!! মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে নাতাশার । পর্ব-৭ বহুবছর আগের কথা, কোলকাতা হাইকোর্টের জাস্টিস সি .কে .বাসু গিয়েছিলেন সেলুলার জেল পরিদর্শন করতে। সেখানেই শুনতে পেলেন অন্যায় ভাবে কয়েকজন নির্দোষ ব্যক্তিদের সেলুলার জেলে পাঠানোর নামে জাহাজে বসিয়ে দেওয়া হয়েছিল । এটা সংগঠিত হয়েছিল ব্রিটিশ পুলিশ দ্বারা । যাতে এই সব মানুষদের পথে পড়ে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় না থাকে । এ ও এক রকম নির্বাসন দেওয়া । জাস্টিস বাসু এই সব মানুষেরা যাতে দেশে ফিরতে পারে এবং এদের যাতে দোষী সাব্যস্ত করতে না পারে সেই ব্যবস্থা করেন t। এদের মধ্যে অনেকেই অত্যাচারে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন । এই সব মানুষের eএর সাথে ছিলেন জাস্টিস, আর কয়েকজন অ্যাডভোকেট আর কয়েকজন কাউন্সেলর । মানে .nপরামর্শ দাতা । যারা এই সব মানসিক ভারসাম্য হীন রোগীর পরামর্শ দেবেন । aব্রিটিশ আমলে আন্দামানের সেলুলার জেলখানায় কয়েকজন মহিলা কয়েদীদের কাউন্সেলিং ityকরে জানা গিয়েছিল যে এদের মধ্যে কয়েকজনের মস্তিষ্ক বিকৃতি হয়েছিল । নির্ভর যোগ্য সূত্র hথেকে জানা গেছে যে এদের ওপর শারীরিক নির্যাতনের কারণেই এদের মস্তিষ্কের অবলুপ্তি aঘটেছে । কোলকাতার এক মহিলার ওপরে ও ঐ জেলখানায় বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছিল । এই lasসব কেস উদ্দেশ্য প্রনোদিত । মহিলাদের কেস স্টাডি করে দেখা গেছে যে এগুলো প্রভাবশালী ব্যক্তির দ্বারা সংঘটিত । সেই কালে ঐ সব মহিলাদের জেলখানার থেকে মুক্ত ngকরে আনার ব্যবস্থা করেছিলেন জাস্টিস সি কে বাসু । এখন অবশ্যই তিনি অবসর প্রাপ্ত । সেই aসব মহিলাদের জায়গায় জায়গায় ফ্যামিলি কাউন্সেলিং সেন্টার এ পাঠিয়ে দিয়েছিলেন তিনি । Bঅনেক কে ই স্বনির্ভর করে তোলা হয়েছিল । তার মধ্যে মালা ও ছিলেন । । সে সব বহুকাল আগের কথা । যারা তাঁর খবর জানতেন তাঁরা তাঁদের কাছেই ঠিকানাটা খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছেন । তার মধ্যে একজন ফ্যামিলি কাউন্সেলর,এখন তাঁর ছেলের কাছে থাকেন । বয়স প্রায় নব্বই ছুঁই ছুঁই ভদ্রলোকের । নাম মানিক পাল । তার ঠিকানা আগে থেকেই নেওয়া ছিল । জাস্টিস সি.কে .বাসু যে সব কয়েদীদের মুক্ত করতে পেরেছিলেন । তাদের ঠিকানা তাঁর পকেট ডায়েরি তে লিখে রেখেছিলেন । সব খবর ই লোক মারফত । মালা ওয়াটসন এর কেস এর পেছনে অনেক গুন্ডা বাহিনীর খবর ও তাদের জানা । করলেন যে জাস্টিস বাসু সঙ্গে দেখা করা ভাল এখন । কারণ তিনি কয়েদীদের কথা ভেবেছেন । আবার অনেক কয়েদিদের স্বনির্ভর করে তোলার চেষ্টা করা হয়েছিল । সব খবর পাওয়ার পরই সরেজমিন তদন্তে লেগে পড়েন এস.এন । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 91 মনে ভাবলেন কলকাতার কিরন শঙ্কর রায় রোডের কাউন্সেলিং সেন্টার এ একবার খোজ করবেন কি ? আর কিছুই নয় । কোথায় কোথায় সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলিং হয় । তারপর ভাবলেন সোজা জাস্টিস এর সাথে দেখা করবেন । আবার মত পাল্টে ফেললেন । বেলা দশটায় কোলকাতায় পৌঁছলেন এস.