বাংলার সেরা ২৫ প্র থ ম সং স্ক র ণ ২ ০ ২ ২ BANGLASAHITYA.NET আ ধু নি ক বাং লা র সে রা ২ ৫ জ ন ক বি ও সা হি ত্যি কে র লে খা ক বি তা ও গ দ্য সা হি ত্য ! !
Banglasahitya.net
বাংলাসাহিত্য.নেট প্রকাশিত বাংলার সেরা ২৫ Banglasahitya.net banglasahitya.net প্রথম সংস্করণ ২০২২
Banglasahitya.net
Banglaজsয় aশ্রী hগোiপাtলya.net হে কৃষ্ণ করুনাসিন্ধো দীনবন্ধু জগৎপতে। গোপেশ গোপীকা কান্ত রাধা কান্ত নমহস্তুতে ।। Banglasahitya.net
Banglasahitya.net
একটি ওয়েবসাইট যার প্রকৃত উদ্দেশ্য বাংলা সাহিত্যের মানবিক এবং সামাজিক প্রচার ও প্রসারণ। মূলত সাহিত্য প্রেমী পাঠক-পাঠিকাদের কথা মাথায় রেখে এই ওয়েবসাইটের পথচলা শুরু হয়েছে। বিভিন্ন খ্যাতিমান ও আধুনিক সাহিত্যিকের লেখা দ্বারা এই ওয়েবসাইটটি সজ্জিত করা হয়েছে। \"বাংলার সেরা ২৫\" এই ডিজিটাল বইটি সেইসমস্ত গুণমান ২৫ আধুনিক সাহিত্যিকের লেখা নিয়েই তৈরী হয়েছে। এটি একটি বাৎসরিক পুস্তক এবং এটিই আমাদের প্রথম সংস্করণ। আমরা বাংলাসাহিত্য গ্রন্থাগারের পক্ষ থেকে সমস্ত লেখক - লেখিকাদের স্বশ্রদ্ধ প্রণাম, অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের সকলের আশীর্বাদ ও ভালোবাসায় পরিপূর্ণ হয়ে banglasahitya.net এই ডিজিটাল লাইব্রেরিটি সমস্ত সাহিত্যিক ও পাঠক পাঠিকা -এর কাছে হয়ে উঠুক বাংলা ভাষা তথা বাংলাসাহিত্যের এক পীঠস্থান !! সৌরভ মন্ডল কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক Banglasahitya.neহাtসান মন্ডল Banglasahitya.net
Banglasahitya.net
সূচীপত্র ক্রম লেখক/লেখিকা বিভাগ শিরোনাম পৃষ্ঠা ১ নীতিশ বর্মন কবিতা কৈশোরের হারানো খাতার কবিতা 12 ২ পূরবী দত্ত প্রবন্ধ বিশ্বে প্রাণের সৃষ্টির-- বৈজ্ঞানিক তথ্যের 15 সাথে বেদ, পুরাণ কি বলে? ৩ শিপ্রা মুখার্জি কবিতা মেকি রাজার দেশ 20 ৪ শিপ্রা মুখার্জি গল্প মার্থার প্রেম 22 ৫ পৃথা চ্যাটার্জী কবিতা ধর্ষণ 29 ৬ পৃথা চ্যাটার্জী গল্প আরো একটা ভালোবাসার দিন 31 ৭ অভিজিৎ চ্যাটার্জী গল্প বিন্তির কথা 35 ৮ শিপ্রা মুখার্জি উপন্যাস নাতাশা 39 Banglasahitya.net৯ 97 প্রদীপ আচার্য্য গল্পকবিতা একটা নদী হারিয়ে যাবার কথা ১০ শংকর ব্রহ্ম প্রবন্ধ স্প্যানিশ কবিতার সংক্ষিপ্ত রূপরেখা 101 ১১ অসীম দাস কবিতা দুরু দুরু ভাবনা ভাসাই 143 ১২ সুব্রত মিত্র কবিতা আমি রিক্ত সৈনিক 145 ১৩ কৌশিক গাঙ্গুলী কবিতা ধূসর প্রান্তর 147 ১৪ বিশ্বজিত নাগ কবিতা বিনিসুতোর সম্পর্ক 149 ১৫ নন্দিনী আরজু রুবী গল্প মাঙ্গলিক 151 ১৬ সমর্পিতা দে রাহা গল্প বাস্তব ঘটনা 155 ১৭ রঞ্জনা গুহ কবিতা দেশমাতা ও দেশসেবকদের প্রণাম 158 ১৮ মধুছন্দা গাঙ্গুলী কবিতা ভালো লাগার পরশ 160
সূচীপত্র ক্রম লেখক/লেখিকা বিভাগ শিরোনাম পৃষ্ঠা ১৯ সুদর্শন দত্ত কবিতা মায়াজাল 162 ২০ উপেক্ষিৎ শর্মা কবিতা সমকামী দম্পতির নৈতিক পদাবলী 164 ২১ উপেক্ষিৎ শর্মা গল্প হোমওয়ার্কের টানাপড়েন 166 ২২ চিন্ময় ব্যানার্জী কবিতা দময়ন্তী 172 ২৩ মৃন্ময় সমাদ্দার কবিতা শুভেচ্ছা 177 ২৪ মৃন্ময় সমাদ্দার গল্প বেড়ানোর আনন্দ 179 ২৫ ঝর্ণা দাস কবিতা অধরা ভালোবাসা 183 ২৬ সাবিত্রী দাস গল্প ভালোবাসার আলো 185 Banglasahitya.net২৭ মনীষা পলমলগল্প মহামারী 180 ২৮ শাশ্বতী দাস গল্প দত্তক 183 ২৯ মনীষা পলমল প্রবন্ধ মাটি মাখা ভাঙা মনের পুরাণ 189 ৩০ সুনির্মল ঘোষ কবিতা মহাশ্বেতা একটা গোলাপ নিও 192 ৩১ রাণা চ্যাটার্জী কবিতা অবজ্ঞায় সুখ সঞ্চয় 194 ৩২ শাশ্বতী দাস কবিতা ঝরা পাতা 197 ৩৩ নীতিশ বর্মন কবিতা হরিনাথ সরকার যা বলতে পারেননি 199
Banglasahitya.net
কৈশোরের হারানো খাতার কবিতা কবিতা নীতিশ বর্ম ন www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 13 কৈশোরের হারানো খাতার কবিতা --- নীতীশ বর্মণ স্পর্শ কৈশোরের স্মৃতির আলপথে ধূসর রোদমাখা দিনগুলো যদি কখনো ফিরে আসে যদি ফিরে আসে বাবার শাসন, সেই স্মৃতিময় কুটির , ভেসে আসে মা'র সুমধুর কন্ঠের তৃষ্ণা etলক্ষ্মীর ব্রতকথা, সাধের পেয়ারা গাছে .nপাখি এসে করে কোলাহল,তাহলে কি মাকে দেখতাম নদীর চরের বুক থেকে aঅস্তমিত সূর্যের লাল আভা বালি সরিয়ে মাটির কলসী ভরে yআগের মতই ছুঁয়ে যাবে হারাধন কাকার জল আনতেন ঘরে ; Banglasahitখড়ের চালের বসতবাড়ি ? উদাসী কদম গাছের পাশে নদীঘাট, নদীর চর আছে কি আগের মত ? এখনো কি মা'র মত কেউ কলসী কাঁখে শীতল জলের মত একবুক স্বপ্ন ভরে ফিরে ঘরে ? আর আমার মত কেউ দুহাতের গণ্ডুষে জল ভরে মেটায় এক বুক তৃষ্ণা ? www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 14 কৈশোরের হারানো খাতার কবিতা --- নীতীশ বর্মণ আনন্দ শহর না গ্রাম তখন ঠিক বুঝিনি চেষ্টাও করিনি কখনো , তিন মাইলের পথ হেঁটে রোজ স্কুলে যাওয়া আর টিফিনে দশ পয়সার কাঠি লজেন্স কিংবা কালিদার চায়ের দোকানে প্রেম etপঁচিশ পয়সার সিঙাড়া .nভাগ করে খাওয়ার উদ্দাম উচ্ছ্বাস ,তখন একটু বড় হওয়া, aআর সারা টিফিন জুড়ে একা একা বন্ধুদের সাথে অষ্টমী মেলা yচোখে মুখে এক পরম ঘুরে নাগরদোলায় চড়া, itতৃপ্তির ছায়া লেগে থাকা, মেলা থেকে এক টাকার একটি শঙ্খের Banglasahএর নামই কি ছিল আনন্দ ? আংটি কিনে অতি সংকোচে প্রিয় বান্ধবীর দিকে হাত বাড়িয়ে উপহার দেওয়া, দুজনের চোখে অপলক নিষ্পাপ হাসির চাওনি মুখে একরাশ নিস্তব্ধতা.. বুকে এক শিহরণ বয়ে যাওয়া, এর নামই কি ছিল প্রেম? www.banglasahitya.net
বিশ্বে প্রাণের সৃষ্টির - বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে বেদ, পুরাণ কি বলে? প্রবন্ধ পূরবী দত্ত www.banglasahitya.net
পুরাণ কথা, বিজ্ঞান ও বেদ পৃষ্ঠা || 16 --- পূরবী দত্ত বিশ্বে প্রাণের সৃষ্টির-- বৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে বেদ, পুরাণ কি বলে? কোন সূত্র, কোন ব্যবধান, কোন রহস্য কি কিছু আছে না শুধুই কাকতালীয় এক উপক্রমনিকা। সব কিছুই যে এখনও অজানা। আর বিজ্ঞান ত শেষ কথা বলে না, বলতে পারে না। যাক্ পুরাণ আদিকথায় পাতায় পাতায় অবিশ্বাস্য সত্যরূপ বিচিত্র কথার মহাযাদু। পুরাণে আছে, বিষ্ণুর দশাবতার। তারা হলেন -- মৎস্য, কূর্ম, বরাহ, নৃসিংহ, বামন, পরশুরাম, রাম, বলরাম, বুদ্ধ, কল্কি। tঅবশ্যই বৈজ্ঞানিক মতে গ্রহ ও উপগ্রহ এ প্রাণের অস্তিত্ব সম্ভবপর যদি সেখানে অক্সিজেন eসমৃদ্ধ বায়ু আর জলের উপস্থিতি থাকে। জলেই প্রথম উদ্ভিদ ও প্রাণের আবির্ভাব যে। এই .nবৈজ্ঞানিক তথ্যের সাথে অদ্ভুত মিল দেখা যায় বিভিন্ন দেশের \"মাইথোলজি\"তেও । ityaহিন্দু পুরাণে বিষ্ণুর প্রথম অবতার \"মৎস্য\" যার কিনা জলে বাস। ডারউইনের বিবর্তনের সাথে মিল hখুঁজে পাওয়া যায় এই বিবর্তনের। ঊনবিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি ১৮৫৯ চার্লস ডারউইন \"অন দ্য saঅরিজিন অব স্পিসিস\" প্রকাশ করেন। প্রথমে এক প্রজাতি থেকে আরেক প্রজাতির উদ্ভবের নানান laধারণা প্রচলিত ছিল । ngপ্রথম জলচর মৎস্য, পরে উভচর কূর্ম, স্থলচর বরাহ, নৃসিংহ ( নর আবির্ভাব পশুতে),মনুষ্যাকৃতি -- Baবামন, পূর্ণমানব (high IQ)-- পরশুরাম, দেবমহিমায় ---রাম, বলরাম, বুদ্ধ, আর এখনও কল্কি অনাগত। কিছু বিজ্ঞানগত মিল কিছু মিথ মিলমিশ---- এ গল্পে অনেক কিছুর ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পুরাণ ত স্মৃতি শাস্ত্র কিন্ত বেদ শ্রুতিশাস্ত্র আর বেদ প্রথম কিন্তু শ্রবণ করেন এক অসুর। কিভাবে সে অসুরের কাছ থেকে বেদ উদ্ধার করেন প্রথম মৎস্য অবতার, সেই কথাই এখানে বিবৃত করবো। একটা কথা তার আগে বলে নিতে চাই, বিজ্ঞান বলে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ড একবার সঙ্কুচিত হয় ও একবার প্রসারিত। বর্তমানে বিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। এর পর সঙ্কুচিত হতে হতে বিন্দুতে পরিণত হবে। একইভাবে স্টার ডাস্ট থেকে নতুন স্টারের জন্ম। ক্রমে গ্রহ থেকে উপগ্রহ ইত্যাদি। যত সহজে তিনটি বাক্যে লিখতে পারলাম তেমন কিন্তু ব্যাপারটি এতই সহজ নয়। মস্ত বড়ো হলো সময় ও ডাইমেনসন অর্থাত মাত্রা। ত্রিমাত্রিক মানুষ কি করে উপলব্ধি করবে বহুমাত্রিক রূপ!!! আর সময়,কোটি কোটি বৎসর। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 17 শুধুমাত্র উল্লেখ করবার কারণ, এক মিল খুঁজে পাওয়া যায় পুরাণের ব্রহ্মার দিন ও রাত্রির সাথে । ব্রহ্মা দিনকে বলে কল্প ও রাতকে প্রলয়। যখন দিন অর্থাত কল্প, সেইসময় বিশ্ব প্রসারিত হয় , নতুন করে জন্ম ও বিস্তার হয়, আর যখন ব্রহ্মার রাত তখন প্রলয়--- সঙ্কোচন ও ধ্বংস। এবার একটু অংকে আসি। চারযুগ আবর্তিত হয় পর পর-- সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর, কলি, এই চার যুগ হতে সময় লাগে ১২০০০ বৎসর ১২০০ মানুষ বর্ষে এক যুগ,তা হলো কলি, দ্বাপর যুগ কলির দ্বিগুন ২৪০০ বৎসর, ত্রেতা কলির তিনগুণ তাহলে ৩৬০০ আর সত্য কলির চারগুণ---৪৮০০ তাহলে চারযুগ হতে সময় লাগে ১২০০ + ২৪০০ + ৩৬০০ + ৪৮০০ = ১২০০০ বৎসর। এরকম চারযুগ পর পর ৭২ বার আসে তখন বলে মন্বন্তর। এ রকম ১৪ মন্বন্তর হলো ব্রহ্মার একদিন বা একরাত্রি অর্থাত ১২০০০ × ৭১ × ১৪ = ১১৯২৮০০০ মানুষবর্ষ, অর্থাত ১.১৯২ কোটি বৎসর পুরাণ অনুসারে এই হলো বিশ্বের সৃষ্টি ও ধ্বংস লীলার সময় ব্যবধান। ব্রহ্মার এক কল্প থেকে আর এক কল্প হতে তাহলে সময় হলো : t১১৯২৮০০০ + ১১৯২৮০০০ = ২৩৮৫৬০০০ বৎসর। .neবৈজ্ঞানিক তথ্যে পৃথিবীর বয়স নির্ধারিত হয়েছে \"কার্বন ডেটিং\" পদ্ধতিতে ৪.