এন । কোলকাতা পৌঁছেই প্রথম কাজ হল যারা তাঁকে খবর পাচার করেছে তাদের ফোন করা । এস.এন খবর সরবরাহকারী দের কয়েকজন কে ফোন করলেন । ওপাশ থেকে ভেসে এল একটা অচেনা গলা- হ্যাঁ । বুঝতে পেরেছি । সকাল নয়টা হালতু র মসজিদ এর কাছে দাঁড়াবেন । এস.এন- তুমি ঠিকানা টা বলো আমি খুঁজে নেব । - তা দিতে পারবো না । ঐ ভদ্রলোক খুনির অনুচরদের ভয়ে লুকিয়ে আছেন । ওরা কি করে জানতে পেরেছে যে আপনি খুনির তল্লাশি তে এসেছেন । - জানার তো কথা নয় । তাছাড়া কোলকাতার থেকেই তো তোমার সঙ্গে আমার কথা হচ্ছিল । যাই হোক ,এবার বল । - মসজিদের ওখানেই দাঁড়াবেন । আমি হলুদ দরোজায় থাকবো । আপনি কাছে এলেই বলে tদেব । কোন খানে পাবেন ওকে । .neএস.এন ভাবছেন এটা কি ঠিক হচ্ছে ? ফোন যদি এখানে লিক হয় তবে তো এখন যার aসাথে কথা হল , সে ও তো বিরুদ্ধ পার্টির ইনফর্মার হতেই পারে ! অতএব এদের বিশ্বাস ityকরা যায় না । সঙ্গের সিকিউরিটি গার্ড এর সাথে কথা বলতে সে বলল, দেখাই যাক না কি hকরে ! মানে এরা মোটা টাকার বিনিময়ে এমিলির হয়ে কাজ করেছিল । কারণ মালা মুক্ত aহয়ে গেলে এমিলির লাভের গুড় আর জুটবে না । বলা কি যায় জেলের ঘানি টানতে হবে lasকিনা ! যাই হোক এস.এন মনে সেই মতো ই হলুদ দরজার কাছে যাওয়ার পর একজন তাকে অনুসরণ করতে বলল । এস.এন সেই লোকের পেছনে চলেছেন । angএকটু দূরে দূরে চলেছে সিকিউরিটি গার্ড । হঠাৎই একটা ঘরে পৌঁছল ওরা । যে লোকটি হলুদ Bদরজায় দাঁড়াতে বলেছিল সে চড়াও হল এস.এন এর উপর । হাত বাঁধ তে শুরু করল । এবার সিকিউরিটি গার্ড রিভালভার তাগ করল ঐ ঠগ লোকটার ওপর । ছাড়া পেয়ে এস.এন পিঠ মোরা করে বেঁধে ফেললেন ঐ লোকটিকে । তারপর জিজ্ঞেস করলেন । - কি ব্যাপার । তুমি আমাকে বাঁধছিলে কেন? - আপনি কি ওয়ালটেয়র থেকেই আসছেন খুনির খোঁজে ? - না না । কার খুনি ? - এ হে ,ভুল হয়ে গেছে । একজন বলেছিল মিস্টার ওয়াটসন এর খুনি কে খুঁজতে আসছে । আসলে যে খুনি , সেই তো মিস্টার ওয়াটসন কে খুন করে জেল খাটাচ্ছে মিস্টার ওয়াটসন বৌ কে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 92 এস.এন- তাই নাকি ! আমি তো উকিল । তার নাম কি ? আমি ওদের কেস টা লড়তে পারি । - তা তো জানি না । তবে একজনের নাম ঠিকানা আপনাকে দিতে পারি । তিনি হলেন বনমালী নায়েক গঞ্জামে বাড়ি । ঠিকানাটা লিখে নিন । এর কাছে এমন দুনম্বরি কেস অনেক পাবেন । এবার সিকিউরিটি গার্ড বলল - তাহলে তুমিও আমাদের সাথে চল । অনেক টাকা পাবে । গাড়ি সোজা চলল আলিপুর জেল । সন্দিগ্ধ হিসাবেই তাকে কয়েদ খানায় ঢোকান হল । এবার তার মাথা পরিস্কার হতে সে চিৎকার শুরু করল - আমাকে ছাড়ান জেলখানার থেকে । আমি সব বলে দেব । এস.এন- তুমি আগে বল যাকে মিস্টার ওয়াটসন এর খুনি সাজান হয়েছে যাকে তিনি এখন কোথায়?, তা কি তুমি বলতে পার ? - ছেড়ে দিন । সব বলে দেবো । গঞ্জামে যার কথা বললাম সে ও এই দলে আছে । কারণ তার ইচ্ছা ছিল মালার সাথে তার বিয়ে হোক । তাই এ কাজ তার ও হতে পারে । t- যা বলার কোর্টে বলবে । .neডালহৌসির থেকে সোজা গাড়ি নিমাই পাল এর বাস ভবনে চললেন এস.এন । ঠিকানা ছিল aবলেই পৌঁছতে পারলো ড্রাইভার । এঁকে বেঁকে রাস্তা চলেছে একেবারেই গড়িয়ার প্রান্তে ityএসে সেই বাড়ি পাওয়া গেল । এখানে প্রায় সবাই ফ্যামিলি কাউন্সেলর নিমাই পাল কে চেনে । hবোঝা গেল এককালে অনেক কাজ করেছিলেন । নইলে কেউ কাউকে মনে রাখে না । দরজায় aগাড়ি দাঁড়াতে সাদরে ভেতরে বসালেন নিমাই পাল । lasএস.এন সবিস্তারে বললেন মালা ওয়াটসন এর কথা । সব শুনে তিনি বললেন- আমার ngএকজনের কথা মনে হচ্ছে । তিনি নামেই খৃষ্টান ,কিন্তু হিন্দু দেবদেবীর পুজারী । ভাল গান aকরতেন । বসুন । ঠিকানা দিচ্ছি । পাশের ঘরে চলে গেলেন । ফিরে এলেন ছোট্ট একটা নোট বুক Bনিয়ে । বললেন- এই তিন টা ঠিকানা লিখে নিন । যে কোন একজন হবেন । জাস্টিস বাসু এদের জেল খানার থেকে মুক্ত করেছিলেন ।এখন এরা পরিবারের পরামর্শ দাতার কাজ করেন । সবাই কে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছিল । যাতে এমন মহিলাদের পাশে থাকেন । সরকারি হোম এ এদের নিবাস । হোটেলে খাওয়া সারার পর একটু রেস্ট নেওয়া দরকার মনে করলেন এস.এন । তাই সিকিউরিটি গার্ড কে বললেন । - আজ তোমার ও অনেক কষ্ট হয়েছে । একটু রেস্ট নাও । সিকিউরিটি গার্ড বলল- স্যার, অপর পক্ষ কিন্তু সময় দেবে না । - ঠিক আছে, দশ মিনিট পর চলো । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 93 গড়িয়ার থেকে সোজা চললেন লেলিন সরনী । সরকারি গেস্ট হাউজে । গেট এ কার্ড দেখাতে ভেতরে প্রবেশ করার বাঁধা রইল না । গাড়ি ভেতরে ঢুকে গেল । পর পর দুজনের সাথে দেখা হওয়ার পর মনটা খারাপ হয়ে গেল । মনে হল , না ,কিছুই করা গেল না । নাতাশার মুখে হাসি ফোঁটা তে পারলাম না । সিকিউরিটি গার্ড বলল- আর একটা যে ঠিকানা রয়েছে সেটা ম্যাডাক্স স্কোয়ার । যাবেন তো ? তাঁরা কাউন্সেলিং করেন । রক্ষণাবেক্ষণ এর ভাল বন্দোবস্ত । এখানে গেট এ, আবার অফিস এ ও কার্ড দেখাতে হল । এস.এন নিজের পরিচয় পত্র দেখালেন । জাস্টিস বাসুর কথাও বললেন । তখন অফিস থেকে আবাসে ফোন করলেন অথরিটি পার্সন । আবার জিজ্ঞেস করলেন এস.এন কে - নামটা ঠিক করে বলুন তো । এস.এন- এমিলি পরের নাম । আগে নাম ছিল মালা ওয়াটসন । মিস্টার ওয়াটসন এর স্ত্রী । আবার ওপরে ফোন গেল । তারপর তিনি বললেন- বসুন, আসছেন । etএস.এন সিকিউরিটি গার্ড এর দিকে ফিরলেন । ভাব খানা এমন যেন হালে পানি পাওয়া গেল । .nপাঁচ মিনিট এর অপেক্ষা ও যেন পাঁচ বছর মনে হল । যিনি নেমে এলেন তার পরনে একখানা aধোপ দুরস্ত সাদা থান । এতদিনের দেশ ছাড়ার পর তিনি এখন বাংলা ভাষায় অভ্যস্ত হয়ে ityগেছেন । তবুও অন্ধ্র থেকে আগত শুনে তেলেগু ভাষাতেই কথা বললেন । ahদেখেই এস.এন চিনতে পারছেন এই মহিলাকে । তোমার নাতাশাকে লেখা ডায়েরি আমার lasকাছে ই আছে । আমি অ্যাডভোকেট এস.এন । তোমার কেস টা লড়ছি । ইচ্ছা ছিল তোমাকে নিয়ে যাই ,কিন্তু এখানকার তোমার সিকিউরিটি দেখে আপাতত তোমার এখানে থাকাই ঠিক ngমনে হচ্ছে । কারণ শত্রু পক্ষ তোমার ক্ষতি করার চেষ্টা করবে যতক্ষণ না কেসটা ফয়সলা হয় । a- নাতাশা ! কেমন আছে? B- শি ইজ সো লাভিং । লাইক ইউ । জাস্ট ওয়েট আই উইল শো ইউ । বলেই নাতাশার একখানা ফটো দেখিয়ে দিল । মালা ওয়াটসন এর দু চোখে জলের ধারা গাল বেয়ে নেমে চলেছে । এস.