৫৪৩ বিলিয়ন aবৎসর (1billion =100crore) অংকের নিয়মে গড়মিল থাকলেও তথ্যগত যোগসূত্র খুঁজে ityপাওয়া যায়, পৃথিবীর আবির্ভাব ও তিরোধানের। সময়ের গড়মিল এমন হতেই পারে, যেহেতু গোটা hপুরাণ কাহিনী দাঁড়িয়ে আছে নিছক যুগ যুগ পরম্পরা স্মৃতি কথায়। lasaএখন যে বিশাল সোনালী মৎস্যের কথা বলব, তাতে আবার মূলত বেদশাস্ত্র উদ্ধার কথা। বেদশাস্ত্র ত শ্রুতি কথা। ঠিক পুরাণ অনুযায়ী প্রথম তা শ্রবণ করেন এক অসুর, হ্যাঁ এক অসুর প্রথম---কোন ngদেবপ্রতিম আর্য ঋষি নন। ব্রহ্মার রাত অর্থাত তিনি তখন নিদ্রিত, চলছে বিশ্বের ধ্বংসলীলা উল্লিখিত aঐ সময় সীমায় ---সংকুচিত হচ্ছে ক্রমশঃ বিশ্ব ।প্রায় ধ্বংসের শেষ পর্যায়ে। নিদ্রিত অবস্থায় ব্রহ্মার Bমুখ নিসৃত কিছু বাণী তাঁর অজান্তে উৎসারিত হতে থাকল, কে শ্রবণ করলেন, শুনলেন এক অসুর, নাম যার-- \" হয়গ্রীব\" অসুর হয়গ্রীব বেদ শ্রুতিবাণী অনুধাবন করেই সে স্থান ত্যাগ করেন। কিন্তু শ্রীহরির কাছে কিছু গোপন থাকে না। শ্রীহরি তখন বেদ উদ্ধার প্রকল্পের জন্য প্রথম এক অতীব ছোট্ট এক মৎস্যের রূপ ধরে, \"কৃতমালা\" নামে এক নদীতে সন্তরণ করতে থাকলেন। সে সময় রাজর্ষি সত্যব্রত সে নদীতে স্নান সেরে তর্পনের জন্য অঞ্জলিপুটে জল ধরলে, দেখতে পান এক ছোট্ট সোনালী মৎস্য তার হস্তে। মৎস্যটি কাতর কণ্ঠে বলেন, \"হে কৃপাবৎসল রাজা, আমার নাম \"শফরী\"। আমাকে এই নদীর জলে ত্যাগ করবেন না। আমাকে কেউ না কেউ খেয়ে ফেলবে। \" www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 18 রাজা ছোট্ট মাছের কথা শুনে অবাক হলেন ও যত্ন করে কমন্ডুলুর জলে আশ্রয় দিলেন। পরদিনই মাছের আকার এমন বেড়ে গেল যে রাজা তখন তাঁকে কমন্ডুলুর থেকে এক বড়ো কলসীতে রাখলেন। আশ্চর্য, পরের দিনই শফরীর শরীর আরও বিশাল হলো। মাছের অনুরোধে তখন রাজা তাঁকে এক সুবিশাল সরোবরে ছেড়ে দিলেন। তার পরদিনই শফরীর শরীর আরও বৃহৎ হলো। সে বললে রাজাকে, \"তাঁর কষ্ট হচ্ছে, আরও বড়ো পরিসরে যেতে চাই। \" কিন্তু তার পরের দিন সে মৎস্যের শরীর সরোবর মতোই বিশাল হলে, রাজা তাঁকে মস্ত বড়ো এক হ্রদের রেখে আসেন। সেখানেও মাছের এমন বৃদ্ধি হলো যে রাজা সিদ্ধান্ত নিলেন, তাঁকে মহা সমূদ্রে রেখে আসবেন। কিন্তু শফরী নামক মৎস্য অনুনয় করলেন, \"হে রাজন, আপনি আমাকে সাগরে ছেড়ে দেবেন না। ওখানে অনেক হিংস্র জলচর আমাকে মেরে ফেলবে। \" রাজা সত্যব্রত বিস্ময়ের সীমা তখন ছাড়িয়েছেন , হাতজোড় করে বলেন, \"হে রূপধারী মৎস্য, আপনি বলুন আপনি কে? কেনই বা আমাকে এমন রূপ দেখাচ্ছেন?\" etতখন শ্রীহরি নিজ পরিচয় দিয়ে বলেন, .n\"মন দিয়ে শোনো, প্রলয় এখন শেষ পর্যায়ে, আর সাতদিন পর স্বর্গ, মর্ত, পাতাল সব জলের aতলায় ডুবে যাবে, আমি এক নৌকা পাঠাব, সেখানে তুমি, সাতজন ঋষি, সবধরণের বীজ ও ঔষধি ityনিয়ে উঠবে। প্রবল বাতাসে নৌকা স্থির থাকতে পারবে না,সেজন্য আমি সেখানে থাকব। আমার hশৃঙ্গের সাথে কাছি দিয়ে নৌকা বেধে চলবে। \" lasaএ সকল কথা বলে শ্রীহরি অদৃশ্য হলেন। তারপর, যথারীতি সাতদিনের মাথায় সব জল প্লাবিত হলো। স্বর্গ মর্ত পাতাল সব জলের তলিয়ে গেল, দেখা গেলো এক নৌকা। সর্ব আদেশ পালন ngকরেন রাজা, সত্যব্রত। শ্রীহরির স্তব করতে থাকেন। দেখা গেল সে প্রলয় সলিলে এক শৃঙ্গধারী aনিযুত যোজন পরিমিত শরীরের এক স্বর্ণ বর্ণের মৎস্য। তিনি জলে ভাসমান অবস্থায় রাজাকে অনেক Bতত্ত্ব কথা শোনালেন। ইতিমধ্যে প্রলয় সমাপ্তি শেষে কল্প শুরু হলো, ব্রহ্মাও জেগে উঠলেন। শ্রীহরি হয়গ্রীব অসুরকে বধ করে বেদ সকল উদ্ধার করেন, ব্রহ্মা, ফেরত পেলেন। সেই কল্পে, শ্রীবিষ্ণুর অনুগ্রহে রাজা সত্যব্রত হলেন সপ্তম মনু-- বৈবস্বত মনু। \"ঋগ্বেদ\" অনুসারে মনু হলেন পঞ্চ ঋষির পূর্বপুরুষ। তারা হলেন অনুস, দ্রুবস, যদুস, তুর্বসু ও পুরুষ। কিন্তু পুরাণ অনুসারে প্রতি কল্প চৌদ্দটি মন্বন্তর থাকে। এবং ভিন্ন ভিন্ন মনুর নেতৃত্ব থাকে। বর্তমানে কল্পে সপ্তম মনু যার নাম বৈবস্বত। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 19 বিজ্ঞান অনুসারে সংক্ষেপে বলা যায় নক্ষত্রের জন্ম ও মৃত্যু বিশ্ব সৃষ্টি ও ধ্বংস তথা প্রসারণ ও সঙ্কোচন। বর্তমানে বিশ্ব প্রসারিত হচ্ছে। স্টারের জন্ম হয় স্টার ডাস্ট থেকে নক্ষত্র ধুলিতে থাকে অতি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কনা বলা হয় নক্ষত্রের ভ্রুণ। সৃষ্টিকালে নক্ষত্রের জন্ম হয় এই নক্ষত্রের ভ্রুণ থেকেই। নক্ষত্র থেকে গ্রহ উপগ্রহ ও সমস্ত মহা আকাশে নানা ভাসমান ধুমকেতু, নীহারিকা, গ্যালাক্সি, কোয়াসার। প্রাণ আসে নির্দিষ্ট গ্রহ উপগ্রহে, যথাযথ পরিবেশে। তারপর আবার একদিন নক্ষত্রের যৌবন পরে বার্দ্ধক্য, শেষে মৃত্যু আবারও ধ্বংস। সময় শত শত কোটি বছর। Stardust - Star embryo - Baby Star - Star - white dwarf - Supernova - Star dust ( অতি সংক্ষেপে বিবৃত তথ্য) এক অবাস্তব রূপকথাজড়িত পুরাণের সাথে কোথাও যেন আছে এ বিজ্ঞান সত্যের এক যোগ। (পৃথিবীকে বলে \"ব্রহ্মাণ্ড\" অর্থাত ব্রহ্মার অণ্ড। ব্রহ্মা এক বিশাল অণ্ড বা ডিম্ব প্রসব করেছিলেন, তারপর সেখানে জৈব অজৈব সৃষ্টি। তবে ব্রহ্মার লিঙ্গ নির্ধারণ করা কি কোন মনুষ্যের কাজ? এ তত্ত্ব tএখন থাক্। ) .neফিরে যাই কল্প ও প্রলয়ে---- ব্রহ্মার এখন কল্প অর্থাত দিন চলছে তারপর প্রলয় আবার কল্প। aএক কল্প থেকে আর এক কল্প মাঝে প্রলয় - সৃষ্টি থেকে সৃষ্টি মাঝে ধ্বংস। বয়ে চলেছে দিনের ityপর দিন, অনন্তকাল---- সময় অনন্ত, নেই শেষ। ah[কৃতজ্ঞ:ঋগ্বেদ, ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ, অগ্নিপুরাণ, las\"Cosmos\"-Carl Sagan] Bang ***** www.banglasahitya.net
মেকি রাজার দেশ কবিতা শিপ্রা মুখার্জি www.banglasahitya.net
মেকি রাজার দেশ পৃষ্ঠা || 21 মেকি রাজার দেশ --- শিপ্রা মুখার্জি বাঘেরা সব আজ ঝিমিয়ে গেছে কাজের মাসী নেই যে রে ভাই ওরাং ওটাং লাফিয়ে নাচে। গিন্নির তাই ,ছুটি যে নাই । শিব বাবাজির মদের নেশা কত্তা খাটেন, ফুট ফরমায়েশ সঙ্গে খেলেন তাশ ও পাশা। গিন্নি তখন, করেন আয়েশ। .netঋষি মশায় শ্লোগান ছাড়েন ছোট কথা আজ কেউ ভাবে না yaপুজারি যে আজ, মদ্য টানেন। বড় কথাতেই দুনিয়া চেনা। itকবিরা আজ, ফেসবুকে তে। রোগ জ্বালা সব, কোথায় হাওয়া ? hনাপিত ভায়া, মন্ত্র সাথে । গরীব লোকের, দু'বেলাই মাংস খাওয়া glasaছেলেরা দেখে, ভিডিও সুখে nচোদ্দ পুরুষের, ভিটেতে শুয়ে।মুচির দেখা, নেই যে রে ভাই। Baপয়সা কামানো, উঠল মাথায়। ঘরে ঘরে আজ, মুচি সবাই। রাজামশায়ের দু বেলা, দু ' স্যুট। ভরবে রে পেট, নুন পান্তায়। মন্ত্রীরা, সব হ্যায় ঝুঠ্ ঝুঠ্ ঝুঠ্। রাজাযে রোজ, দামী সাজে এমন রাজা দেখি নাই ভাই দাপিয়ে বেড়ায় সেজে গুঁজে। মৃত্যুর কালে যে ওষুধ ও নাই। মঞ্চে তে আসে মাইক হাতে জীবনে তুলসী, মরণে তুলসী গাল ভরা ছবি, গল্প ফেঁদে। তাই তো রে ভাই, কবিতার জমি চষি www.banglasahitya.net
মার্থার প্রেম গল্প শিপ্রা মুখার্জি www.banglasahitya.net
মার্থার প্রেম পৃষ্ঠা || 23 মার্থার প্রেম --- শিপ্রা মুখার্জি 'মার্থা, প্লীজ' , একটু বোঝার চেষ্টা কর'। গাড়িটা সাঁ সাঁ করে ছুটে চলেছে। সব ভুলতে চায় মার্থা। সব ভুলতে তো ছুটে এসেছিল। কিন্তু পারছে কৈ!! এই সমুদ্র নগরী কে ছেড়ে গিয়েছিল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ এ পড়তে। সেখানেই tপ্রথম দর্শনে ভাল লেগে গেল লাজুক লাজুক, সুন্দর চেহারার মৈনাক ভট্টাচার্য কে। মেদিনীপুরের eঘাটালে ওদের বাড়ি। ভক্তি ভাব আর সদাচারের লেবেল আঁটা সারা দেহে। মৈনাকের ঐ গেঁয়ো .nভাবটাই বেশী টেনে ছিল মার্থা কে। ityaহাত ঘড়ি টা একেবার দেখে নিল মার্থা। এখন ও পাক্কা দু'ঘন্টা হাতে আছে। মেডিক্যাল কলেজ hথেকে পাশ করার পরই ওরা দু'জন ভাইজ্যাগ এ চাকরি পেয়ে গেল। ভাইজ্যাগ এর কিং জর্জ saহসপিটাল এ। সেই থেকেই ওদের গাঢ় ঘনিষ্ঠতা আঠালো হল। গাড়ি টা বিচ্ রোড এ পড়তেই laভাবনাটা চটকে গেল। না। আর না। আর ভাববে না ওর কথা। নিজেকে আর টর্চার করবে না ওর gকথা ভেবে। ডান হাতে সমুদ্র কে রেখে' আর কে বিচ' পার হল গাড়িটা। Banআজ কৈলাশের জন্ম দিন। ইচ্ছে করেই এই দিন টা বেছে নিয়েছে মার্থা। পাঁচে পড়ল আছ কৈলাশ আজ। খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে কিন্তু কোন উপায় নেই। আগে বাড়িতে যেতে হবে। বাড়ির কেয়ার টেকার কে ফোন করে আগেই জানান হয়েছে। কেয়ার টেকার স্যামুয়েল ও তার বৌ মার্থার বাড়ির দেখভাল ভাল ভাবেই করে। চার বছর পর মার্থা এই প্রথম এলো ভাইজ্যাগ। অনেক বদলে গেছে ভাইজ্যাগ। রাস্তা ঘাট একেবারে ঝক ঝকে তক্ তকে। সমুদ্রের পাড়ে বসার জন্য মার্বেল এ মোড়া বেদী। নজরে পড়ার মতোই রাজকীয় বন্দোবস্ত। কর্পোরেশন এর গাড়ি মোটা পাইপ দিয়ে সেই সার দেওয়া বসার বেদী ধুইয়ে দিচ্ছে। বিচ্ রোড ধরে গাড়ি চলেছে । কৈলাশগিরি হয়ে মার্থার গাড়ি ছুটছে, সোজা বিমুনি-পত্তনম এর দিকে। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 24 বাঁ হাতে ইষ্টার্ন ঘাট পর্বত মালা আর ডান হাতে অনন্ত সাগর। ফেননীভ ঢেউ আছড়ে পড়ছে পূর্ব ঘাট পর্বত মালায়। সমুদ্র আর পাহাড়ের মাঝখান দিয়েই চলেছে মার্থার গাড়ি। ঠান্ডা হাওয়ার ঝাপ্ টা মার্থার মগজ কে বিলি কেটে সুবিন্যস্ত করে চলেছে। শিরা উপশিরাগুলো-কে সতেজ করে তুলছে। কোথায় পৌঁছে গেছে মার্থা !! মনে হল কোন অনাদি কালে পৌঁছে গেছে। মৈনাক- \"মার্থা,! প্লিজ। একটু বোঝার চেষ্টা করো\" । নো-নট পসিবল। প্লিজ, ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড মাই পোজিসন। তুমি আমার জায়গায় হলে কি করতে ? মৈনাক - আই কান্ট আন্ডারস্ট্যান্ড। তোমার এমন কি হয়েছে যে দু'বছর অপেক্ষা করতে পার না ? তাছাড়া বাবার এখন ক্যান্সার এর ট্রিটমেন্ট চলছে । ভাল রেসপন্স করছে বাবা। - খালি, বাবা বাবা করছো। সোজা কথা বলছো না কেন ? তোমার বাবা চান না তুমি একজন খৃষ্টান মেয়েকে বিয়ে কর। t- ইয়েস। দ্যাট্ স ট্রু। বাট, আমি তো তোমাকে ভালবাসি। তোমাকে চাই। কিন্তু তুমি একটু ও eঅপেক্ষা করতে পারছো না ? প্লিজ। শুধু আমার বাবার কথা ভেবে। এতো তাড়াহুড়োর কি আছে .nআমি বুঝিনা । ityaনিরুপায় মার্থা জ্বলে উঠল- হাউ, সেলফিস আর ইউ? ইউ আর নট্ কন্সিডারিং মাই পোজিসন । ঠিক hআছে। সো দিস ইজ দা লাস্ট টাইম উই আর মিটিং। এই শেষ। বাই বলেই ছিটকে বেড়িয়ে এসে aছিল মৈনাকের ঘর থেকে। কানে এসেছিল মৈনাকের অনুনয়। প্লিজ, মার্থা। যেও না । lasবাকিটুকু না শোনার জন্য ই গাড়ির জানালার সমস্ত সার্শি নামিয়ে দিয়েছিল মার্থা। গাড়ি ছুটিয়েছিল ngচার্চের দিকে। নিজেকে হালকা করতেই চার্চে যাওয়া । Baইচ্ছে করেই বাড়ির পথে যায়নি। কি করে যায়! মৈনাক এসে হাজির হলে কি মার্থার চেপে রাখতে পারবে তাঁর সেই লজ্জার কথাটা ? সব দোষ তো মার্থার। মৈনাক আগে থেকেই নিজেকে ক্লিয়ার করে রেখেছিল- মার্থা ডোন্ট ফরগেট টু টেক পিলস। দু' বছর আগে কিন্তু বিয়ে করতে পারছি না। মার্থা আর কিছুই ভাবেনি। ডুবে গেছে দয়িতের বুকে। নিজের আলুলাইত কেশে ঢেকে ফেলেছে মৈনাকের মুখ। তারই ফাঁকে ফাঁকে দৃশ্যত মৈনাকের যেটুকু ওষ্ঠো, তা চেটে পুটে নিয়েছে নিজের লেলিহান জিহ্বায় । দয়িতার গলার স্বরে বাঁধ ভেঙে গেছে মৈনাকের। প্লিজ, মৈনাক। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 25 সেদিন মৈনাকের ঘর থেকে বেড়িয়েই মনে হল কিছু একটা গড়বড় হয়ে গেছে। হ্যাঁ। ঠিক ই ভেবেছে সে। আজ পিল টা তো খাওয়া হয় নি ! তারপর ই নিজেকে সান্ত্বনা দিল। যা হওয়ার তা হয়ে গেছে। এখন তো আর ফেরার উপায় নেই ! না যাবে না ফেরা। কিছু ঘটে গেলে মৈনাক কি দায় টা এড়িয়ে যাবে! না। তা যাবে না। দেখতে দেখতে পনের দিন পেরিয়ে গেল। সব লক্ষণ মিলে যাচ্ছে। না আর দেরি করবে না। জানাতেই হবে মৈনাক কে। কিন্তু মৈনাকের বাবার কেমো থেরাপি চলছে। কি করেই বা বলে। একেই বাবার জন্য চিন্তিত তার মধ্যেই মার্থা একটা উটকো ঝামেলা বাঁধিয়েছে। বলা ঠিক হবে কি ? দেখতে দেখতে একটা মাস পেড়িয়ে যেতে ভয় পেল মার্থা। মৈনাকের সাথে দেখা হল হসপিটালেই। বাবার কাছেই ছিল। অদ্ভুত অনুভূতি হলো মার্থার। একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ হওয়া সত্ত্বেও এত tলজ্জা মার্থার ! ভাবতেই পারছে না কি ভাবে শুরু করবে। কি বলবে মৈনাক কে। শেষ অবধি বিয়ের eকথাই বলে বসল। নিজেকে খুলে মেলে ধরতে পারলনা মৈনাকের কাছে। আসল কারণ টা বলতে .nপারলো না। মন বলছিল অনেক কথা। ityaমৈনাক তুমি যে আমার সন্তানের পিতা। আসতে দাও তাকে সসম্মানে। সে যেন হারিয়ে না যায়। hভালবাস তাকে। পিতার ধর্ম পালন কর। জাত ধর্মের খোলস মুক্ত হয়ে মনুষ্য ধর্ম পালন কর হে aমৈনাক। lasগাড়ির হর্ন বাজতেই মার্থা চোখ মেলল। ড্রাইভার গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়ে আছে। বাড়ির কেয়ার ngটেকার স্যামুয়েল এর হাতে স্যুটকেস। চোখে মুখে খুশির হাসি স্যামুয়েল এর। আইয়ে ডক্টর আম্মা। aএয়ার পোর্ট থেকে সোজা আসছে মার্থা ,চার বছর পর ভাইজ্যাগ এ। চার বছরে স্যামুয়েল ও ওর Bমিসেস এর একটুও বয়স বাড়ে নি। বরং মার্থা সরকারের বয়স অনেক টা বেড়ে গেছে। বাড়বে না তো কি হবে? মার্থার মনের বয়স তো অনেক বেশি। সেই গতি ওর চেহারায় অনেক আঁকিবুকি কেটেছে। ঘরের ভেতরে পা দিয়েই সেই পুরোনো অনুভূতি ফিরে এল। মনে পড়ে পুরোন দিনের কথা। সেই দুঃসময়ে লীলা আন্টি বুক দিয়ে আগলে রেখেছিলেন মার্থা কে। লীলা আন্টির গ্রামের বাড়িতে নিয়ে গিয়েছিলেন। মৈনাকের সঙ্গে আর দেখা হয় নি। লীলা আন্টি বলেছেন- -হোয়াই আর ইউ অ্যাভয়ডিং মৈনাক। হি ইজ টু গুড বয়। ইফ ইউ ওয়ান্ট টু মেক ইট সিক্রেট দেন, ইট ইজ ওকে। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 26 পুরনো কথা মনে পড়ছে। মায়ের বান্ধবী লীলা আন্টি। মার্থা সব কান্না একই সাথে কেঁদেছিল। মা হারানোর কান্না। মৈনাক কে হারানোর কান্না। কুমারী মেয়ের অজান্তেই মা হবার কান্না কেঁদেছিল মার্থা, লীলা আন্টির বুকে মাথা রেখে । জড়িয়ে ধরে লীলা আন্টি বলেছিলেন। - ডোন্ট ক্রাই। তুমি মৈনাকের এই সন্তান চাও না ? শিউরে উঠেছিল মার্থা - না না । আমি ওকে চাই । খুশি হয়েছিলেন আন্টি। বলেছিলেন - গুড। সব ঠিক হয়ে যাবে। চিন্তা করো না। মন ফিরল বর্তমানে। সুন্দর ছিমছাম ঘর। ছবির মত সাজানো ঘর। দুধ সাদা ঢাকায় মোরা নরম সোফায় বসে পড়ল মার্থা। সমুদ্র মুখী ফ্ল্যাট। সামনে অতল সাগর দৃশ্যমান । মন ফিরে যায় দুরের জাহাজে। মন উচাটন। একটু পড়েই কৈলাশ কে দেখতে পাবে। কত বড় হলো সে! ফ্রেশ হয়ে ব্রেকফাস্ট করে নিল। পায়ের শব্দে ফিরে তাকাল মার্থা। স্যামুয়েল ঘরে এসেছে। গাড়ি এসেছে কিনা জিজ্ঞাসা করতে স্যামুয়েল বলল - আধা ঘন্টামে আ যায়েগা। etতৈরি হতে উঠে দাঁড়াল মার্থা। শোবার ঘরে গেল। দেওয়ালে ফিট করা কৈলাশের একবছর .nবয়সের একখানা ফটো। ছুটে গেল মার্থা ছবির কাছে। এই শিশুই তার সন্তান। একেই গর্ভে aধারণ করেছিল সে!! লীলা আন্টি সে সময়ে তাকে পথ দেখিয়েছিলেন। বুকটা মুচরে উঠল মার্থার। ityএকি করেছে সে ? এতোটুকু শিশুকে রেখে গিয়েছিল একটা অনাথালয়ে! লীলা আন্টি সব ব্যবস্থা hকরেছেন। লোকাল গার্জিয়েন, লীলা আন্টি। কানে ভাসে লীলা আন্টির গলা - তুই, বিদেশে চলে aযা। সুযোগ পাচ্ছিস যখন এম ডি করে এদেশে ফিরিস । আমি যখন থাকব না তখন ছেলেকে নিয়ে lasযাস। ngসফল হয়েছে মার্থা। ওদেশের কারো কে মনে ধরে নি মার্থার। তাহলে মার্থা নিজেও কি রক্ষণশীল aছিল? হয়তো বা। নইলে লীলা আন্টির কাছে জেনেছে যে মৈনাক, কিং জর্জ হসপিটাল ছেড়ে Bআর্মি তে জয়েন করেছে। কোথায় গেছে তা জানা যায়নি। মার্থার থেকে অনেক দূরে চলে গেছে মৈনাক। গাড়ি ছুটছে কৈলাশের সেই মিশনারী স্কুলের কম্পাউন্ডের দিকে। মিশনারী কম্পাউন্ডের ভেতরে অনেক সুন্দর সুন্দর বাচ্চা খেলে বেড়াচ্ছে। মার্থার চোখ খুঁজে ফিরছে সেই এক বছরের দেব শিশুকে। আঁকা বাঁকা পথ দিয়ে সোজা অফিস ঘর পেড়িয়ে মাদারের ঘরে পৌঁছল মার্থা। পরিচয় জেনে হেসে ফেললেন মাদার- কৈলাশ! ইয়র সন! ভেরি ইন্টালি- জেন্ট বয়। বাট ইউ হ্যভ্ টু ওয়েট ফর হিম। হি ইজ আউট নাউ, টু সেলিব্রেট হিজ বার্থ ডে। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 27 - সে কি অতটুকু ছেলে কে বাইরে ছেড়ে দিয়েছেন ? - না না, একা যায়নি। লোকাল গার্জিয়েন নিয়ে গেছেন। - কিন্তু, আমি আসছি তা তো আপনাকে আগেই জানিয়েছি। তাছাড়া লোকাল গার্জিয়েন তো লিলি থমাস। তিনি তো মারা গেছেন। - ইয়েস। মারা যাবার আগেই কর্নেল ভট্টাচার্য কে লোকাল গার্জিয়েন করে গেছেন। ইফ ইউ ওয়ান্ট আই ক্যান শো ইউ দ্যা প্রুফ। তোমার জন্য একটা লেটার ও তিনি রেখে গেছেন। লিলি মাসীর চিঠিটা নিয়ে মার্থা গাড়ির দিকে এগিয়ে গেল। ড্রাইভার গাড়ি নিয়ে চলল কিং জর্জ হসপিটাল এর দিকে। হাতের খামখানা খুলে ফেলল মার্থা। মায়ের মতোই একজন তাকে ভালবেসে ছিল। চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে। তবুও একটা লাইন এ চোখ আটকে গেল। \"হি ইজ ভেরি নাইস ম্যান। ফেমাস এন্ড দয়ালু। তাঁকেই কৈলাশের লোকাল গার্জিয়েন করে গেলাম\"। আবার ও চোখ আটকে গেল আর একটা লাইনে। আশ্চর্য ব্যাপার tতোমার ছেলের সাথে ওর নামের অনেক মিল। তাই মৈনাকের কাছেই কৈলাশ কে রেখে eগেলাম । a.n\"কর্নেল ডক্টর ভট্টাচার্য \" মৈনাক!! নো, নট পসিবল। আমার ছেলেকে দেবো না। - চিৎকার করে ityওঠে মার্থা। ahগাড়ি থামিয়ে দিল ড্রাইভার - আপ ঠিক হ্যায় না ডক্টর আম্মা ! লজ্জা পেয়ে গেল মার্থা। এ কী lasকরছে সে !! ড্রাইভার কে নির্দেশ দিল - গাড়ি ঘোড়াও । ngমাথাটা ঝাঁঝাঁ করছে। মার্থার কি নার্ভ ফেল করছে ? যে ওকে ওর বিপদের সময় পাশ কাটিয়ে aগেছে তাঁকে কখনও কৈলাশ কে পেতে দেবে না। বুকটা হু হু করছে । একেবারের জন্য কৈলাশ Bকে বুকে চেপে ধরতে ইচ্ছে । এবার গাড়ি একেবারেই অনাথালয়ের গ্যারাজ এ ঢুকে গেল। পায়ে পায়ে মার্থা এগিয়ে যাচ্ছে সেখানে। যেখানে মৈনাক ভট্টাচার্য দাঁড়িয়ে। তারই কোলে মার্থার সন্তান। সে চোখে চোখ পড়তেই মৈনাক কৈলাশ কে কোল থেকে নামিয়ে দিল । তখন ই একটা কান্ড ঘটে গেল। সারা পৃথিবী বুঝি দুলে উঠল মার্থার চোখের সামনে । মার্থার কানে আসছে একটা বহু আকাঙ্খিত গলার স্বর। - \"আর ইউ অল রাইট ? টেক ইট ইজি। এভরি থিং ইজ গোয়িং টু বি অলরাইট । মার্থা ! চোখ খোল\" । চোখ বুজে শুধুই উপলব্ধি করছে মার্থা । আবার ও সেই আকাঙ্খিত গলার স্বর। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 28 - কৈলাশ, তোমার মায়ের কাছে এস। মাকে ডাকো। সি ইজ ইয়র মম্। - মম্ । মাই মম্!! ঐ মা ডাকে এত কান্না কেন আসে । এই কান্না থামাবার ক্ষমতা কি মার্থার আছে ! শুধু একজনের ই আছে সে ক্ষমতা । চোখের জলে গাল ভেসে যাচ্ছে। একটা মিষ্টি গলার স্বর - মা, কাঁদছো কেন ? আর তার ছোট্ট হাতের স্পর্শ মার্থার দু'গালে। বাঁধ ভাঙা বন্যার মতো একের পর এক কান্নার স্রোত বেড়িয়ে আসতে থাকে। কানে বাজে-'-নট পসিবল ' ,কুমারী মেয়ের মা হবার কান্না । এই ক'টা বছর ছেলেকে বুকে না পাওয়ার কান্না । ছোট্ট মুখটা মার্থার মুখের ওপর ঝুঁকে পড়েছে। আর সেই বলিষ্ঠ হাত দু'খানা মার্থার পিঠে। কন্ঠে তার আঁকুতি ঝড়ে পড়ছে - প্লিজ, মার্থা । আই অ্যাম ভেরী সরি । টেক ইট ইজি । এভরিথিং উইল বি অলরাইট। মার্থার কানে এল মিষ্টি কচি গলার স্বর। t- ড্যাড, হোয়ের ইজ মাই বার্থ ডে সারপ্রাইজ? eছেলের কথায় মার্থা ফিরে তাকাল মৈনাকের দিকে। মৈনাক হাসছে । ও আঙ্গুল তুলে দেখালো .nমার্থার দিকে। বলল- দেয়ার। ইয়র মম্ ইজ ইয়র বার্থ ডে সারপ্রাইজ। ইজ নট ইট সারপ্রাইজ aমাই সন ? কথাটা বলতে বলতে এক হাতে ছেলেকে অন্য হাতে মার্থা কে জড়িয়ে ধরল মৈনাক। ityদু'চোখে টলমল অশ্রুধারা মার্থার। Banglasah***** www.banglasahitya.net