এন- আমি গিয়েই তোমার কেসটা রি ওপেন করব । কয়েকটা দিন অপেক্ষা করো । এখনই আমরা ফিরব । কথা বলতে বলতেই ছবি তুলে নিলেন মালা ওয়াটসন এর । এই ছবিই নাতাশাকে দেখাবেন । পায়ে হাত দিয়েই প্রণাম করলেন মালাকে এস.এন । এস.এন- চল ,দেখা যাক । এতোটা যখন হল আর বাকি থাকে কেন? হাজরা রোড ধরে ম্যাডাক্স স্কোয়ার এ পৌঁছল গাড়ি । বিশাল একখানা বিল্ডং । কাউন্সেলিং সেন্টার । এখানে কাউন্সেলর দের নিবাস ।এখানেই www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 94 গঞ্জাম পৌঁছানোর পর গাড়ি লক করে সেই আলিশান বাড়িতে ঢুকলেন । সোজা ওপরে চলে গেলেন । যাবার আগে নিচে গার্ড এর বন্দোবস্ত করলেন । কোন বেল বাজাননি বলে কেউ জানতেই পারেন নি যে এস.এন এসেছেন । প্রথমেই নাতাশার ঘরে ঢুকলেন । আচমকা এস.এন কে দেখে চমকে উঠেছে নাতাশা - তুমি ! আপনি কখন এলেন ? - 'বেশ তো ছিল তুমি ডাক টা । আবার পাল্টালে কেন? লজ্জায় আনত মুখ নাতাশার । কি করে যে তুমি বলে ফেলল! এস.এন নাতাশার মুখের কাছে মুখ এনে বললেন । - আগে আমার পুরস্কার দাও তার পর বলব । বলে নাতাশার মুখের কাছে মুখ নিলেন । শুধুই অপেক্ষা ! কি বলতে চাইছেন তা না বোঝার মত নিরেট নয় নাতাশা । তাই ঐ ঠোঁটে ঠোঁট ছোঁওয়াল । জাপটে ধরলেন সেই মানুষটা নাতাশাকে । তারপর বললেন চিৎকার করে । - মালা ওয়াটসন কে পাওয়া গেছে । চিৎকার শুনে মালার মা ও বাবা ছুটে এসেছেন । তারপর মালার ছবি দেখিয়েছেন । একটু শুধুই বয়স বেড়েছে । এ যেন নাতাশার বেশি বয়সের ছবি । tমালার মা বললেন- ওকে নিয়ে এলে না কেন? মালার বাবা বললেন- ভাল ই করেছে । সিকিওর eজায়গাতেই আছে । কেসটা মিটুক তখন এসে যাবে । নাতাশা চেয়ে আছে সেই মানুষটার দিকে .n। যিনি এত বড় একটা কাজ করে ফেলেছেন । কি ভাবে নাতাশা ওঁকে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ aকরবে ! জানে না নাতাশা । বাবার কথার খেলাপ করে ওকে বিয়ে করবে কি ? না নাতাশা ityতা করতে পারে না । তাতে বাবাকে ই ছোট করা হয় । hটম এসেছিল নাতাশার অফিস এ । কিন্তু এস.এন টম কে বলে দিয়েছেন- নাতাশার বাবার aখুনের কেস এর জন্য নাতাশার খবর এখন জানানো যাবে না । আমি তোমার বিয়ের খবর lasজানাব নাতাশাকে । আমাকে নিমন্ত্রণ করলে না? টম- আপনাকে তো যেতেই হবে বিয়ে তে । - না গেলে ও আমার আশীর্বাদ পৌঁছে যাবে । এমিলির বিরুদ্ধে কেস ফাইল হয়ে গেছে । নতুন ngকেস এর তদন্ত সার্থেই এমিলি কে অ্যারেস্ট করা হল আজ । আজ একটা বিশেষ দিন । নিজের aমুখে যতক্ষণ না নাতাশাকে বলতে পারছে ততক্ষণ মন ছটফট করছে এস.এন এর । কোর্ট Bথেকে সিকিউরিটি গার্ড কে বলল তৈরি থাকতে । - আমরা গঞ্জাম যাব । ঠিক সাড়ে ছয়টায় রওয়ানা হব । সোজা হাই কোর্টে আসবে । গাড়ি সাঁ সাঁ করে চলেছে গঞ্জামের দিকে । কোন দিকে দৃষ্টি নেই এস.এন এর । মন শুধুই বলছে । \"নাতাশা নাতাশা\" । যতদিন কেস সমাপ্ত না হয় ততদিন তো বসে থাকা যাবে না । সুতরাং বিয়ে সেরে নিতে হবে । এরপর!! কি হবে!!! নাকি ফয়সলা হবার পর বিয়ে করবে !! যেদিন কেস উঠবে তার আগেই নাগাম্মাকেও এখানে মানে গঞ্জাম এ নিয়ে আসা হবে । এখন নিয়ে আসলে ও ভাল । না হলে নাগাম্মাকে লোপাট করে দিতে পারে । প্রথম সাক্ষী হল নাগাম্মা । আর দ্বিতীয়ত মালা । আর লিখিত এভিডেন্স ডায়েরি । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 95 বাড়ির দরজায় গাড়ি দাঁড়াল । একে একে সবাই বের হল । নাতাশা ও দাঁড়াল । নাতাশা সব সময়েই লক্ষ্য করেছে নানা আর নানী কিছু বলতে গেলেই এস.এন অনেক সময়ই ঈশারা করেছেন । কারণ টা বোঝে নি নাতাশা । যেন কিছু একটা চাপতে চাইছে এস.এন । কি সেটা প্রায়ই ঘুরপাক খেয়েছে মাথায় । ওকে আড়াল করেও কিছু বলাবলি করেছেন । খারাপ লেগেছিল নাতাশার । নাতাশার থেকেও কি ঐ মানুষটা বেশিই আপন হয়ে গেল! এখন ও সেই একই ভাব । ওদের সাথে কথা হবার পর নাতাশার কাছে এলেন তিনি । - একটা দারুণ খবর । শুধুমাত্র তোমাকে দেব বলেই ছুটে এলাম । - শুধুই খবর দিতেই ? আবার সেই দুষ্টমীর হাসিটা বেড়িয়ে এল । - আছে আরো একটা কারণ আছে । আবার মিষ্টি মুখটা দেখতে পাব । আর তার - বলে- নাতাশার ঠোঁটের দিকে নজর । এবার নাতাশা রেগে গেল । বলল- ভাল্লাগে না । আসল কথাটা বলুন । t- আপনি নয় । আগে তুমি বলো । e- বলছি তো । আসল কথাটা বলো । স্নেহের বশে জড়িয়ে ধরলেন নাতাশা কে । তারপর .nবললেন- একটু জড়িয়ে নেই। এরপর তো আর হবে না । তোমার বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেল a। ity- কে করলো ? h- তোমার মা ঠিক করেছেন । তিনি আর aদেরি করতে চান না । হঠাৎই নাতাশা এস.এন কে জড়িয়ে ধরেছে । এস.এন বুঝতে পারছেন lasযে নাতাশা কাঁদছে । । এস.এন এর ও কান্না পেয়ে গেল । কান্না বড় ছোঁওচে রোগ । নানা নানী এ ঘরে ঢুকতেই সরে গেছে নাতাশা । ngএস.এন বললেন- আমি কয়েক দিনের জন্য মাদ্রাজ যাব । কাল তোমার মা ও নাগাম্মা এসে aযাবে । আর আমাদের শত্রু এমিলির আর ছাড় পাওয়ার উপায় নেই । শওয়াল জবাবে ওর Bপক্ষে কেউ নেই । নানা- তা সেই অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিরাল লোরিয়েল এর কি খবর ? - সে ও সমান দোষি । নইলে রাজনৈতিক বন্দিদের জায়গাতে মালাকে নাম ভাড়িয়ে ঢুকিয়ে দেয় । আজ অবধি যতটুকু জানি তাতে এমিলির ফাঁসি । আর লোরিয়েল এর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড । নানী বললেন- আজ আর যেও না থেকে যাও । এস.এন- না না । ক'দিন পর তো নাতাশার বিয়ে।তখন তো আসতে ই হবে । আমি না এলে কি হয় ! জানালার পাশে দাঁড়ানো নাতাশা । চোখের জলে গাল ভেসে যাচ্ছে ! কি করবে নাতাশা ! এখন কি ফিরবার কোন উপায় আছে । এস.এন তো আমার বিয়েটা মেনে নিয়েছেন । তবে আমার ই বা কি এমন ভালবাসা ! না । ওর কথা একেবারেই ভাববো না । ওর ও যদি আমার কথা না মনে হয় । তবে আমার ও হবে না । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 96 সবাই চলে এসেছেন ওয়াটসন ম্যানসন এ । ভোরের দিকেই ওর মা মালা এসে হাজির হয়েছেন । সঙ্গে সিকিউরিটি গার্ড দুজন। একটু পরেই নাগাম্মা কে আনা হয়েছে। আজ কেস শুনানির দিন। সকাল নয়টায় সবাই চলে গেলেও নাতাশা কোর্টে যায় নি। কারণ কাল নাতাশার বিয়ে। মাদ্রাজ থেকে দাদু আর নানী আসছেন । তার ই ছেলে আসছেন বিয়ে করতে । মনটা আন চান করছে । কি যেন কেমন দেখতে সেই ছেলে ? মানিয়ে নিতেই হবে নাতাশা কে । আজ বাড়ি ভর্তি লোক জন। মাঙ্গলিক আচার আচরন চলছে । কাল সকালে বিয়ে। বিকালে বাড়িতে আজ উৎসব । মালা ওয়াটসন নির্দোষ প্রমাণিত হয়েছেন । দোষী সাব্যস্ত হল এমিলি ব্রাউন। সে ই খুনী সাব্যস্ত হল । নাগাম্মা আবার বহাল হল ওয়াটসন ম্যানসন এর কাজে । কাল ওয়াটসন ম্যানসন এ ই নাতাশার বিয়ের আসর হবে । জেসিকা আর টম নিমন্ত্রিত । জেসিকা লজ্জিত হয়ে বলেছে- আই অ্যাম ভেরি সরি নাতাশা । আমার মায়ের ব্যবহারে আমি tলজ্জিত । eওয়াটসন ম্যানসন এ আজ সাজের ধুম পড়ে গেছে । বহু দিন পর সাজ সাজ রব উঠেছে । এদের .nসকালেই বিয়ের আসর । দিনের আলোতে পাত্র পাত্রী একজন আর একজন কে ভাল করে aচিনে নিতে পারবে । হিন্দু ঢং এ ই বিয়ে হচ্ছে । পাত্র এসে গেছে । হৈহৈ রব উঠেছে । নাতাশার ityচোখে পড়ল মাদ্রাজের দাদু দাঁড়ানো । পাশে বর বেশে দাঁড়ানো যে সেই নাতাশার বর । hমনটা কে শক্ত করতে চোখ বুজে বসে রইল সে । মন্ত্র পাঠ চলছে । কে যেন বলছে - চোখ aখোল নাতাশা । চোখ খোল । এখন বরের দিকে তাকাতে হয় । বাধ্য হয়ে নাতাশা চোখ খুলল । lasএ কি দেখছে নাতাশা ! ভুল দেখছে না তো ! ওদিকে বরের বেশে যে, সে তার বিশেষ দুষ্টমীর হাসি টা হাসছে । নাতাশা এবার কি ছুঁড়ে মারবে ওকে ? কেউ কাছে না থাকলে ওর ngবুকের উপর আছড়ে পড়ত । বরের হাতে নাতাশার হাত দেওয়া তাই সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার aকরছে বর বাবাজী বৌয়ের হাত টিপে । নাতাশা কে রাতের অপেক্ষা করতেই হল বরের বুকের Bপড়ে আছড়ে পড়ার জন্য । কে বলবে যে এই সেই এস.এন । মানে সূর্য প্রকাশ নাইডু । এতদিন নাতাশা কে বোকা বানিয়ে রেখেছেন । এই ছেলেই মাদ্রাজের দাদুর ছেলে । যার সাথে বহুকাল আগেই বিয়ে ঠিক ছিল নাতাশার । কিন্তু সারপ্রাইজ দেবার জন্য সূর্য প্রকাশ নাইডু ছিল এস.এন । রাতের আসরে সূর্য প্রকাশ বলেছে - \"আই লাভ ইউ \" আবার ও বলছি । সেই তোমাদের 'ল' কলেজের ক্যাম্পাস এর মতো । তোমার প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছিলাম । সেই জন্য ই সূর্য প্রকাশ নাইডুর বোর্ড খুলে নতুন করে এস.এন বোর্ড লাগিয়েছিলাম । ক্লায়েন্ট দের বলা ছিল যে আমার হবু বৌ কে চমকে দেব বলেই এত সব । - নাতাশা এবার তুমি বলো । নাতাশা এস.এন এর বুকে আছড়ে পড়ল । তার পর লজ্জাবতী স্বামীর বুকে কিল মারতে লাগল । স্বামীর আদরে হারিয়ে যেতে থাকল নাতাশা । ***** www.banglasahitya.net
একটা নদী হারিয়ে যাবার কথা গল্পকবিতা প্রদীপ আচার্য্য www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 98 একটা নদী হারিয়ে যাবার কথা --- প্রদীপ আচার্য্য একটা নদী হারিয়ে যাবার কথা আসলে এখন নিজের অতীত বতর্মান আর ভবিষ্যত নিয়ে খুব ভাবতে ইচ্ছে করে, অনেক দিন বছর পেরিয়ে একটা যুগের সন্ধিক্ষণে এসে দাঁড়িয়ে আছি! একটা নদীর হারিয়ে যাওয়ার ইতিহাস এটা!!! ওই যে বটগাছটা নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে একটা মৃত শরীরের মতো সে tওই নদীটার পাড়ে জন্মেছিলো, eযার ছায়ায় রাখালেরা খেলা করতো, শ্রান্ত পথিকের বিশ্রামস্থল ছিলো ছেলেমেয়েদের লুকোচুরি .nখেলার পিঠস্থান ছিলো। yaরঙ বেরঙের পাখি বাদুর চামচিকে কাঠবেড়ালী হনুমানের