ধর্ষণ কবিতা পৃথা চ্যাটার্জী www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 30 ধর্ষণ --- পৃথা চ্যাটার্জী ধর্ষণ ধর্ষিতার শরীরে চুম্বন হয়েছে যতবার রক্ত লেগেছে এই সভ্যতায় কলঙ্কিত হয়েছে গোটা সমাজ Banglasahitya.netনারী শরীরের প্রত্যেকটা ভাঁজে রয়েছে নতুনকে সৃষ্টির শুভ সূচনা তাই একই সাথে রক্তাক্ত হয়েছে সৃষ্টি তাই যতবার ধর্ষণ হতে হবে নারীকে ধর্ষিত হবে সমাজ, ধর্ষণ হবে সৃষ্টির রক্ত ঝরবে সভ্যতার শরীরেও আর সেই রক্তই পান করছে রক্ত পিপাসু শরীরী রক্ত পিশাচের দল সভ্যতা আজ তার প্রাণ ভিক্ষা করছে তার অস্ফুট আর্তনাদ যেনো বলছে ধ্বংস হোক এমন পৈশাচিক তৃষ্ণা সে যেনো বলছে এ তৃষ্ণা যে মেটবার নয় এতো রক্ত নেই কোনো সভ্যতার শরীরে www.banglasahitya.net
আরো একটা ভালোবাসার দিন গল্প পৃথা চ্যাটার্জী www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 32 আরো একটা ভালোবাসার দিন --- পৃথা চ্যাটার্জী আরো একটা ভালোবাসার দিন মহুয়া বহুদিন ধরেই রাজীবকে বলতে চেয়েছিল সে ভালোবাসে রাজীবকে। যখনই কথা প্রসঙ্গে মহুয়া কিছু বলতে গেছে রাজীবের কথা তার ব্যবহার মহুয়ার সামনে বাঁধার প্রাচীর তৈরী করেছে। সে অনেক কিছু বলতে চেয়েও কিছুই বলে উঠতে পারেনি। তার আত্মসন্মান তাকে বাঁধা দিয়েছে। কিছু কিছু সময় মহুয়ার ও মনে হয়েছে রাজীব ও হয়তো তাঁকে কিছু বলতে চায়!! আবার পর মুহূর্তেই সে tভেবেছে সবটাই হয়তো তার মনের ভুল। .ne-রাজীব মহুয়া দুজনেই খুব ভালো বন্ধু!! একে অপরের সব কথা দুজন দুজনকে না বলে থাকতে yaপারতো না। দুজনেই পড়া লেখাতে ও খুব ভালো। সারাদিন কলেজে দুজন একসাথে। বন্ধুরা ওদের itখুব ক্ষেপাতো লাভবার্ড বলে, তাতে মহুয়া একটু কপট রাগ দেখালেও মনে মনে তাঁর বেশ ভালোই hলাগতো। কিন্তু রাজীব ভীষন নিরূত্তাপ। কোনো কথাতেই তার যেন কিছুই আসে যায় না। lasaদেখতে দেখতে কলেজের ২টো বছর কি ভাবে পাড় হয়ে গেছে বুঝতেই পারেনি মহুয়া। ফাইনাল gইয়ার সামনে তারপর সবাই যে যার মতো নিজের নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবে কেউ বা nহায়ার স্টাডিসের জন্য তৈরী হবে। কলেজের কমোন রুমে বসে এই সবই ভাবছিল মহুয়া!!! হঠাৎ Baসবাই হৈচৈ করতে করতে ঢুকলো একসাথে, রাজীব ও ছিল সেখানে, তিতলি বলে একজন মহুয়ার সামনে এসে বলল দারুন একটা সারপ্রাইজ আছে তোর জন্য .... সিরিয়াসলি রে ! কেউ ভাবতেই পারিনি আমরা। তিতলি এসে মহুয়াকে এভাবে কথাটা বলায় মহুয়া রাজীবের দিকে তাকায়, রাজীব ও হাসে ওর দিকে তাকিয়ে !!! মহুয়া এবার যেন একটু লজ্জাই পেল.... বলল সড় তোরা যেতে দে আমায়। এবার বিতান বলে উঠলো তুই কি করে মহুয়া? এমন ভাবে লজ্জা পেলি যেন মনে হলো তোকে কেউ প্রেম নিবেদন করতে এসেছে। এবার মহুয়া একটু অবাক হয়ে হল----- তিতলি বলে উঠলো আরে জানিস ইমন আর মিথিলা এতদিন ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিল। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 33 জানিস ওরা ওদের প্রেমের কথা কাউকে জানতে দেয়নি শুধু ওদের বাড়িতেই জানিয়েছে, কারো বাড়িতেই কোনো চাপ নেই। চাকরি পেলেই ওরা বিয়ে করবে!! ফোনে কথাটা না শুনতে পেলে আমরা কিছুই জানতে পারতাম না। ওওও খুব ভালো খবর, কিন্তু এবার সত্যি আমাকে একটু যেতে হবে। কাজ আছে একটা। কি এমন কাজ তোর? কোই আমাকে বলিসনি তো? রাজীব বলে উঠলো। সব কাজই তোকে বলে করবো!! এমন কোনো কথা তো আমি তোকে দিনি রাজীব। বলে মহুয়া বেড়িয়ে গেল। সবাই একটু অবাক হলো, রাজীব ও ! কেউ কখনো মহুয়াকে এভাবে কথা বলতে শোনেনি। তারপর থেকে বেশকিছু দিন মহুয়া কলেজে যায়নি। বন্ধুরা ফোন করলে বলেছে সে লেখাপড়া নিয়ে tএকটু ব্যস্ত!!! রাজীব ও ফোন করে ওর বাড়িতে যেতে চেয়েছিল কিন্তু ও সেদিন বাড়ি থাকবে না eএটা ওটা বলে এড়িয়ে গেছে। বন্ধুরা রাজীবকে বলল কিরে? তোর বেস্ট ফ্রেন্ডকে তো আজকাল .nওনলাইনেও খুব একটা দেখা যায় না!!! খুব মন দিয়ে পড়াশোনা করছে, এবার তো টপ করবে বলে aমনে হচ্ছে। তিতলি বলল ও পড়াশোনায় এমনিতেই খুব ভালো। রাজীব চুপ করে রইলো তেমন কিছু ityবলল না। ahসেদিন সকালে উঠেই মহুয়া ওর ফোন থেকে ফেসবুকে ওন হলো, অসংখ্য সমস্ত পোস্ট প্রেমিক lasপ্রেমিকাদের। সমস্ত কিছু ভুলে গিয়ে মহুয়া ঠিক করলো সে রাজীবকে আজকে তার মনের কথাটা বলেই দেবে। তারপর যা হয় হবে। তাড়াতাড়ি উঠে সে কলেজের জন্য তৈরী হলো। আর যাওয়ার ngসময় একটা কার্ড আর একটা গোলাপ ফুল কিনে নিয়ে গেল, সে রাজীবকে কার্ড আর গোলাপ ফুল aদিয়ে বলবে যে সে রাজীবকে ভালোবাসে। Bক্লাসের পর সে একজনকে জিজ্ঞাসা করল রাজীব কোথায় রে? রাজীব দা? ওকে তো কমন রুমের দিকে যেতে দেখলাম। মহুয়া ছুটে গেল কমন রুমের দিকে। ঢুকতে যাবে এমন সময় রাজীবের গলার স্বর শুনে সে থেমে গেল, রাজীব তিমিরকে বলছিল: এসব ভালোবাসা টাসা বাজে কথা, মেয়েরা ছেলেদের ফাঁসায় নিজেদের হাত খরচ আর টাইম পাসের জন্য। সে এসবে বিশ্বাস করে না। বাইরে থেকে কথাগুলো শুনে মহুয়া ভিতরে গিয়ে আর কিছু বলার প্রয়োজন মনে করলো না। সে মনে মনে ভাবলো যে মানুষের এমন কদর্য ভাবনা মেয়েদের প্রতি তাঁকে প্রেম নিবেদন করতে যাওয়াটা তার ভালোবাসার অপমান। আর তাছাড়া তাঁকে তার মনের কথা জানালে সে হয়তো বুঝবেও না। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 34 সে কিছু শব্দ না করে সেখান থেকে চলে গেল। কিগো মহুয়া দি পেলে রাজীবদাকে ? হ্যাঁ কথা হয়ে গেছে, আমি যাই। বিকাশ কমন রূমে গিয়ে বসেছে, এমন সময় রাজীব বলে উঠলো মহুয়াটা কতদিন হয়ে গেছে কলেজে আসছে না ফোনে ও ভালো করে কথা বলে না। কি যে হয়েছে কে জানে? মহুয়া দি? কি বলছো রাজীব দা!! এইমাত্র আমার কাছে জানতে চাইলো তুমি কোথায়? আমি বললাম কমন রুমে!! বেরিয়ে যাওয়ার সময় দেখা হওয়াতে বলল: তোমার সাথে দেখা হয়েছে, কথা ও হয়েছে। আমার tসাথে? অবাক হয়ে ছুটে বেরিয়ে যায় মহুয়ার খোঁজে। কিন্তু ততক্ষণে মহুয়া চলে গেছে। তারপর eবহুবার ফোন করাতে ও ফোনটা ধরেনি মহুয়া। কলেজে দেখা হলে ও আর সে ভাবে কখনো কথা .nবলনি। আজ আরও একটা প্রেমের দিন। কিন্তু বদলে গেছে অনেক কিছু। মহুয়া আজ অন্য কারো aঘরনী। অন্যকারো ভালোবাসা। কিন্তু মহুয়ার সেদিন সেই গোলাপটা আজ শুকিয়ে ডাইরির পাতার ityসেই ভাঁজেই থেকে গেছে। মহুয়ার নিজের ও হয়তো আজ সেকথা মনে নেই। Banglasah***** www.banglasahitya.net
বিন্তির কথা গল্প অভিজিৎ চ্যাটার্জী www.banglasahitya.net
বিন্তির কথা পৃষ্ঠা || 36 বিন্তির কথা --- অভিজিৎ চ্যাটার্জী সময়টা সত্তর কি বাহাত্তর সাল । ক্লাশ সেভেন টেভেনে পড়ি , তখন ছেলে মেয়ের একসঙ্গে স্কুল করা এক কথায় অসম্ভব। অল্পকিছু ইংরাজি মাধ্যমের স্কুল তখন কলকাতাতে ছিল যেগুলো কো-এড। আরও একটা কথা তখন পাড়াগুলো ছিল এক একটা একান্নবর্তী পরিবার । একথা বলার কারণ একটাই , বর্তমানে সেই সাবেকি পাড়া কালচার আর খুঁজে পাওয়া যায় না। আরও একটা বিষয় tইদানিং বেশকিছু উইচিংড়ে মার্কা জনগণ একটা পূণ্য উপাসনার দিনকে পাশ্চাত্যের চ্যাংড়ামো মার্কা eএকটা প্রেমের দিনের সঙ্গে এক করে ফেলেছে। এদের মত অত্যাধুনিক গণ্ডমূর্খ আর নেই। যাই হোক, .nসেই সময় ছেলে এবং মেয়েদের প্রেম থাকলেও তার বাস্তব রূপায়ণ হতই না বলে চলে। সবটাই yaমনে মনে আর আসা যাওয়ার পথের ধারে আড়চোখে চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ ছিল। পাড়াতে দু একটি itনাকউঁচু বা অমিশুকে পরিবার বাদে অন্যদের বাড়িতে প্রবেশ ছিল জলভাত। আমাদের পাড়াতেও hসরকার আর পাল বংশ ছিল ঠিক এইরকম । অন্যদিকে ব্যানার্জী বাড়ি ছিল এক্কেবারে উল্টো মেরুর। saবনেদি পরিবার, পৈত্রিক ব্যবসা , অঢেল অর্থ , প্রাসাদের মত বাড়ি থাকলেও বাড়ির লোকগুলো laছিল আটপৌরে । সরস্বতী পুজোর দিনে থাকত অঢেল ভোগ খাওয়ার ব্যবস্থা । আমরা অনেকেই gনিজের বাড়ির পুজো ছেড়ে ব্যানার্জী বাড়িতে সকাল থেকে পরে থাকতাম। কাগজের শিকল বানিয়ে nআটকানো, টুনি লাইট লাগানো, ফল ধুয়ে দেওয়া ,অনেক কাজ থাকত । জ্যেঠু আর জেঠিমার নির্দেশ Baঅনুযায়ী কাজ করতাম । সেই এক বছর তাকে দেখলাম। \"বিন্তি\", ব্যানার্জীদের কাজের লোক মানদা পিসির মেয়ে। বয়স হয়ত তখন চার কি পাঁচ। কালো গায়ের রং হলেও মুখটা খুব মিষ্টি ছিল। ছাদে প্যান্ডেল খাটিয়ে পুজো হত। বিন্তি এককোণে চুপ করে বসে পুজো দেখত। অঞ্জলি দিত। ব্যানার্জীদের ছোট ছেলে বাপ্পা আমার সমবয়সি । ও অন্য স্কুলে পড়ত, কিন্তু পাড়ার বন্ধু হিসেবে খুব কাছাকাছি থাকতাম দুজনে । বছর গড়ায়, বিন্তি ওই একদিনই বাপ্পাদের বাড়িতে আসে । বাপ্পার বাবা এইরকম একবছর পুজোতে বিন্তির হাতেখড়ি দিল । জেঠিমা মানদা পিসিকে আদেশ দিলেন রোজ বিন্তিকে নিয়ে আসতে, তিনি পড়াবেন । মানদা পিসি বলেছিল এত ছোট মেয়েকে রোজ রোজ ডেলি প্যাসেঞ্জারি করা কি সম্ভব ? অগত্যা বিন্তির পাকাপাকি ঠাঁই হল ব্যানার্জী বাড়িতে । বাপ্পার নিজের বোন নেই । আমরা ইলেভেনে যখন বিন্তি ভর্তি হল রাজরাজেশ্বরী স্কুলে ফাইভে । ক্রমশ বিন্তি শুধু পদবি অক্ষুন্ন রেখে বকলমে প্রিয়া ব্যানার্জী হয়ে উঠল । জেঠিমা, বাপ্পা আর মাঝেমাঝে জ্যেঠুর শিক্ষাদানে হয়ে উঠতে লাগল লেখাপড়াতে চৌখস । স্কুল বদল হল, গেল লি কলিন্স স্কুলে । আমরা কলেজের শেষ বছরের পরীক্ষা দিলাম আর বিন্তি ফার্স্ট ডিভিশন পেয়ে মাধ্যমিক পাশ করল । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 37 ইতিমধ্যে তিনবারের চেষ্টাতে বাপ্পা ডাক্তারি পড়তে ঢুকল, আমরা কেউ আর্টস কেউ কমার্সেই রইলাম । সময়ের স্রোতে ভেসে আমরা সরকারি চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছি , বাপ্পা ইন্টার্ন, বিন্তি প্রেসিডেন্সিতে ভূগোল নিয়ে সেকেন্ড ইয়ার অনার্স । মানদা পিসি কাজ ছেড়ে দিয়েছে, শরীর খারাপ বলে, তবে মাঝেমধ্যেই আসে, একটা গোটা দিন কাটিয়ে ফিরে যায় । বিন্তি এখন পুরোদস্তুর শহুরে, দক্ষিণ চব্বিশ পরগনার গন্ধ সে কবেই পুঁছে ফেলেছে । বিএসসি পার্ট ওয়ানে দুরন্ত রেজাল্ট করল বিন্তি । আমি কোচবিহারের পোস্টিং, বন্ধুরা যে যার মত কক্ষপথ খুঁজে নিয়েছে, বাপ্পা চন্ডীগড়ে পিজি করছে, ব্যানার্জী বাড়ির সরস্বতী পুজো জৌলুস হারিয়েছে, খবর পাই । কি ভাবছেন বিন্তির জীবনের ইচ্ছেপূরণের গল্প ফেঁদেছি ? আর একটু দেখি বরং । বাপ্পা চান্স পেল চেরিংক্রশ হসপিটাল, লন্ডনে, গবেষণা করতে । পড়তে গেল, বছরে একবার বাড়ি আসে, কালি পুজোর সময়, ভাইফোঁটা সে বিন্তির হাতে নেবেই, তাই । আমি তখন পুরুলিয়াতে, বাপ্পা এলো একটা অবাঙালী বিষাক্ত কিটকে নিয়ে । ছেলেটা উত্তরপ্রদেশের, কর্মসূত্রে আফ্রিকার কোন এক দেশে থাকে, ডেপুটেশনে ইংল্যান্ডে যায় আর কি ভাবে যেন বাপ্পার সঙ্গে পরিচয় হয় । সেই মনোহর tবলে পুরুষের প্রবেশ ব্যানার্জী বাড়িতে । বিন্তি তখন মাস্টার্সের বেড়া সসম্মানে টপকে কর্মক্ষেত্রে eপ্রবেশের চেষ্টা করছে কিন্তু ওই যে মদনদেবের কৃপা । বিয়ে হয়ে গেল, এসেছিলাম, খাটাখাটুনিও .nকরেছিলাম। জ্যেঠু বেশ কয়েক বছর আগেই মারা গিয়েছিলেন । জেঠিমার শরীর ভাল যাচ্ছিল না। aবিয়ের পরে বাপ্পা মা'কে নিয়ে বিলেত চলে গেল, ব্যানার্জী বাড়ি অন্ধকার হল। বিন্তি লন্ডন হয়ে কঙ্গো ityঘুরে উত্তরপ্রদেশের গ্রামের শ্বশুরবাড়িতে থিতু । তার লেখাপড়া ,ক্যারিয়ারের অপমৃত্যু হল। মনোহর hস্টুডেন্ট ভিসা নিয়ে লন্ডনে ছিল, মেয়াদ শেষ হতেই পাততাড়ি গোটাল । বাপ্পাদের জীবন থেকে বিন্তি aহারিয়ে যেতে লাগল । ওর শ্বশুরবাড়ির কোন আতাপাতা জানা নেই । আমাকে ফোনে সব বলল lasএমনকি মনোহর কঙ্গোতে যে হসপিটালে ছিল তার চুক্তি শেষ হতে ও চলে গেছে দেশে এইটুকু খবর সম্বল। এ তো খড়ের গাদায় সূঁচ খোঁজা। আমি তখন আরামবাগের এস ডি ও, কপাল ঠুকে ডি এমকে ngধরলাম। aপ্রথমে বিরক্ত হলেও একঘন্টা সময় দিয়ে সব শুনলেন । বললেন কাজটা রিয়েলি টাফ তবে উনি Bচেষ্টার ত্রুটি রাখবেন না। বাপ্পা সব শুনে এমারজেন্সি ছুটি নিয়ে কলকাতাতে এল, মা'কে মেম বৌয়ের কাছে রেখে। ডি এম দশ মিনিট সময় দিলেন । বাপ্পার কথা থেকে বেশ কিছু নোট নিয়ে বাড়ি যেতে বললেন । ফের চরৈবেতি । কেটে গেল সাত আট মাস । বাপ্পা ঝিমিয়ে গেছে। আমিও ভুলতে বসেছি, ডি এম ততদিনে রাজস্ব দপ্তরের সেক্রেটারি । একদিন দুপুরে হটাৎই ফোন, পরেরদিন দেখা করতে যা খবর পেলাম । কঙ্গোতে চাকরি করত বলে মনোহরের খোঁজ তাড়াতাড়িই পাওয়া গেছে কিন্তু বনিবনা না হওয়ার জন্য বিন্তি তার শ্বশুরবাড়ি ত্যাগ করেছে বহুদিন হল এবং মনোহর বিন্তির বাড়ি ত্যাগের পরে থানাতে ডায়েরিও করেছে । এইটুকু খবর উনি পেয়েছেন, মনোহরের ঠিকানা আমাদের দিচ্ছেন আমরা যেন সরজমিনে তদন্ত করে আসি ,কারণ মনোহরদের বাড়ির রেকর্ড ভাল নয়, কোন অসুবিধে হলে ফোন করতে যাতে উনি সর্বতভাবে সাহায্য করতে পারেন । কৃতজ্ঞতা জানিয়ে রাতেই বাপ্পাকে সব জানালাম। চিন্তিত বাপ্পা বলল সে ছুটি নিয়ে তাড়াতাড়িই কলকাতাতে আসবে । সাতদিনের মাথায় বাপ্পা এল । ডি এম সাহেব লক্ষ্ণৌতে ডি আই জিকে বলে রেখেছিলেন। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 38 দুজনে দেখা করতে উনি এক লিয়াঁজো অফিসারকে আমাদের সঙ্গে জুড়ে দিলেন । শুরু হল বিন্তিকে খোঁজা। মনোহররা যাদব সম্প্রদায়ের। অঢেল বিত্তের মালিক। সে এখানে আর থাকে না, ওর ভাইরা ছিল। যা বলল তার সারকথা মনোহর বিন্তিকে এখানে রেখে ফের বিদেশ চলে যায়, ওর মন মানসিকতার সঙ্গে এদের পরিবারের মিল না হবার জন্য একদিন তুমুল কথা কাটাকাটি হয় আর তার পরেই বিন্তি বাড়ি ছেড়ে চলে যায় ওর সমস্ত গয়না আর কিছু জামাকাপড় নিয়ে । দু তিন অপেক্ষার পরে ওরা থানাতে ডায়েরিও করে, সেই কাগজ দেখলাম। মনোহর খবর পেয়ে এসে বাড়িতে তুমুল ঝামেলা করে সেও চলে যায় আর তারপর থেকে সে কোনও যোগাযোগ রাখে না । সব শুনে আমরা হতবাক । যদিও আমার মনে বিষয়টা নিয়ে একটা খটকা লাগছিল । হোটেলে ফিরে বাপ্পাকে আমার মনের কথা বললাম। সেও বুঝলো । দুদিন পরে ফের গেলাম । একই কথার পুনরাবৃত্তি। চিন্তিত মুখে দুজনে গ্রাম ঘুরছি, হটাৎই আর ক্ষেতের ভেতর থেকে একটা দেহাতী লোক আমাদের ডাকল। কাছে যেতেই সে যা বলল তা শুনে আমাদের চোখ কপালে । ওর কথার সারমর্ম হল, গ্রামটা সবদিক থেকেই পশ্চাদপর, তার মধ্যে মনোহররা পয়সাওয়ালা tএবং গুন্ডাবাহিনী পোষে । তাই ভয়ে বা ভক্তিতে এলাকার মানুষদের কাছে ওরা জমিদার। ওরাও eঅল্প শিক্ষিত,তার মধ্যে মনোহর ডাক্তারি পাশ করাতে ওদের মান ইজ্জত বেড়ে যায় শতগুণ। আরও .nদাপট বাড়ে । আর মনোহর একটা ব্যবসা আরম্ভ করে । সে ওই ডিগ্রি ভাঙিয়ে বিয়ে করে আনে, aমেয়েটার সর্বনাশ করে তার গয়নাগাঁটি কেড়ে নিয়ে হয় তাড়িয়ে দেয় না হলে খুন করে বডি লোপাট ityকরে, শুধু তাই নয় ওর পরিবারের সকল পুরুষরা মেয়েটাকে উপভোগ করত । এরপরে যখন আর hআশেপাশের গ্রাম বা শহর থেকে ও মেয়ে পেল না তখন দেশের বাইরে চাকরি নিয়ে চলে গেল আর aসেখানে জাল বিছিয়ে ব্যবসা শুরু করল । ইতিমধ্যে ওর এক কাকা বিধায়ক আর এক পিসে সাংসদ lasহওয়াতে ওদের প্রতাপ এতটাই বেড়েছে যে কেউই প্রতিবাদ করতে পারে না । পুলিশ প্রশাসনকে ওরা কিনে রেখেছে, নামিদামি উকিল ওদের চাকর, কত বাবা মা মেয়ের খোঁজ করে হয়রান হয়ে ngগেছে কিন্তু ওদের কিছুই হয়নি । ইদানিং ওরা দু'গ্রাম পরে আরেক বাহুবলি উমর শেখের সঙ্গে হাত aমিলিয়েছে, মেয়েগুলোকে গুষ্টিশুদ্ধু ভোগ করে ওর কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে । তোমাদের দেখছি বেশ Bকিছুদিন ধরে, গ্রামে তো কোন কথা চাপা থাকে না, তাই বলছি উমর শেখকে ধরলে তোমাদের মেয়ের সন্ধান পেলেও পেতে পারেন এখানে পাবে না । আর ওরা যদি জানতে পারে আমার কথা তাহলে আমার দিন শেষ, যাও যাও, এখান থেকে এবার চলে যাও । লোকটা আখ ক্ষেতের জঙ্গলে হারিয়ে গেল, আমরা বিমূঢ় । ফিরে এলাম লক্ষ্ণৌতে । ফের জানালাম পুলিশকে, একটু ইতস্তত করে বাহিনী পাঠাল । ধরা পড়ল উমর শেখ, মনোহরের টিকিও পাওয়া গেল না । জারি হল রেড অ্যালার্ট । উমর শেখের কাছ থেকে খবর পেলাম বিন্তির, ছবি দেখে সে চিনতে পেরেছিল । বিন্তিকে উদ্ধার করলাম পুণের এক পতিতালয় থেকে । তখন মোটামুটি অর্ধউন্মাদ । আমি আর বাপ্পা ওকে এনে একটা হোমে রাখলাম । ধীরে ধীরে সুস্থ্য হতে লাগল বিন্তি । এক জারজ কন্যার মা আজ ফের সমাজের মূল স্রোতে ফিরতে পেরেছে। আজ বিন্তি একটা স্কুলের শিক্ষিকা। আমাদের সকলের চোখের মনি বিন্তির মেয়ে মামন। বিন্তির ইচ্ছে ও কলেজের প্রফেসর হবে। আমরা তো আছি, তোমরা থাকবে তো বিন্তির পাশে ? www.ba*n*g*l*a*sahitya.net
নাতাশা উপন্যাস শিপ্রা মুখার্জি www.banglasahitya.net
নাতাশা পৃষ্ঠা || 40 পর্ব-১ --- শিপ্রা মুখার্জি ডায়েরি র প্রথম পাতা খুলল নাতাশা । ব্রিটিশ আমলেই এ দেশে এসেছিলেন মিস্টার ওয়াটসন। ভারত ভাগের পর ইন্ডিয়ান নেভি তে থেকে গেছেন। সবাই চলে গেলেও মিস্টার ওয়াটসন দেশে ফিরে যান নি। তাঁর একমাত্র কারণ মালা নাইডু । তাঁর বন্ধু ভেঙ্কাইয়া নাইডুর দিদির মেয়ে মালা। অপরূপ সুন্দরী মালা। ওয়াটসন tতারই আকর্ষণে থেকে গেছেন ভারতে । ইউনিয়ন চ্যাপেল চার্চে ওদের বিয়ে হয়। তারপর eহিন্দুমতে ও বিয়ে হল । পর্তুগাল আমলের একখানা বিশাল অট্টালিকা সমান বাড়িতে তাঁর বাস। .nমালার বিয়ের আগেই সে বাড়ির ভোল পাল্টেছে । কে বলবে এই বাড়ি সেই বাড়ি ! নাম yaদিলেন \"ওয়াটসন ম্যানসন\"। itমালা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলে পড়া , কেতা দুরস্ত মেয়ে । তাই ওদের কথোপকথনে কোন hঅসুবিধা হয় নি । তাছাড়া মিস্টার ওয়াটসন একটু একটু তেলেগু ভাষা রপ্ত করে নিয়েছিলেন । saমালার ইচ্ছা ছিল পড়াশোনা টা চালিয়ে যাওয়া । কিন্তু মিস্টার ওয়াটসন মালাকে ভালবাসার laঢের লাগিয়ে দেবার অজুহাতে, মালাকে পড়তে দিতে রাজি হলেন না । বললেন- তুমি সকালে gকলেজে চলে গেলে আমার ভাল লাগবে না । তবে আর বিয়ে করলাম কি করতে ? স্বামীর nকথা ফেলতে পারলেন না মালা ওয়াটসন । স্বামীর এক একদিন ,এক এক সময়ে কাজে Baযেতে হয় । যতক্ষণ মিঃ ওয়াটসন ঘরে থাকেন ততক্ষণ মালা তার কাছছাড়া হতে পারে না । মিঃ ওয়াটসনের প্রেমের ,কোন দিন ক্ষণের বালাই নেই । যখন তখন টানতে টানতে নিয়ে চলেছেন শয়নাগারে। । তিনি বেড়িয়ে গেলে তবে ঘরের কাজের দেখভাল করতেন মালা । কাজের লোক দের দেখভাল করাই তার কাজ । সব সময়ের কাজের লোক নাগাম্মা । সে মালার হুকুম তামিল করার অপেক্ষায় থাকতো । নাগাম্মার বয়স চল্লিশ ছুঁই ছুঁই । মুখে সব সময়েই হাসি লেগে থাকে । আর বেশি খুশি হলে মালার গানের সঙ্গে গলা মেলায় । ওর মিষ্টি সুর শুনে মালার গান থেমে যেত । নাগাম্মার কোমড় একটু বাঁকা । দুটো হাত ই পেছনে হেলানো । একটা রোড এক্সিডেন্ট এ এই রকম হয়ে গেছে । তবুও সব ধরনের কাজ করে মালা কে খুশি রাখতে চেষ্টা করে । মালা চায় না যাতে নাগাম্মা কে কোন ঝুঁকির কাজ করতে হয় । তাই অন্য কাজের লোকদের দেখ ভালের দায় ছিল নাগাম্মার উপর । মালা যে নাগাম্মা কে ভালোবাসতেন তা নাগাম্মা বুঝতে পারত । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 41 মিস্টার ওয়াটসন বাড়ি ফিরলে, তাঁর খাবার দাবার টেবিলে সাজিয়ে দেওয়া ও নাগাম্মার কাজ। অবশ্য মিস্টার ওয়াটসন চেয়ারে বসে গেলে ,তাঁর ধারে কাছে যেত না নাগাম্মা। তখন মালাই মিস্টার ওয়াটসন কে খাবার সার্ভ করতেন । মিস্টার ওয়াটসন মালাকে ও একসঙ্গে খেতে বাধ্য করাতেন। খেতে খেতে সব গল্প করতেন। নেভাল বেস এ কোন দিন কি কি হল । কোন বিদেশী জাহাজ দেশের বন্দরে তৈরি হয়ে এদেশে এসেছে । মালা আশ্চর্য হয়ে বলল- তাই নাকি ? ওয়াটসন বললেন- তোমাকে কালই সী পোর্ট এ নিয়ে যাব । দেখবে, কি ভাবে বিশাল বিশাল জাহাজ পোর্ট এ তৈরি হচ্ছে । আশ্চর্য মালা- এ সবই এখানেই তৈরি হচ্ছে ? etওয়াটসন- দেখলে তাজ্জব হয়ে যাবে। চৌকো চৌকো ঘরের মতোই টয়লেট গুলো বিদেশ থেকে .nআমাদের এখানে জাহাজে করে আসছে। একেবারে রেডিমেড টয়লেট। এখানেই জাহাজে ফিট করা aহবে। মালা- সে কি! জাহাজে ফিট করে দিলেই হল? ওয়াটসন- হ্যাঁ। ওয়াটার কানেকশন আর ityলাইট ফিট করতে হবে। নেভাল বেস এ একটা ডুবো জাহাজ এসেছে। যাবে দেখতে ? মালা- যাবো। hকিন্তু তোমার অসুবিধা হবে না তো ? ওয়াটসন- কিসের অসুবিধা ? আমি তোমাকে সব সময়েই aকাছে চাই। lasকথা বলতে বলতেই মালাকে নিয়ে চললেন শয়নাগারে । নীল আলো জ্বলছে শয়নাগারে । যেন একটা স্বপ্নের দেশ । এ ঘরে এসেই মালার প্রথম কাজ ড্রেসিং রুম এ ঢুকে শাড়ি ছেড়ে স্লিপিং গাউন পড়ে ngনেওয়া । নৈশ ভোজের পর মিস্টার ওয়াটসন কাগজ পত্র নিয়ে বসা । মালা আগেই শুয়ে পড়েন । মালা aঘুমিয়ে পড়লেও মিস্টার ওয়াটসন মালাকে জাগিয়ে দেন । সারাদিনের ধকলের পরেও মিস্টার Bওয়াটসন রাতের খেলা না খেলে ঘুমোন না । খেলা শেষে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়েন । পর্তুগাল আমলের ওয়াটসন ম্যানসন চিন্নাওয়ালটেয়র এর একেবারেই সমুদ্র মুখী । সেখান থেকে প্রায় আট কিলোমিটার এর পথ নেভাল বেস । সে আমলে বেশ কয়েকজন মেছোয়ালিদের নিয়ে হয়েছিল লওসন 'স বে । এরপর পুরো শহর টা বেড়ে ওঠে । এই দিকটা তখন ওয়ালটেয়র । আর রেল স্টেশন এর দিকটা বিশাখাপত্তনম বলা হত। সেই স্টেশন এর দিক দিয়েই সোজা চলেছে ওরা নেভাল বেস এর দিকে । গাড়ি চলল ঢালের দিকে। আপ্ ল্যান্ড অনেক উঁচু জায়গা। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 42 সেখান থেকে স্টেশন এর দিকে যেতে গাড়ি গড়গড়িয়ে নিচে নামতে লাগল । ডান এ কৈলাশ গিরি পর্বত মালা চলেছে । ড্রাইভার সামনে চোখ রেখে গাড়ি চালাচ্ছে । মিস্টার আর মিসেস ওয়াটসন পিছনের সীট এ আসীন । মালা নিশ্চুপ হয়ে প্রকৃতির রূপ অবগাহনে মত্ত । এখানে সবুজ গাঢ় । গাছের পাতায় ধুলো জমতে পায়না । তাই এত সবুজ । মনে হচ্ছে প্রকৃতি যেন সবুজ ঢেলে হোলি খেলা করছে । বাঁয়ে সুউচ্চ পাহাড়ের সারি । একের পর এক পাহাড় উঁকি মারছে । মনোরম দৃশ্য এই কৈলাশ গিরিরেঞ্জ এর। পূর্ব ঘাট পর্বত মালার অংশ । দেখতে দেখতে নেভাল বেস এর কাছে এসে গাড়ি পৌঁছে গেল গাড়ি । গেট এ কড়া পাহারা রয়েছে । মিস্টার ওয়াটসন এর গাড়ি দেখে সিকিউরিটি গার্ড সেলাম ঠুকে গেট খুলে দিল । গাড়ি ভেতরে ঢুকে গেল । নেভাল এরিয়ার সব বাড়িই একতলা । ডানে পড়ল সেন্ট্রাল স্কুল । নেভির একখানা একতলা বাড়িকে সেন্ট্রাল স্কুল করা হয়েছে । সামনে এক খানা মাঠ। বাচ্চারা tখেলা করছে মাঠে । মালা মিস্টার ওয়াটসন কে প্রশ্ন করল । - রেসট্রিকটেড এরিয়া য় টিচার eস্টুডেন্ট ঢোকে কি করে? .nওয়াটসন- সবার গেট পাস আছে । সবাই কে গেট পাস দেখাতে হয় । aগাড়ি সোজা চলল একেবারে সমুদ্র সৈকতের দিকে । একেবারেই সমুদ্র চ্যানেল এর কাছে ityগাড়ি দাঁড়াল। নীল সাগরের এখানে শান্ত রূপ । hঢেউ এর বাড়াবাড়ি এখানে নেই । ছোট ছোট ঢেউ এখানে ছল্ ছল্ ছলাৎ করছে । গাড়ি aযেখানে দাঁড়াল তারই পাশে একখানা বাংলো বাড়ি । মালা ভাবল , এটাই বুঝি মিস্টার lasওয়াটসন এর অফিস ঘর ! ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে দাঁড়াল । তারপর মিস্টার ওয়াটসন দিকের গাড়ির দরজা খুলে দিল । এরপর মালার দিকের দরজা খুলল । মিস্টার ওয়াটসন ngমালার কাঁধে হাত রেখে সেই বাংলো বাড়িতে ঢুকলেন। aঅফিস এ তখন গোনা গুনতি স্টাফ । তখন ও কেউ কাজে বসেনি । লেফটেন্যান্ট পল এসে Bস্যালুট করল মিস্টার ওয়াটসন কে । এই অফিস এ মিস্টার ওয়াটসন এর আসার কথা নয় । তাঁর চেম্বার বড় অফিসে । মিস্টার ওয়াটসন অ্যাডমিরাল । লেফটেন্যান্ট পল এর থেকে অনেক উঁচুদরের পদাধিকারী মিস্টার ওয়াটসন । লেফটেন্যান্ট পল মিস্টার ওয়াটসন কে বললেন- মে আই হেল্প ইউ স্যার ? মিস্টার ওয়াটসন বললেন- সাব মেরিন টা মিসেস কে একটু দেখিয়ে দাও । লেফটেন্যান্ট পল- উইথ প্লেজার স্যার । ম্যাডাম কে সব দেখিয়ে দেব । মিস্টার ওয়াটসন- ওকে । আমি আমার চেম্বার এ যাচ্ছি । দেখা হয়ে গেলে আমার চেম্বারে আসবে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 43 এরপর মালার উদ্দেশ্যে বললেন- মালা তোমার কোন অসুবিধা হবে না । হি ইজ ভেরি স্মার্ট ইয়ং বয় । বাই- বলে মিস্টার ওয়াটসন বেড়িয়ে গেলেন । লেফটেন্যান্ট পল বড়জোর বছর বাইশের । মালার বয়সের ই হবে । বাঙালি ছেলে । পদবী পাল । এখানে সবাই বলে , পল্ । সাবমেরিন সমন্ধে পল বলেই চলেছে । এর সার কথা হল, যে সাবমেরিন দেখতে যাওয়া হচ্ছে তা হল যুদ্ধ জাহাজ । নেভি তে যারা কাজ করে তাদের ট্রেনিং নিতে হয় সাবমেরিন স্কুলে । থিওরী আর প্র্যাকটিক্যাল ট্রেনিং আছে । ড্যামেজ কন্ট্রোল, ড্রিল এবং ইমারজেন্সীতে আছে যুদ্ধ কৌশল শেখা । কি করে \"ওয়েপেন ফায়ারিং\" করতে হবে তা ও শেখানো হয় এখানে । প্রথমেই সমুদ্র কে জানা । ছয় মাস পর অফিসার আর সেলর দের বিশ্ব বিখ্যাত \"ডলফিন ব্যাজ \" পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয় । tকথা বলতে বলতেই মালা আর লেফটেন্যান্ট পল সাবমেরিন এর কাছে এসে গেল । পুরো eজাহাজ টা সমুদ্রের তলায় রয়েছে । পাড় থেকে সিঁড়ি উপরে উঠে গেছে । জাহাজের ওপর .nতলাটা ই শুধু দেখা যাচ্ছে যেখানে ,সেখান দিয়েই সিঁড়ি উঠেছে । ityaপল- ম্যাডাম, ঐ সিঁড়ি দিয়েই আমাদের উঠতে হবে। আপনি উঠতে পারবেন তো? নাকি ধরতে hহবে ? মালা- না না ,আমি উঠতে পারব । lasaকথা বলতে বলতে মালা সিঁড়ির হাতল ধরে উপরের তলায় উঠে পড়ল । পল মালা কে গার্ড দিতে দিতে ওপরে উঠল । এবার সিঁড়ি নেমে গেছে নিচের দিকে । অর্থাত জলের তলে । ডুবো ngজাহাজের শোবার ঘরে। বড় সর একটা বেড রুম তাতে আট খানা বেড পাতা আছে । বাকি aকতগুলো ছোট ছোট ঘর আট জন অফিসারের আটটা ঘর । এরপর উনসত্তর জন সেলর দের Bশোবার বন্দোবস্ত । মালা- সে কি ,উনসত্তর জনের এইটুকুই শোবার ব্যবস্থা ? পল- এটা যুদ্ধ জাহাজ । সবাই কে তৎপর থাকতে হয় । এছাড়া দুটো টয়লেট, দুটো ওয়াশ বেসিন এতো লোকের জন্য । রান্না করার দুজন কুক । মালা- সে কি মাত্র দুজনে এতো লোকের রান্না করে ? পল- শুধু তাই নয়, রান্না ঘরের মাপ চার বাই ছয় । সে জায়গাতে আপনাকে নিয়ে যাওয়া যাবে না । দরজা লক্ করা আছে । জাহাজ বিশাখাপত্তনম এ ল্যান্ড করেছে । তাই ছুটির মুড এ যে যার বেড়িয়ে গেছে । মালা- তাই দেখছি সব ফাঁকা । পল- চলুন, আপনাকে 'বার' দেখিয়ে দি । কথা বলতে বলতেই একটা দরজার হাতলে হাত রাখল। একটা মোচর দিতেই দরজা খুলে গেল। ওয়াল ফিটিং তাক রয়েছে । তাতে রকমারি 'ওয়াইন' সাজান রয়েছে । বেশ কয়েক খানা চেয়ার পাতা রয়েছে । এ ঘর টাই বেশ ছিমছাম । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 44 ঘুড়ে ঘুড়ে সবই দেখালো পল । কোথায় রেডিও, নেভিগেশন লাইট, একঝস্ট পাইপ, স্যাট লাইট, নেভিগেশন অ্যান্টেনা, নেভিগেশন পেরিস্কোপ, অ্যাটাক পেরিস্কোপ, ব্রিজ উইন্ডোজ সব একে একে দেখালো। মালার উৎসাহ দেখে পল আরও খুশি । উচ্ছসিত হয়ে সব একে একে বুঝিয়ে চলেছে মালা কে । - আরও আছে । এই দেখুন ,হাই প্রেসার এয়ার স্টোরেজ ট্যঙ্ক । এটা টরপেডো লোডিং হ্যাচ্ । এটা টরপেডো ফায়ার কন্ট্রোলার । মালা ঘড়ি দেখল । দু'ঘন্টা কখন পেরিয়ে গেল বুঝতেই পারে নি । মালা কে ঘড়ি দেখতে দেখে পল বলল ।