আশ্রয় ছিলো বটগাছটা, itবটগাছকে আমি তরুণ অবস্থায় দেখেছিলাম! সবে চারদিকে সরু সরু ঝুড়ি নামিয়ে এলাকা দখল hকরে নিজের অস্তিত্ব জানান দিচ্ছিল আগামীর এক জীবন্ত প্রতিভূ হিসেবে। saগাছটার নিচেই গ্রামের পাশ ঘেষে ছোট্ট ডোবার মতো যে মজা খাল আছে ওটাই সেই বহমান নদী, laভীষণ স্রোত ছিলো ওতে, জোয়ার ভাটা খেলতো! gনানান পণ্য নিয়ে অনেক নৌকা এসে ভিড় করতো ঘাটে, nবাইচ প্রতিযোগিতা হতো জন্মাষ্টমীর পরেরদিন। Baবিকেলে বসতো হাট দুরান্তের গ্রাম থেকে শহর থেকে এনে প্রয়োজনীয় জিনিসের বিকিকিনি হতো। চণ্ডীতলায় দেল দোল দূর্গোৎসব বারো মাসে তেরো পার্বণে গাঁয়ের মানুষেরা খুশির জোয়ারে ভাসতো, বিজয়াদশমী লক্ষীপূজো আর নবান্নে ছিলো অবাধ নিমত্রণ। রথের মেলা বসতো সাতদিন, গজা পাঁপড় বাদামভাজা জিলিপির সুবাস, সঙের গান বহুরূপীর নাচ আর কাঠের ঘূর্ণিতে পাক খাওয়ার মজা সবাই উপভোগ করতো। কুস্তির আসর বসত নদীর পাড়ে সে এক মহা সমারোহ ছোট বাথান আর বড় বাথানের রেষারেষি, সফিউল্লাহ আর ফটিক ঘোষের লড়াই দেখতে পনেরো বিশটা গ্রামের লোকের ঢল নামতো। মহরমের দিন ফোরাতের যুদ্ধ স্মরণ করে অনেকে নিজেদের শরীর রক্তাক্ত করতো, সেই শোকের সহমর্মী ছিল গ্রামের সবাই। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 99 ঈদের দিনেও ছিলো সকলের অবাধ নিমন্ত্রণ হরেক মিঠাই আর সিমুইএর গন্ধে ভারী হয়ে যেত বাতাস। উৎসবের দিনগুলিতে কীর্তন কৃষ্ণযাত্রা কবিগান পঞ্চরস মনসা ভাসান তরজার আসর বসতো। হেরম্ব পণ্ডিতের পাঠশালা ছিলো তার বাইরের বাড়ির চারচালায়, চাল ডাল আনাজপাতির বিনিময়ে ছেলে মেয়েদের পাঠ দিতেন তিনি। রক্তের সম্পর্ক না হলেও সবাই সকলকে নিজের আত্মীয় বলেই মনে করতো, জন্ম মৃত্যু বিয়ের মতো অনুষ্ঠানে সবাই একসঙ্গে কোমরে গামছা জড়িয়ে উৎরে দিতো। ভোরবেলা আযানের সুরে ঘুম ভাঙতো, সন্ধ্যায় আরতির শঙ্খ ঘন্টার ধ্বনীতে মুখরিত হতো, তবে রোগ ব্যাধি আর সন্তান ভূমিষ্ঠের জন্য মুকুন্দ কবিরাজ আর সরলা দাই এর উপর নির্ভর করতে হতো। ঢেঁকিতে চাল কোটার সঙ্গে মেয়েদের সুরেলা গলার সুর ভাসতো সকালের বাতাসে। গোয়ালে গরু বাছুর ছিলো, চাষীর অহংকার ছিলো নাঙল বলদ। tপুকুর খাল বিল নদীতে নানা রকম মাছে পরিপূর্ণ ছিলো। eপ্রচুর অর্থ ছিলো না, হয়তো স্বাচ্ছন্দ্যের ঘাটতি ছিলো, কিন্তু সুখ ছিলো শান্তি ছিলো ভালোবাসা .nছিলো! aগোটা গ্রামটাই ছিলো একটা পরিবার। hityহঠাৎ কেমন করে যেন চোখের সামনে বেহাত হয়ে গেল নদীটা, aনদী যখন থেকে হারিয়ে গেল তখন থেকেই শুরু হলো ভাঙন••• lasমেঠো রাস্তার বদলে মাঠের বুক চিড়ে চলে এলো পাকা রাস্তা, রেল লাইন, গরুর গাড়ি পালকির বদলে মোটর গাড়ি, রেলগাড়ি! ngনতুন নতুন মানুষের আনাগোনা, নদীর বুকের উপর মাথা তুললো কংক্রিটের জঙ্গল, আধুনিক aহওয়ার জন্য ইঁদুর দৌড়ে জড়িয়ে গেলাম সকলে। Bশিক্ষা চাই সুরম্য অট্টালিকা চাই, বিত্তশালী না হলে সমাজে অপাংক্তেয় হয়ে থাকতে হবে, তাই বিবিধ ফিকিরে অর্থ উপার্জনের চেষ্টা ও অপচেষ্টার জন্য জন্ম নিলো অবিশ্বাস ভেদাভেদ সংকীর্ণতা ইর্ষা দ্বেস অহংকার, আত্মসুখের জন্য যৌথ পরিবার গুলি টুকরো টুকরো হয়ে গড়ে উঠলো অণু আরও ভেঙে পরমাণু পরিবারে। সন্দেহের বিষবাষ্পের আগুনে মনুষ্যত্ববোধ হারিয়ে গেল ক্রমশ, যান্ত্রিক সভ্যতা আমাদের রোবোটিক করে তুললো, শুধু স্বার্থচিন্তায় ভুলে গেলাম ভালোবাসতে। পাশের বাড়িতে কে থাকে সে কথা জানতেও চাই না, শুধু দৌড়, কে কতো অর্থ আয়ের জন্য ছুটতে পারে তারই প্রতিযোগিতা। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 100 গ্রামকে গিলে ফেলছে শহরের মেকী জৌলুস, আয়ের দড়জা খুলে যেতেই ভোগ বিলাসের পসরা নিয়ে হাজির একশ্রেনীর শোষক। মল মাল্টিপ্লেক্স মিডিয়া মোবাইল আমদের জীবন ধারার উপকরণ। আমরা আরও এগিয়ে চলেছি পঞ্চম জেনারেশনের ডিজিটাল যুগে। যদিও আমার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে তবুও শুরুটা দেখতে পারছি কিন্তু শেষ কোথায় হবে জানিনা। আমাদের শৈশবে কবির লেখায় জেনেছিলাম, \"ভবিষ্যতের জন্য এই পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে যাওয়ার কথা\" আর এখন বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিকদের লেখায় ভাষণে শুনতে পাই, আগামী এক'শ বছরে হয়তো এই সুন্দর পৃথিবীটাকে হারিয়ে অন্য কোন গ্রহে আশ্রয় নিতে হবে ; কারণ এই পৃথিবীটা আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আর বাসযোগ্য থাকবে না।। itya.net( খুবই সংক্ষিপ্ত আকারে আমার অতীত বতর্মান আর নিকট ভবিষ্যতের কথা এটা, ভালো মন্দ hআগেও ছিলো এখনো আছে ভবিষ্যতেও থাকবে এ নিয়ে অনেক বিতর্ক হতে পারে, ভিন্ন মতও aযথেষ্ট জোরালো হবে নিশ্চিত। তবে গ্রাম থেকে নগরে আর নগর থেকে অনিদৃষ্টের যাত্রাপথে আমরা Banglasকি হারালাম আর কি পেলাম নিজের কাছেই তার জবাবদিহি করার সময় এসেছে। ) ***** www.banglasahitya.net
Search
Read the Text Version
- 1
- 2
- 3
- 4
- 5
- 6
- 7
- 8
- 9
- 10
- 11
- 12
- 13
- 14
- 15
- 16
- 17
- 18
- 19
- 20
- 21
- 22
- 23
- 24
- 25
- 26
- 27
- 28
- 29
- 30
- 31
- 32
- 33
- 34
- 35
- 36
- 37
- 38
- 39
- 40
- 41
- 42
- 43
- 44
- 45
- 46
- 47
- 48
- 49
- 50
- 51
- 52
- 53
- 54
- 55
- 56
- 57
- 58
- 59
- 60
- 61
- 62
- 63
- 64
- 65
- 66
- 67
- 68
- 69
- 70
- 71
- 72
- 73
- 74
- 75
- 76
- 77
- 78
- 79
- 80
- 81
- 82
- 83
- 84
- 85
- 86
- 87
- 88
- 89
- 90
- 91
- 92
- 93
- 94
- 95
- 96
- 97
- 98
- 99
- 100
- 101
- 102
- 103
- 104
- 105
- 106
- 107
- 108
- 109
- 110
- 111
- 112
- 113
- 114
- 115
- 116
- 117
- 118
- 119
- 120
- 121
- 122
- 123
- 124
- 125
- 126
- 127
- 128
- 129
- 130
- 131
- 132
- 133
- 134
- 135
- 136
- 137
- 138
- 139
- 140
- 141
- 142
- 143
- 144
- 145
- 146
- 147
- 148
- 149
- 150
- 151
- 152
- 153
- 154
- 155
- 156
- 157
- 158
- 159
- 160
- 161
- 162
- 163
- 164
- 165
- 166
- 167
- 168
- 169
- 170
- 171
- 172
- 173
- 174
- 175
- 176
- 177
- 178
- 179
- 180
- 181
- 182
- 183
- 184
- 185
- 186
- 187
- 188
- 189
- 190
- 191
- 192
- 193
- 194
- 195
- 196
- 197
- 198
- 199
- 200
- 201
- 202
- 203
- 204
- 205
- 206
- 207
- 208
- 209
- 210
- 211
- 212