- না ,এবার ফেরা যাক । মিস্টার ওয়াটসন অপেক্ষায় আছেন । সাবমেরিন থেকে নেমে দেখা গেল মিস্টার ওয়াটসন গাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছেন । সাবমেরিন থেকে নেমে মালা ভাবতেই পারছে না যে এই দুই ঘন্টা তারা গভীর জলের তলে ছিল ! অবাক লাগছে ভাবতে। etগাড়ির পেছন দরজা খুলে দাঁড়াল ড্রাইভার । মালা ভেতরে বসতেই ড্রাইভার দরজা বন্ধ করে দিল । .nপল ড্রাইভার এর পাশের সিট্ এ বসতেই গাড়ি চলতে শুরু করল । সৈকতের পাশ দিয়েই গাড়ি aচলতে শুরু করল । দারুণ লাগছে মালার । এখন সমুদ্রের রং ঘোলাটে। কারণ এখন মেঘলা আকাশ । ityসকালেও আকাশের রং ছিল নীল । কারণ আকাশের নীলচে রং ছড়িয়ে পড়ে সাগরে । এটা নেভাল hএরিয়া । তাই উন্মুক্ত সাগর নয় এখানে । গাড়ি থেমে যেতে পল দরজা খুলে নেমে পড়ল । ড্রাইভার aগাড়ির দরজা খোলার আগেই মালা পাশের দরজা খুলে দিল । আগে পল পিছনে মালা চলতে লাগল las। এ অফিস যে নেভির উচ্চতম অফিস তা বলে দিচ্ছিল এ অফিস এর রং ঢং । চেম্বার এর দরজায় মোটা দাগে লেখা , ' অ্যাডমিরাল অ্যালবার্ট ওয়াটসন' । দরজায় রেড লাইট জ্বালা রয়েছে । তার ngমানে ভেতরে প্রবেশ নিষেধ । উর্দি পরা বেয়ারা ভেতরে ঢুকল । আবার বেড়িয়ে এল । বলল- আপ Baলোগ ভিতর যাইয়ে । সাহাব নে বুলায়া আপ লোগোকো । ভেতরে ঢুকতেই নজরে পড়ল কেতা দুরস্ত অফিস ঘর । এ ঘরের চেহারা- ছবি ই বলে দিচ্ছে যে মালা ওয়াটসন একজন কেউ কেটা লোকের বৌ। বরাত করেছিল বটে । নইলে এমন পাত্র জোটে ! মালার বাবা আর মায়ের এমন পাত্র জোগার করার ক্ষমতা ছিল না । যদি না ভাই থাকতো । মামা বেঙ্কাইয়া ছিল বলে , বন্ধু ওয়াটসন এর নজরে পড়েছে মালা । মালার চমক ভাঙলো মিস্টার ওয়াটসন এর কথায় । - দাঁড়িয়ে কেন ? বস । উল্টো দিকের একখানা কৌচ দেখিয়ে বললেন । মালা ঝুপ করে নির্দেশিত কৌচ এ বসে পড়েন । এবার মিস্টার ওয়াটসন লেফটেন্যান্ট পল এর দিকে নজর ফেললেন । - মিস্টার পল, তোমার অনেক দেরি হয়ে গেল। আর বসতে বলব না । সে আশা করেও না পল । উত্তরে পল বলল। www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 45 - না না ,ঠিক আছে স্যার । ইটস্ মাই প্লেজার । আমি এবার আসি স্যার । - হ্যাঁ এস । এবার দৃষ্টি ফিরল মালার দিকে । - কেমন দেখলে ? ভাল লাগল ? - হ্যাঁ । খুব ভাল লাগল । খুব এফিসিএন্ট ছেলে। সুন্দর করে সব বুঝিয়েছে । দু'ঘন্টা যে কি ভাবে পেরিয়ে গেল বুঝতেই পারলাম না । - এবার তাহলে চল, লাঞ্চ করে নেওয়া যাক । তুমি ওয়াশ রুমে ঘুড়ে এস । মালা উঠে দাঁড়ালেন ওয়াশ রুম এ যাবার জন্য । কিন্তু কোন দিকে যাবে তা ভেবেই এপাশ ওপাশ তাকাল । - বাঁ দিকে ওয়াশ রুম পাবে । প্যাকেট এ ফ্রেশ টাওয়াল পাবে । মিস্টার ওয়াটসন এর কথা মতো মালা বাঁ দিকেই চলে গেলেন মালা । ওয়াশ রুম থেকে বেড়িয়েই দেখলেন খাবার টেবল এ লাঞ্চ তৈরি । মালা খাবার সাজাতে সাজাতে মিস্টার ওয়াটসন ওয়াশ রুম tথেকে ঘুড়ে এসেছেন । তেলেগু দেশে থাকতে থাকতে এখানকার খাবারে অভ্যস্ত হতে হয়েছে মিস্টার eওয়াটসন কে । ওদেশের বাবুর্চি কে ধরে রাখতে পারেন নি তিনি । অতএব আপ রুচি খানা জোটেনি । .nতাই তেলেগু খানা তে অভ্যস্ত হতে হয়েছে । aখাওয়ার পর মালা কে বললেন।- আমার একটু কাজ বাকী আছে । তুমি রেস্ট রুম এ রেস্ট নাও। ityপাশের ঘরে একটা বেড আছে । ভয় নেই কাজ ফেলে আমি তোমার পাশে শোব না ।রেস্ট রুম এ hগিয়ে মালা তাজ্জব । এ তো ডাবল বেড ! মাথায় কতো গুলো পোকা গিসগিস করতে লাগল । aএখানে কি অন্য কোন মেয়েকে নিয়ে শুয়েছে না কি ? রাতের বেলায় দেহের খেলায় যে ভাবে lasউন্মত্ত হয়ে ওঠে ! তা দেখে মনে হতেই পারে যে ,দেহের খেলার জন্য যে কোন সময়েই উন্মত্ত হতে পারে । সে কথা ভেবেই আর ঐ বিছানায় শুতে ইচ্ছা করছে না । এমন লোক কি কখনও উপসী হয়ে ngকাটাতে পারে ! তাই বিশ্বাস করতে মন সায় দেয় না । বিছানার পাশে একটা ইজি চেয়ার রয়েছে । aবেশ গদি মোড়া চেয়ার । বসলে আরাম হবে । এটাতে বসেই এই সময় টুকু কাটিয়ে দিতে পারবেন Bমালা । বসেই পড়লেন মালা । সামনে বড় সড় লোহার গ্রীল দেওয়া জানালা । বাগান দেখা যাচ্ছে । লাল আর সাদা বোগেন ভেলিয়া গাছ । লাল সাদায় গাছ ঢেকে আছে । নিচে সবুজ ঘাসের জমিনে লাল সাদার ছিটে পড়ে আছে । এক কোনে একটা বেল গাছ । তার পাশে একটা অশ্বথ্ব গাছ । সে গাছে চার পাঁচ টা টিয়া পাখি উড়ে এসে বসল । আবার উড়ে চলে গেল পাখিরা । ঐ তো একটা গাছের কোটরে ঢুকে গেল টিয়া পাখি দুটো । ওখানেই বুঝি বাসা বেঁধেছে ! আরও দুটো টিয়া উড়ে এল গাছের কোটরের মুখে । যেন পাহাড়া দিচ্ছে টিয়া দের । যাতে কাক এসে ঝামেলা না পাকায় । সত্যিই তো, কাক গুলো ওদের দেখে কা কা করছে। ইংরেজ এটিকেট এর সাথে তেলেগু সংস্কার কে মেলাতে পারেন না মালা ওয়াটসন । বিয়ের পর থেকে মিস্টার ওয়াটসন চেষ্টা করেছেন মালা কে কেতা- দুরস্ত করতে । কিন্তু মালা ভারতীয় স্টাইল টা ছাড়তে পারেন নি । সেই জন্য ই পার্টি তে সস্ত্রীক যান নি তিনি । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 46 বিধর্মী কে বিয়ে করলেও জাতীয় পোশাক ছাড়তে চাননি মালা । সব সময়ই শাড়ি পড়েছেন । মিস্টার ওয়াটসন এর গলা শুনে চিন্তাটা হোঁচট খেল মালার । দরোজায় দাঁড়ানো মিস্টার ওয়াটসন । - চলো । আমার কাজ শেষ । লজ্জা পেল মালা এতক্ষণ কি সব ভাবছিলেন । হাত ব্যাগ নিয়ে উঠে দাঁড়ালেন মালা । - সরি, এতক্ষণ তোমায় বসিয়ে রাখার জন্য । তুমি শুয়ে রেস্ট নিতে পারতে । - না । ঠিক আছে । বাগান টা দেখছিলাম । কতো টিয়া পাখি এসে বসছে গাছে । খুব ভাল লাগল । মিস্টার ওয়াটসন তার অভ্যাস মতোই মালার কাঁধে হাত রেখে রাস্তায় বেড়িয়ে এসেছেন । গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে । মিস্টার ওয়াটসন কে দেখে গাড়ির ড্রাইভার দরোজা খুলে দাঁড়াল । মিস্টার ওয়াটসন বসার পর মালাও গাড়িতে উঠে বসলেন । যে পথে এসেছিলেন সেই পথেই গাড়ি চলতে লাগল । etকনভেন্ট জংশন অবধি যে পথে গাড়ি এসেছিল সে পথেই গাড়ি চলতে লাগল । তার পর অলি গলি .nপেরিয়ে বিচ্ রোড ধরল ওরা । মিস্টার ওয়াটসন বললেন- মালা, আমরা সমুদ্র কে বেষ্টন করে যাব । aপুরো সমুদ্রের পাশ দিয়েই যাব । সূর্য ডুবে যাবার আগের সমুদ্রের লালের আভা ভাল লাগবে ityতোমার । মালার চোখে খুশির চমক । স্বামী যে ওর কথা ভেবেছে তাতেই মালা খুশি । ahমালার মনটা তবুও খালি খালি হয়ে থাকে প্রায়ই । এক বছর হতে চলল ওর বিয়ে হয়েছে । এর lasমধ্যে একদিন ই বাপের বাড়ি কৈলাশনগর গেছে মালা । তাও একা গেছে । মিস্টার ওয়াটসন যান নি । মালা একা গাড়িতে করে গেছেন আর ফিরে এসেছেন সন্ধ্যার আগেই । মিস্টার ওয়াটসন মালার ngবাবা আর মাকে খুব একটা পছন্দ করেন না । তবে মেয়ে সুন্দর তাই মেয়েকে পছন্দ হয়েছে । aমালার বাবা মা একেবারেই ঘোর কৃষ্ণ বর্ণের । সেটাও \"না পসন্দ\" হবার আরও একটা কারণ । Bমালার বাবার দেশ গঞ্জাম জেলায় । পোষাক আসাক নজরে পড়ার মতোই জেল্লা ধরা রংয়ের । গহনার ও আতিশয্য । মায়ের কানে ভারী ভারী কান পাশা । নাকে জেল্লা ধরা পাথরের নাকছাবি । তাতে মোটা সোনার চেন কানের ওপর দিয়ে চুলে আঁটা ।মায়ের চেহারাটা যেমন কর্কশ স্বভাব টা তেমনি মিঠে । মেয়ে কে বাবা মা দুজনেই মালা আম্মা অর্থাৎ মালা মা বলে ডাকেন । এর কোন টাই মিঃ ওয়াটসনের পছন্দের নয় । মালার সঙ্গে ওয়াটসন এর বয়সের ফারাক টা একটু বেশিই । প্রায় তেরো চোদ্দ বছরের ফারাক । মালার মায়ের কাছাকাছি ই হবে । জামাই যে ওদের পছন্দ করে না তা বুঝেই ওরা দেশের বাড়িতেই চলে যান । মালার বুকটা মা বাবার জন্য হু হু করে কাঁদে । এ বাড়ির সাথে বাপের বাড়ির চাল চলন কোন কিছুর মিল নেই । মালার বুক হালকা করে কাঁদতে ইচ্ছে করে মাঝে মাঝেই । মালা যেন একটা পুতুল । পুতুলের মতো স্বামী কাছে পেতে চাইলে সঙ্গ দেয় তাকে । মামা ও বদলি হয়ে গেছে মাদ্রাজে, বেশ ছোট থাকতেই। বাপের বাড়ি যদি বা আসতেন । আর মালার বাবা মায়ের সাথে দেখা হবার কোন সম্ভাবনা ও রইল না । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 47 পিঠে হাত পড়তেই চিন্তাটা হোঁচট খেল মাঝ রাস্তায় । - কি হল, কি ভাবছ ? একটু দাঁড়াবে নাকি সমুদ্রের ধারে ? মালাকে চুপ করে থাকতে দেখে মিস্টার ওয়াটসন ড্রাইভার কে গাড়ি থামাতে নির্দেশ দিলেন । গাড়ি থামতে মিস্টার ওয়াটসন মালাকে গাড়ির থেকে নামতে সাহায্য করলেন । - চল। বিচ্ এ নামি । মালা, মিস্টার ওয়াটসন কে দোষ দিতে পারেন না । ইংরেজিতে যাকে বলে 'টেক্ কেয়ার ' সেটা মিস্টার ওয়াটসন মালাকে যথেষ্ট করেন । তবুও কেন যে মালার বুক হালকা করে কাঁদতে ইচ্ছে করে তা মালা না বোঝার মত নিরেট নয় । মালার মা বাবাকে মিস্টার ওয়াটসন এর না মেনে নেওয়াটাই কষ্ট দায়ক । চমক ভাঙ্গল সমুদ্রের গর্জনে । সমুদ্রের এখন আর এক রূপ । এখন সাগর জলে লালের আভা । সূর্যাস্তের লালের ছটা পড়েছে সমুদ্রের জলে । দেখতে দেখতেই কয়েকটা মাস পেরিয়ে গেল । মালার শরীর টা জুতসই নেই । tসকালে ব্রেকফাস্ট করতে গিয়েই গা টা কেমন গুলিয়ে উঠলো । ছুটল বেসিন এর দিকে । হরহর করে eবমি করে ফেলল মালা । নাগাম্মা ছুটে এলো বমির শব্দে । চিন্তিত স্বরে বলল। .n- এমু, হাইপোইন্দা আম্মা ? অর্থাত কি হল মা ? a- কি জানি , ক'দিন ধরেই বমি বমি লাগছে । খাবার দেখলে বমি আসছে । নাগাম্মা- এ সময়ে এমন ityহয় । তোমার ছেলে মেয়ে হবে । hমিস্টার ওয়াটসন ডাইনিং হলের চেয়ারে বসে ছিলেন । সবই শুনেছেন। ডাইনিং হল এ মালা aআসতেই প্রশ্ন করলেন মালাকে । las- কি হল ? বমি করলে ? ngনিঃশব্দে মালা মাথা নেড়ে সম্মতি জানান । মিস্টার ওয়াটসন কোন কথা না বলে চেয়ার ছেড়ে উঠে aগেলেন । মালা- কোথায় যাচ্ছ ? আগে ব্রেকফাস্ট করে নাও । মিস্টার ওয়াটসন বললেন- ডাক্তার কে Bকল করে আসছি । ফোন করলেন ডাক্তার কে । ব্রেকফাস্ট সারা হতেই ডাক্তার এসে গেলেন । মালাকে শুইয়ে দিয়ে ভাল করে চেক করে মিস্টার ওয়াটসন কে বললেন - সি ইজ গোয়িং টু হ্যাভ্ আ বেবি । উৎফুল্লিত মিস্টার ওয়াটসন ছুটে গেলেন মালার কাছে । দু ' হাতে জড়িয়ে ধরলেন মালা কে । বললেন- আই ওয়ান্ট আ ডটার । তোমাকে সব সময়ে দেখার জন্য একজন আয়া দরকার । মালা বলেন- নাগাম্মা আছে তো । ওই দেখতে পারবে । ডাক্তার বললেন- নিয়ম মতো চললে কোন লোকের দরকার হবে না । অ্যাকচুয়ালি সি ইজ পারফেক্টলি অলরাইট । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 48 দেখতে দেখতে চার মাস পেড়িয়ে গেল । নিয়ম অনুযায়ী চেকআপ ও চলছে মালার । এরই মাঝে মিস্টার ওয়াটসন এর দেশ থেকে একখানা চিঠি এসেছে , মিস্টার ওয়াটসন এর শিশুকালের আয়ার থেকে । যে আয়া তাকে শিশু কাল থেকেই মানুষ করেছেন । তাঁর অবস্থা খুব খারাপ । দিন চলে না । চেয়ে চিন্তে দিন চলে । সেই আয়ার মেয়ের কোন কাজ কর্ম নেই ,তার একটা কাজের দরকার । যদি ভারতে কোন কাজ জোটে । মালার করুনা হল ঐ মেয়ের ওপর । মিস্টার ওয়াটসন তো বলছিলেন একটা আয়া রাখার কথা । এই মেয়েটা কে রাখলে কেমন হয় ! কয়দিন চিন্তা ভাবনা করে মালা মিস্টার ওয়াটসন কে বললেন সেই কথা । - তুমি তো একজন আয়া রাখার কথা বলছিলে । তা ঐ তোমার আয়ার মেয়েকে রাখলে কেমন হয় ? ওয়াটসন- ঠিক বলেছ তো । ওর সমস্যার ও সমাধান হবে । আর আমাদের ও সুবিধা হবে । মিস্টার ওয়াটসন এর চিঠি পৌঁছতে না পৌঁছতে , সেই মেয়ে হাজির হয়েছে । তার নাম এমিলি ব্রাউন t। বেশ কেতাদুরস্ত মহিলা । চিঠি পড়ে মালার যা মনে হয়েছিল তার সাথে এর কোন ও মিল নেই । eপোষাক আসাক যেমন ই হোক না কেন । তার স্বভাবের তল পাচ্ছেন না মালা । এমিলির কথা যা .nভেবেছিলেন, কে বলবে এই মেয়ে সেই মেয়ে ! এই মেয়ে মালাকে দেখবে!!হাবভাব দেখে মনে aহচ্ছে মিস্টার ওয়াটসন এর প্রতি যতটা বিগলিত , মালার প্রতি এক কণাও নয় । ityএমিলির থাকার ব্যবস্থা হল আউট হাউজ এ । ahপর্ব-২ lasএকটু একটু মনে পড়ে সেই সব পুরোন কথা । জায়গার নাম ওয়ালটেয়র । পর্তুগাল আমলের দু চার ngখানা নিদর্শন চোখে পড়বেই । পর্তুগীজরা কবে কোন কালে যে চলে গেছে তার ঠিক নেই মালিকানার aবদল হযেছে । সে কালের সৈন্য দের ব্যারাক গুলো রেল ওয়ের দখলে চলে গেছে । ওগুলো এখন Bরেল ওয়ে কোয়ার্টার । ডানে গেলে রামকৃষ্ণ বিচ । নাতাশার শিশুকাল কেটেছে জেসিকা দের বাড়িতে । তবে আশ্রিত বলে কখনও মনে হয় নি । তার কারণ নাতাশার মা মালার কিছু পুরোন স্মৃতি । বাবার স্মৃতি ও একটু একটু আছে । আবছা আলো আঁধারি কিছু স্মৃতি । জ্ঞান হবার পর বাবাকে আর মাকে চোখে দেখে নি নাতাশা । মিসেস এমিলির কাছে শোনা , তিনি মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহিত স্ত্রী । আর মিস্টার ওয়াটসন এর রক্ষিতা নাতাশার মা । মিস্টার ওয়াটসন কে নাতাশা ঘেন্না করে । যে পুরুষ স্ত্রী বর্তমান থাকতে ও রক্ষিতার দরকার হয় তাকে নাতাশা ঘেন্না করে । এমন বাবা কে নাতাশার দরকার নেই । তিনি নাকি বিষ ক্রিয়ায় মারা গেছেন । তাতে নাতাশার কোন কষ্ট নেই । যত রাগ মায়ের উপর । কেন রক্ষিতা হতে গেল নাতাশার মা মালা । কারণ এই জন্যই এমিলির কাছে উঠতে বসতে মায়ের খোঁটা শুনতে হয় শিশু নাতাশাকে । শিশু কালের মায়ের আদল টা মনে পড়ে । ভারী টলটলে মুখ খানা ছিল তাঁর । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 49 জন্ম দাতার মুখখানা একেবারেই ধোঁয়াশা । ঐ জন্য ই মাঝে মাঝেই শয়তান টা বাসা বাঁধে নাতাশার মাথায় । নাতাশার থেকে এক বছরের ছোট জেসিকা । জেসিকা এমিলির সন্তান । জেসিকার মেদ বহুল শরীর । নাতাশার মেদ হীন লম্বা শরীর । দেখতে দেখতে চার মাস পেড়িয়ে গেল । নিয়ম অনুযায়ী চেকআপ ও চলছে মালার । এরই মাঝে মিস্টার ওয়াটসন এর দেশ থেকে একখানা চিঠি এসেছে , মিস্টার ওয়াটসন এর শিশুকালের আয়ার থেকে । যে আয়া তাকে শিশু কাল থেকেই মানুষ করেছেন । তাঁর অবস্থা খুব খারাপ । দিন চলে না । চেয়ে চিন্তে দিন চলে । সেই আয়ার মেয়ের কোন কাজ কর্ম নেই ,তার একটা কাজের দরকার । যদি ভারতে কোন কাজ জোটে । মালার করুনা হল ঐ মেয়ের ওপর । মিস্টার ওয়াটসন তো বলছিলেন একটা আয়া রাখার কথা । এই মেয়েটা কে রাখলে কেমন হয় ! কয়দিন চিন্তা ভাবনা করে মালা মিস্টার ওয়াটসন কে বললেন সেই কথা । - তুমি তো একজন আয়া রাখার কথা বলছিলে । তা ঐ তোমার আয়ার মেয়েকে রাখলে কেমন হয় ? ওয়াটসন- ঠিক বলেছ তো । ওর সমস্যার ও সমাধান হবে । আর আমাদের ও সুবিধা হবে । etমিস্টার ওয়াটসন এর চিঠি পৌঁছতে না পৌঁছতে , সেই মেয়ে হাজির হয়েছে । তার নাম এমিলি ব্রাউন .n। বেশ কেতাদুরস্ত মহিলা । চিঠি পড়ে মালার যা মনে হয়েছিল তার সাথে এর কোন ও মিল নেই । aপোষাক আসাক যেমন ই হোক না কেন । তার স্বভাবের তল পাচ্ছেন না মালা । এমিলির কথা যা ityভেবেছিলেন, কে বলবে এই মেয়ে সেই মেয়ে ! এই মেয়ে মালাকে দেখবে!!হাবভাব দেখে মনে hহচ্ছে মিস্টার ওয়াটসন এর প্রতি যতটা বিগলিত , মালার প্রতি এক কণাও নয় । aএমিলির থাকার ব্যবস্থা হল আউট হাউজ এ । lasএকটু একটু মনে পড়ে সেই সব পুরোন কথা । জায়গার নাম ওয়ালটেয়র । পর্তুগাল আমলের দু চার ngখানা নিদর্শন চোখে পড়বেই । পর্তুগীজরা কবে কোন কালে যে চলে গেছে তার ঠিক নেই মালিকানার aবদল হযেছে । সে কালের সৈন্য দের ব্যারাক গুলো রেল ওয়ের দখলে চলে গেছে । ওগুলো এখন Bরেল ওয়ে কোয়ার্টার । ডানে গেলে রামকৃষ্ণ বিচ । নাতাশার শিশুকাল কেটেছে জেসিকা দের বাড়িতে । তবে আশ্রিত বলে কখনও মনে হয় নি । তার কারণ নাতাশার মা মালার কিছু পুরোন স্মৃতি । বাবার স্মৃতি ও একটু একটু আছে । আবছা আলো আঁধারি কিছু স্মৃতি । জ্ঞান হবার পর বাবাকে আর মাকে চোখে দেখে নি নাতাশা । মিসেস এমিলির কাছে শোনা , তিনি মিস্টার ওয়াটসন এর বিবাহিত স্ত্রী । আর মিস্টার ওয়াটসন এর রক্ষিতা নাতাশার মা । মিস্টার ওয়াটসন কে নাতাশা ঘেন্না করে । যে পুরুষ স্ত্রী বর্তমান থাকতে ও রক্ষিতার দরকার হয় তাকে নাতাশা ঘেন্না করে । এমন বাবা কে নাতাশার দরকার নেই । তিনি নাকি বিষ ক্রিয়ায় মারা গেছেন । তাতে নাতাশার কোন কষ্ট নেই । যত রাগ মায়ের উপর । কেন রক্ষিতা হতে গেল নাতাশার মা মালা । কারণ এই জন্যই এমিলির কাছে উঠতে বসতে মায়ের খোঁটা শুনতে হয় শিশু নাতাশাকে । www.banglasahitya.net
পৃষ্ঠা || 50 শিশু কালের মায়ের আদল টা মনে পড়ে । ভারী টলটলে মুখ খানা ছিল তাঁর । জন্ম দাতার মুখখানা একেবারেই ধোঁয়াশা । ঐ জন্য ই মাঝে মাঝেই শয়তান টা বাসা বাঁধে নাতাশার মাথায় । নাতাশার থেকে এক বছরের ছোট জেসিকা । জেসিকা এমিলির সন্তান । জেসিকার মেদ বহুল শরীর । নাতাশার মেদ হীন লম্বা শরীর । কারিগর নাতাশাকে গড়ার সময় শরীরের বড় কোমল জায়গায় বাড়তি মেদ জড় করেছেন। সেই জড় করা মেদের ঢেউ নজর কাড়ে আশেপাশের পুরুষ গুলোর । সেটা বুঝেই আরও বুকটান করে হাটে পনের তে পড়া নাতাশা । মায়ের ওপরের রাগের ঝালটা ঝাড়ে ঐ ভাবে পুরুষ দের জ্বালিয়ে । ঐ রকম একটা হ্যংলা পুরুষ কে নাতাশার মা তাঁর শরীরে ঠাঁই দিয়েছিল বলেই তো নাতাশা জারজ সন্তান । তা বলেছে এমিলি । এও বোঝে শোধ তোলার লোকেরা কবে যে ইহলীলা ত্যাগ করেছে তার ঠিক নেই । জারজ !জারজ! এই কথাটা এমিলি রাগ হলেই শোনায় নাতাশা কে । শয়তান টা আবার মাথায় আসছে । তখন ই নাতাশা নিজের ছোট ঘরটায় ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিল । tতারপর হাতের কাছেই একটা ছড়ি পেয়ে সেটা দিয়ে বালিশ পেটাতে লাগল । বাইরের থেকে eজেসিকার গলা শোনা যাচ্ছে । - নাতাশা, দরজা খোল । খোল না । বেড়াতে যাবি না ? a.nকানে আসে জেসিকার আব্দার । এখন ও ছেলে মানুষী যায় নি জেসিকার । নাতাশার কোন উত্তর না ityশুনে, আবার ও বায়না করতে থাকে , \"নাতাশা দরজা খোল না\" । নাতাশা আবার জোরে জোরে hনাতাশা হাতের সেই ছড়ি দিয়ে বালিশ পেটাতে লাগল । তবুও কোন উত্তর দিল না নাখতাশা । aশয়তান টা নাতাশা কে যখন ছেড়ে গেল তখন ই নাতাশার বালিশ পেটান বন্ধ করল । তখন দেখে lasসারা ঘরে তুলো উড়ে বেড়াচ্ছে । নজর পড়ল আয়নায় , দেখল সারা শরীরে তুলোয় মাখামাখি । হাঃ হাঃ হাঃ করে হেসে উঠল । কানে এলো দরজার জোর আওয়াজ তার সাথে জেসিকার কান্নার সুর । ngএমিলি যদি শুনতে পায় সেই ভয়ে দরজা খুলল নাতাশা । জেসিকা- এতক্ষণ কি করছিলি নাতাশা ? Baনাতাশা- বালিশ পেটাচ্ছিলাম । নাতাশা কে দেখে আশ্চর্য হয়ে চেয়ে রয়েছে জেসিকা । ভয় পেয়েছে মনে হচ্ছিল । ওর ভয় ভাঙাতে নাতাশা বলে ,- আয়। ভেতরে আয় । কিরে ভয় পেয়েছিস ? আজ আমরা খেলব । জেসিকা- কি খেলা রে নাতাশা ? কি করছিলি? নাতাশা- কি আবার ? এতক্ষণ বালিশ পেটাচ্ছিলাম । এবার তুলো গুলো জড় করে বালিশে ভরব । জেসিকার চোখে খুশির ঝলক । বলল- তারপর কি করব ?'আবার আমরা বালিশ পেটাব ? www.banglasahitya.net
Search
Read the Text Version
- 1
- 2
- 3
- 4
- 5
- 6
- 7
- 8
- 9
- 10
- 11
- 12
- 13
- 14
- 15
- 16
- 17
- 18
- 19
- 20
- 21
- 22
- 23
- 24
- 25
- 26
- 27
- 28
- 29
- 30
- 31
- 32
- 33
- 34
- 35
- 36
- 37
- 38
- 39
- 40
- 41
- 42
- 43
- 44
- 45
- 46
- 47
- 48
- 49
- 50
- 51
- 52
- 53
- 54
- 55
- 56
- 57
- 58
- 59
- 60
- 61
- 62
- 63
- 64
- 65
- 66
- 67
- 68
- 69
- 70
- 71
- 72
- 73
- 74
- 75
- 76
- 77
- 78
- 79
- 80
- 81
- 82
- 83
- 84
- 85
- 86
- 87
- 88
- 89
- 90
- 91
- 92
- 93
- 94
- 95
- 96
- 97
- 98
- 99
- 100
- 101
- 102
- 103
- 104
- 105
- 106
- 107
- 108
- 109
- 110
- 111
- 112
- 113
- 114
- 115
- 116
- 117
- 118
- 119
- 120
- 121
- 122
- 123
- 124
- 125
- 126
- 127
- 128
- 129
- 130
- 131
- 132
- 133
- 134
- 135
- 136
- 137
- 138
- 139
- 140
- 141
- 142
- 143
- 144
- 145
- 146
- 147
- 148
- 149
- 150
- 151
- 152
- 153
- 154
- 155
- 156
- 157
- 158
- 159
- 160
- 161
- 162
- 163
- 164
- 165
- 166
- 167
- 168
- 169
- 170
- 171
- 172
- 173
- 174
- 175
- 176
- 177
- 178
- 179
- 180
- 181
- 182
- 183
- 184
- 185
- 186
- 187
- 188
- 189
- 190
- 191
- 192
- 193
- 194
- 195
- 196
- 197
- 198
- 199
- 200
- 201
- 202
- 203
- 204
- 205
- 206
- 207
- 208
- 209
- 210
- 211
- 212